West Bengal Assembly Election 2021: তৃণমূল ক্ষমতায় জিতলে ৫২ বছর পর রাজ্যে ফিরবে বিধান পরিষদ

ঠনির্বাচনে (West Bengal Assembly Election 2021) জিতলে বিধান পরিষদ (Legislative Council ) তৈরি করব।"

West Bengal Assembly Election 2021: তৃণমূল ক্ষমতায় জিতলে ৫২ বছর পর রাজ্যে ফিরবে বিধান পরিষদ
ছবি- ফেসবুক
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 05, 2021 | 4:12 PM

কলকাতা: ১৯৬৯ সালের পর ২০২১। পশ্চিমবঙ্গে আবার ফিরতে পারে রাজ্য আইনসভার উচ্চ কক্ষ- বিধান পরিষদ। শুক্রবার প্রার্থী তালিকা  (West Bengal Assembly Election 2021 ) ঘোষণা করার সময়ে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) সকলকে অবাক করে জানান, “কাউকে কাউকে আমরা আসন দিতে পারিনি। কারণ, আসন দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক কিছুই নির্ভর করে। আমার খুব পরিচিত, আমার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা কিছু লোককেও বাদ দিতে হয়েছে। আমরা ঠিক করেছি, এবার আমরা বিধান পরিষদ (Legislative Council ) তৈরি করব। যাঁরা বাদ পড়বেন, তাঁদের নিয়ে আসব বিধান পরিষদে।”

বিধান পরিষদের সদস্য করার ক্ষেত্রে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম করেন পূর্ণেন্দু বসুর। রাজ্যের এই বিদায়ী মন্ত্রী এই মুহূর্তে নন্দীগ্রামে নেত্রীর হয়ে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করছেন। অসুস্থতার কারণে নির্বাচনে লড়তে পারছেন না অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও। তাঁকেও বিধান পরিষদের সদস্য করার কথা জানিয়ে রাখেন নেত্রী। এই তালিকায় নাম রয়েছে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রাক্তন মন্ত্রী-আমলা মণীশ গুপ্ত, ব্রজ মজুমদার, জটু লাহিড়ী, অসীম মাঝি, অমল আচার্য প্রমুখের। হাই সুগারের কারণে এবার টিকিট পাননি মমতার একদা ছায়াসঙ্গী তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহও। সাতগাছিয়ার বিদায়ী বিধায়ককেও বিধান পরিষদের সদস্য করে আনার কথা জানান নেত্রী।

তবে এ সবের উর্ধ্বে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন অন্য কথা। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ফের বাংলায় ফিরে আসতে চলেছে বামেদের আমলে অবলুপ্ত হওয়া ঐতিহ্য। দেশের খুব কম রাজ্যেই বর্তমানে বিধান পরিষদের অস্তিত্ব রয়েছে। একুশের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জিতে তৃণমূল ক্ষমতায় এলে বাংলায় আবার দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার ইতিহাসকে ফিরিয়ে আনবে।

বিধান পরিষদ কী? সংসদে উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভা এবং নিম্ন কক্ষ লোকসভা। রাজ্যের দ্বিকক্ষ আইনসভার ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষের নাম বিধান পরিষদ ও নিম্নকক্ষ হল বিধানসভা। তবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এই মুহূর্তে এক কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভাই রয়েছে। কেবলমাত্র অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতেই এখনও বিধান পরিষদ রয়েছে।

ভারতীয় সংবিধানের ১৭১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিধানসভার সদস্য সংখ্যার এক তৃতীয়াংশ সদস্য থাকবেন বিধান পরিষদে। সেক্ষেত্রে সংখ্যাটি কোনওভাবেই ৪০-এর কম হবে না। ২৯৪ বিধানসভা আসন বিশিষ্ট পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বিধানপরিষদের আসন সংখ্যা হতে পারে ৯৮। এই বিধান পরিষদের কার্যকালের মেয়াদ হল ৬ বছর। বিধানসভার পাশাপাশি বিধান পরিষদেও বিল পাশ হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা প্রচলিত। তবে সরাসরি জনগণের ভোটে জিতে আসা জনপ্রতিনিধিদের বিধানসভায় পাস হওয়া যে কোনও বিল বিধান পরিষদ সর্বাধিক ৪ মাস আটকে রাখতে পারে। তবে রাজ্যে বিধান পরিষদের তেমন কোনও শাসন ক্ষমতা নেই বললেই চলে।

রাজ্যে একসময় বিধান পরিষদ ছিল। কিন্তু গণতান্ত্রিক কাঠামোতে পরবর্তীকালে বিধান পরিষদের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ১৯৬৯ সালে তুলে দেওয়া হয় বিধান পরিষদ। ২০১১ সালে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সরকার পুনরায় এই পরিষদ গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়িত করা হয় নি। ক্ষমতায় থাকার ১০ বছর পর নির্বাচের সম্মুখীন হয়ে ফের সেই বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: West Bengal Election 2021 LIVE: কালীঘাটে চন্দ্রিমা, সুব্রত, অরূপ, সৌগত, ২৯৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করবেন মমতা

বিধান পরিষদ কেন ফেরাতে চাইছে তৃণমূল?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের প্রার্থী তালিকায় চমক রাখতে গিয়ে মমতার ‘ঘনিষ্ঠ’ অনেকেরই নাম প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। বাদ পড়েছে অমিত মিত্র, পূর্রণেন্দু বসুর মতো নামও। এর বাইরেও রাজ্য জুড়ে জেলায় জেলায় নানা সমীকরণ মাথায় রেখে অনেক বিদায়ী বিধায়ক এবং প্রত্যাশী কর্মীকে টিকিট দিতে পারেনি তৃণমূল। ফলে তাঁদের বিধান পরিষদের সদস্য করে ভারসাম্য রাখতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সব নেতাকর্মীরা যাতে টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ বা ‘বেসুরো’ না হয়ে উঠেন, তা সুনিশ্চিত করতে চেয়েছেন নেত্রী, এমনটাই পর্যবেক্ষণ অনেকের।