স্বপ্নিল থেকে সাইশা! ট্রান্সওম্যান হয়ে ওঠার জার্নি কেমন ছিল? ইনস্টাগ্রামে অকপট ফ্যাশন ডিজাইনার

ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করে স্বপ্নিল জানিয়েছেন তাঁর নতুন পরিচয় সাইশা, যিনি একজন ট্রান্সওম্যান।

স্বপ্নিল থেকে সাইশা! ট্রান্সওম্যান হয়ে ওঠার জার্নি কেমন ছিল? ইনস্টাগ্রামে অকপট ফ্যাশন ডিজাইনার
সাইশা আগে ছিলেন স্বপ্নিল শিন্ডে।
Follow Us:
| Updated on: Jan 07, 2021 | 2:17 PM

বলিউডের প্রায় সব সুন্দরীকেই সাজিয়েছেন তিনি। তাঁর ডিজাইন করা পোশাক পরার তালিকায় রয়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন, মাধুরী দীক্ষিত, করিনা কাপুর। তরুণ প্রজন্মের অভিনেত্রী তাপসী পান্নু, জাহ্নবী কাপুর, কিয়ারা আডবাণী, শ্রদ্ধা কাপুর সকলেই সেজেছেন তাঁর পোশাকে।

এবার তিনি নিজেকেও সাজালেন একদম অন্য রূপে। মনের কথা শুনে আত্মপ্রকাশ করলেন সম্পূর্ণ ভাবে। তিনি সাইশা শিন্ডে। সাইশা আগে ছিলেন স্বপ্নিল শিন্ডে। তবে ছোট থেকেই নিজের মধ্যে থাকা নারী সত্তাকে অনুভব করতেন তিনি। জীবনের সঙ্গে বিভিন্ন লড়াইয়ে যুঝে, সমাজের বাধা-বেড়াজাল টপকে শেষ পর্যন্ত নিজের মনের কথা শুনেছেন তিনি। ট্রান্সওম্যান হিসেবে নিজের নতুন অস্তিত্ব শিকার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করে স্বপ্নিল জানিয়েছেন তাঁর নতুন পরিচয় সাইশা, যিনি একজন ট্রান্সওম্যান।

View this post on Instagram

A post shared by S A I S H A S H I N D E (@officialswapnilshinde)

সাইশা শব্দের অর্থ হল ‘মিনিংফুল লাইফ’ অর্থাৎ ‘অর্থবহ জীবন’, যে জীবনের মানে রয়েছে। সাইশা জানিয়েছেন, তিনি পরিকল্পনা করেছেন নিজের জীবনকে ব্যতিক্রমী ভাবে অর্থবহ করে তুলবেন। ইনস্টাগ্রামের প্রোফাইল পিকচারও বদলে দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের এই ফ্যাশন ডিজাইনার। কটা চোখ, নিখুঁত ভাবে আঁকা ভ্রূ, লিপস্টিকের পারফেক্ট টাচ, একঢাল চুলে এটা বোঝা দায় যে সাইশা কোনওদিন স্বপ্নিল ছিলেন। নারীসত্তা যে তাঁর মধ্যে বরাবরই ছিল সাইশার নতুন লুকস সেটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে।

সাইশা লিখেছেন, “অবশেষে নিজের পছন্দ অনুযায়ী প্রোফাইল ছবি বদলাতে পারলাম। আমি সবসময় এটাই চাইতাম। প্রতিটা নতুন দিনই একটা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমি প্রতিটি মুহূর্ত অনুভব করছি।“ সেই সঙ্গে সাইশা অবশ্য এটাও জানিয়েছেন যে তাঁর চুল আসলে উইগ বা পরচুল। তবে যাই হোক না কেন নতুন রূপই তাঁর আসল জীবন, একথা বারবারই বুঝিয়ে দিয়েছেন সাইশা।

ইনস্টা পোস্টে তিনি লিখেছেন, “অরিজিন ছাড়াও ছোটবেলা আমাদের অনেক কিছু মনে করিয়ে দেয়। আমার ক্ষেত্রে ছেলেবেলা মানে একাকীত্ব, তাঁর যন্ত্রণা, সর্বক্ষণের একটা চাপ আর একগাদা বিভ্রান্তিমূলক ধারনা যা সারাক্ষণ আমার আশেপাশে থাকত।“ সাইশা আরও লিখেছেন, “ছোট থেকেই আমি অন্যরকম ছিলাম। স্কুল-কলেজে ছেলে বন্ধুরা নানা ভাবে হেনস্থা করত। যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে যেতাম। দমবন্ধ হয়ে আসতো আমার। এমন একটা বাস্তবের মধ্যে প্রতিদিন আমায় বেঁচে থাকত হতো যা কোনওভাবেই আমার সত্তা নয়।“

সাইশা জানিয়েছেন, তাঁর বয়স যখন ২০ বছরের কাছাকাছি তখন এনআইএফটি-তে ভর্তি হওয়ার পর প্রথম নিজের মধ্যে থাকা নারী সত্তা ভাল ভাবে বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। এরপর তিনি অনুভব করেন যে পুরুষদের প্রতি তাঁর আকর্ষণ রয়েছে। স্বভাবতই নিজেকে গে-ম্যান হিসেবে ভাবতে শুরু করেন সাইশা। কিন্তু বছর ছয়েক আগে তিনি বুঝতে পারেন আসল ব্যাপারটা তা নয়। সাইশার কথায়, “৬ বছর আগে নিজের আসল অস্তিত্ব বুঝতে পারে। নিজেকে তখন সে ভাবেই মানিয়ে নিয়েছিল। এখন আপনাদের সামনেও নিজের আসল অস্তিত্ব জানাচ্ছি। আমি গে-ম্যান নই। আমি ট্রান্সওম্যান।“