
আগেকার দিনে মানুষ বাবা-কাকার পরামর্শ শুনে বা ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের কথা শুনে বিনিয়োগ করেছেন। অর্থাৎ, যাঁদের কিছুটা হলে এই বিষয়গুলোয় জ্ঞান রয়েছে। এমনকি অনেকেই ফান্ড ম্যানেজারের সঙ্গে পরামর্শ করেও বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু আজকের তরুণ প্রজন্ম কিন্তু এই সবের ধারও ধারে না। তাদের অনেকেই বিনিয়োগ করছে ইনস্টাগ্রামের রিলস দেখে বা টেলিগ্রামের কোনও গ্রুপ থেকে। শুধু শহরে এমন হচ্ছে, এমনটা নয়। ভারতের গ্রামে গ্রামেও এই ঘটনা বাড়ছে।
আগে বিনিয়োগ করতে হত কাগজের মাধ্যমে। কিন্তু বর্তমানে একাধিক ব্রোকার ও তাদের অ্যাপের কারণে খুব সহজেই শেয়ারে বা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা যায়। ইনভেস্টমেন্ট রিসার্চ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস সংস্থা Morningstar-এর ২০২৫ সালের একটি রিপোর্ট বলছে, নতুন SIP অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশের বয়স ৩৫ বছরের কম। পাঁচ বছর আগেও এই সংখ্যাটা ছিল মাত্র ২৫ শতাংশ। আর এই বৃদ্ধির পিছনে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া ও ফাইন্যান্স ইনফ্লুয়েন্সার বা যাদের বলে ‘ফিনফ্লুয়েন্সার’।
বাজাজ ক্যাপিটালের প্রধান সঞ্জীব বাজাজ বলছেন, “আজকের প্রজন্ম কৌতূহল নিয়ে বিনিয়োগ শিখছে। তারা নতুন জিনিস পরখ করে দেখতে ভয় পায় না।” তবে তিনি সতর্কও করেছেন। তাঁর কথায়, অনেক সময়ই সোশ্যাল মিডিয়ার হইচই দেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাজারের আসল ঝুঁকি না বুঝে অনেকেই কিন্তু পড়ে যান ক্ষতির মুখে।
বিশেষজ্ঞরা আবার বলছেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বিনিয়োগের পথ সহজ করেছে। তবে তাঁরা এটাও বলছেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে মানুষ যা শিখছে তা কখনই অর্থনৈতিক জ্ঞান হতে পারে না। ক্রিপ্টো হোক বা মিউচুয়াল ফান্ড, বিনিয়োগের মূল মন্ত্র কিন্তু একই। দ্রুত বিনিয়োগ শুরু করা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে বিনিয়োগ করা অর্থাৎ পোর্টফোলিও ডাইভার্সিফাই করা এবং বিনিয়োগের শৃঙ্খলা বজায় রাখা।
প্রযুক্তি এবং তথ্যের এই যুগে সুযোগ যেমন বিরাট, তেমনই ঝুঁকিও রয়েছে। আর তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড অনুসরণ করার বদলে নিজের বিচক্ষণতা প্রয়োগ করা খুব জরুরি। কারণ ছোট ছোট সঠিক সিদ্ধান্ত আগামীর বড় সম্পদ তৈরি করতে পারে।