শুভেন্দু-জয়ে উত্তাল নন্দীগ্রাম-হলদিয়া, মারধর-ভাঙচুর-আগুনে তীব্র উত্তেজনা

“এতগুলো জায়গায় তৃণমূল (TMC) জিতেছে। আমরা তো সে সমস্ত জায়গায় মানুষের নৈতিক জয় স্বীকার করে নিয়েছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কেন পরাজয় এড়াচ্ছেন? এটাই তো বাস্তব। নির্বাচন কমিশন শুভেন্দুবাবু (Suvendu Adhikari) কে সার্টিফিকেট দিয়েছেন।''

শুভেন্দু-জয়ে উত্তাল নন্দীগ্রাম-হলদিয়া, মারধর-ভাঙচুর-আগুনে তীব্র উত্তেজনা
দুই মহারথীর লড়াইকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা
Follow Us:
| Updated on: May 03, 2021 | 9:36 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) জয়ী ঘোষণার পর থেকেই উত্তেজনা ছিল। সোমবার সন্ধে থেকে তা পৌঁছল চরমে। বিজেপি কর্মীদের মারধর, বাড়ি ভাঙচুর, মোটর বাইকে আগুন লাগানোর ঘটনায় উত্তাল নন্দীগ্রাম (Nandigram) থেকে হলদিয়া (Haldia)।

প্রথমে মমতা (Mamata Banerjee) জয় পেলেও পরে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) শুভেন্দুকে জয়ী ঘোষণা করে। তার জেরে রবিবার সন্ধ্যা থেকেই পুনর্গণনার দাবিতে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হলদিয়ার গর্ভমেন্ট স্পনসর্ড হাইস্কুলের গণনা কেন্দ্রের আশপাশ এলাকা। অভিযোগ, হলদিয়ার মঞ্জুশ্রী মোড়ে বেশ কয়েকটি মোটর বাইকে আগুন লাগিয়ে দেন তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকেরা। পাশাপাশি একাধিক বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের দোকান ভাঙচুর করা হয়। একই ঘটনা ঘটেছে নন্দীগ্রামেও। বিজেপির তরফে অভিযোগ, নন্দীগ্রামের গণনায় মমতা কারচুপির অভিযোগ তোলার পর আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। এখন এলাকার বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছেন তাঁরা।

রবিবার রাতভর তৃণমূল কর্মীরা হলদিয়ার গণনা কেন্দ্র চত্বরে পুনর্গণনার দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সোমবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে শুরু করে। রবিবার রাতেই হলদিয়ার মঞ্জুশ্রী মোড় এলাকায় রাস্তার উপর বেশ কয়েকটি ডাম্পার দাঁড় করিয়ে দিয়ে রাস্তার উপর বসে অবরোধ-বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা। বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীর মোটরবাইকেও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বেধড়ক মারধর করা হয় হলদিয়া এলাকার বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকেও।

রবিবার শুভেন্দু অধিকারী শংসাপত্র নেওয়ার জন্য হলদিয়ার মহকুমা শাসক দফতরে আসতেই কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। শুভেন্দুকে দেখতে পেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূলের কর্মীরা। গণনায় কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। শুভেন্দুর গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন বলে অভিযোগ। শুভেন্দুর নিরাপত্তারক্ষীরা ওই এলাকায থেকে শুভেন্দুকে বের করে নিয়ে যান। এরপর মঞ্জুশ্রী মোড়ে সারারাত ধরে অবরোধ-বিক্ষোভ চলে। সোমবার সকালেও দিনভর অবরোধ বিক্ষোভে শামিল হন তারা।

অন্যদিকে নন্দীগ্রামে রবিবার রাতে আট থেকে দশ বিজেপি কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরও করা হয় একের পর এক বিজেপি কর্মীকে।

আরও পড়ুন: আসুক না…দলত্যাগীদের স্বাগত: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা তথা তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি প্রলয় পালের কথায়, “এতগুলো জায়গায় তৃণমূল জিতেছে। আমরা তো সে সমস্ত জায়গায় মানুষের নৈতিক জয় স্বীকার করে নিয়েছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কেন পরাজয় এড়াচ্ছেন? এটাই তো বাস্তব। নির্বাচন কমিশন শুভেন্দুবাবুকে সার্টিফিকেট দিয়েছেন।” তিনি যোগ করেন, “তৃণমূলীরা পুনর্গণনার দাবি জানাতেই পারেন, কিন্তু নন্দীগ্রামের জয়ী হবেন শুভেন্দুবাবুই।”