পায়েল-শ্রাবন্তী-তনুশ্রীরা ‘নগরীর নটী’, ভোটের টাকায় ‘কেলি’ করেছেন, বেলাগাম তথাগত এক হাত নিলেন দিলীপ, কৈলাসদের

সংসদীয় রাজনীতিতে সাফল্যের মুখ না দেখলেও তথাগত রায়কে ত্রিপুরার রাজ্যপাল হিসাবে মনোনীত করে পাঠায় মোদী সরকার। সেখান থেকে রাজ্যপাল হন মেঘালয়ের।

পায়েল-শ্রাবন্তী-তনুশ্রীরা 'নগরীর নটী', ভোটের টাকায় 'কেলি' করেছেন, বেলাগাম তথাগত এক হাত নিলেন দিলীপ, কৈলাসদের
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 04, 2021 | 4:15 PM

কলকাতা: প্রতিবাদের মাধ্যম হিসাবে টুইটারই প্রথম থেকে বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের (Tathagata Roy) প্রথম পছন্দ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব, বিভিন্ন সময় টুইটে ‘ধুইয়ে’ দিতে দেখা গিয়েছে বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতাকে। কিন্তু নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই তাঁর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুটা বদলে গিয়েছে। পরের দোষ ধরার থেকে আপাতত তাঁর নজর ঘরের ‘ফাঁক ফোকরে’। অত্যন্ত ক্ষুব্ধ টলিপাড়ার পায়েল, শ্রাবন্তী, পার্নো, তনুশ্রীদের টিকিট দেওয়া নিয়ে। এ ঘটনায় রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি নাম করে ক্ষোভ উগরেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও। তাঁর কাছে এই তারকা প্রার্থীরা ‘নগরীর নটী’। যাঁরা মদন মিত্রের সঙ্গে নৌকাবিলাসে গিয়ে সেলফি তুলেছেন এবং হেরে ভূত হয়েছেন।

মঙ্গলবার টুইটারে তথাগত রায় লেখেন, ‘পায়েল শ্রাবন্তী পার্নো ইত্যাদি ‘নগরীর নটীরা’ নির্বাচনের টাকা নিয়ে কেলি করে বেড়িয়েছেন আর মদন মিত্রর সঙ্গে নৌকাবিলাসে গিয়ে সেলফি তুলেছেন (এবং হেরে ভূত হয়েছেন) তাঁদেরকে টিকিট দিয়েছিল কে? কেনই বা দিয়েছিল? দিলীপ-কৈলাস-শিবপ্রকাশ-অরবিন্দ প্রভুরা একটু আলোকপাত করবেন কি?’

যদিও কিছুক্ষণের মধ্যেই পালটা টুইট করে নিজের ভুল শুধরে নেন তিনি। আগের টুইটে অভিনেত্রী পার্ণো মিত্রকেও ‘নগরীর নটী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন তথাগত। পরে টুইট করে জানান, মদন মিত্রের সঙ্গে পার্ণো সেলফি তোলেননি। তুলেছিলেন তনুশ্রী চক্রবর্তী।

উল্টোদিকের কাউকে কটাক্ষ করতে হলে বরাবরই বেলাগাম ভাষা পছন্দ তথাগত রায়ের। তা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন ঠিকই, তবে তাঁর তাতে কিছু যে যায় আসে না বুঝিয়ে দেন স্পষ্ট। কিন্তু এ ভাবে দলেরই মহিলা প্রার্থীদের আক্রমণ প্রত্যাশিত নয়, বলছেন বিজেপিরই কেউ কেউ। সঙ্গে আবার নাম করে দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননদের যে ভাবে কটাক্ষ করেছেন তা নিয়েও বেশ চর্চা শুরু হয়েছে।

আরএসএস করা হিন্দুত্ববাদের কট্টর সমর্থক এই মানুষটি যে সময় বঙ্গ বিজেপিতে আসেন, তখন বাংলায় দলটার সে অর্থে আলাদা তেমন গুরুত্বই ছিল না। বাংলা তখন বামেদের দুর্গ। একান্তই যদি বাম-রাজনীতি না পোষায় তাহলে হাত বাড়িয়ে দিত কংগ্রেস। এরকমই এক প্রেক্ষাপটে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ তথাগত রায়ের। সালটা ১৯৯০। বাংলায় তখন বিজেপি মানে তপন শিকদার কিংবা বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী।

আরও পড়ুন: মমতাকে হারিয়েও শান্তি নেই শান্তিকুঞ্জে, শিশির পতনের নীরবতা সাদা বাড়ি চত্বরে

সংসদীয় রাজনীতিতে সাফল্যের মুখ না দেখলেও তাঁকে ত্রিপুরার রাজ্যপাল হিসাবে মনোনীত করে পাঠায় মোদী সরকার। সেখান থেকে রাজ্যপাল হন মেঘালয়ের। সেসব সাংবিধানিক দায়িত্ব সেরে ফের বাংলায় ফেরেন তথাগত। জানান, সক্রিয়ভাবে বঙ্গ বিজেপি শিবিরে কাজ করতে চান। সে সময় একুশের ভোটে যে ক’জনের নামে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন ছিল তার মধ্যে নাম ছিল তথাগত রায়েরও। কিন্তু বিজেপি তাঁকে প্রার্থীই করেনি। সূত্রের খবর, এ নিয়ে কিছুটা ক্ষোভও ছিল তাঁর।

এরইমধ্যে বিজেপির আশানুরূপ ফল না হওয়ায় অন্দরের ক্ষোভ চাড়া দিতে শুরু করেছে তথাগতবাবুর। ৩ মে প্রথম টুইটটিই আলোড়ন ফেলে, ‘একটা ভুল সত্বর শোধরানো প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রামের চাষীও অশালীন ভাষায় অর্থহীন ভাষণ শুনতে রাজি নয়।’ এর মধ্যে এদিন আবার দলের তারকা প্রার্থীদের হার নিয়ে সরব হলেন তিনি। বল ঠেললেন দলের রাজ্য সভাপতি-সহ প্রথম সারির নেতাদের কোর্টে।