“মিথ্যে বলছেন,” প্রমাণ দিতে ফেসবুকে অডিও রেকর্ডিং শেয়ার ‘দেশের নামে’র পরিচালকের, পাল্টা দাবি সুব্রতর

“যেহেতু সেনসিটিভ ইস্যু তাই অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোনও রিস্ক নেবে না... এখন তো আর রিকোয়েস্টের জায়গা নেই... থার্ড পার্টি জড়িত আছে, এটা যদি আমার শো হত বা আমার নিজের প্রপার্টি হত, তাহলে আমি আমার মতো ডিসিশন নিতাম।” রেকর্ডিংয়ে ওই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার ফেসবুকে শো না-হওয়ার পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে ‘অনিবার্য কারণে’ এই দু’টি শব্দ লিখতে বলেন। রেকর্ডিংয়ে তিনি আরও বলেন, “জটিলতায় যাস না, এতে পরবর্তীতে কাজ করতে অসুবিধে হবে।”

“মিথ্যে বলছেন,” প্রমাণ দিতে ফেসবুকে অডিও রেকর্ডিং শেয়ার ‘দেশের নামে’র পরিচালকের, পাল্টা দাবি সুব্রতর
'দেশের নামে' নাটকে ঋতব্রত।
Follow Us:
| Updated on: Mar 05, 2021 | 7:20 PM

TV9 বাংলার প্রতিবেদনে ‘আয়োজক’-এর বক্তব্য় পড়ে ‘দেশের নামে’ নাটকের পরিচালক-অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্য়ায়ের অভিযোগ করলেন সংশ্লিষ্ট ব্য়ক্তি মিথ্য়ে কথা বলছেন। ‘আয়োজক’ সুব্রত সেনগুপ্ত যে ‘মিথ্যে’ কথা বলছেন, তার ‘প্রমাণস্বরূপ’ তাঁর সঙ্গে কথোপকথনের রেকর্ডিংও ফেসবুকে শেয়ারও করেছেন ঋতব্রতর নাট্যদলের একজন সদস্য (এই অডিও রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করে দেখেনি TV9 বাংলা)। উল্টো দিকে, ‘আয়োজক’ সুব্রত একটি ফেসবুক পোস্টে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে করে জানিয়েছেন, তিনি ওই নাটকের আয়োজক ছিলেন না। শুধু তাই-ই নয়, তাঁর আরও দাবি, তিনি ঋতব্রতদের নাট্য়দলকে আমন্ত্রণও জানাননি। তবে ‘রাজনৈতিক’ অথবা ‘প্রশাসনিক চাপ’-এর কারণে শো ‘স্থগিত’ হচ্ছে, তাঁর পোস্টে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুব্রত।

 

আরও পড়ুন ঋতব্রতর ‘রাজনৈতিক’ নাটক ‘বন্ধ করিয়ে দেওয়া’-র অভিযোগ, ‘স্থগিত হয়েছে’ বলে দাবি আয়োজকের

 

 

 

বৃহস্পতিবার একটি ফেসবুক পোস্টে ‘দেশের নামে’ নাটক ‘বন্ধ করিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলে অভিযোগ করেন ঋতব্রত। শুক্রবার কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রর ‘তাপস সেন কুমার রায় নাট্যভবন’-এ মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল নাটকটির। TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হলে ঋতব্রতর নাটক ‘বন্ধ করিয়ে দেওয়া’র অভিযোগ অবশ্য় বৃহস্পতিবারই অস্বীকার করেছিলেন ‘ড্যাড’ (সুব্রত)। সেই বক্তব্য়ের পাল্টা হিসেবে TV9 বাংলাকে বৃহস্পতিবার ঋতব্রত বলেন, “একেবারে মিথ্যে কথা বলছেন ড্য়াড। রাজনৈতিক কারণে আমাদের নাটকটি বন্ধ করা হয়েছে।”

 

 

 

ড্য়াড ‘মিথ্যে’ কথা বলছেন দাবি করে তাঁর সঙ্গে কথোপকথনের রেকর্ডিং ফেসবুকে শেয়ার করেছেন নাট্যদলের একজন সদস্য (এই অডিও রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করে দেখেনি TV9 বাংলা)। তারক হালদার নামে ওই ব্যক্তি ফেসবুকে তা শেয়ার করে ট্যাগও করেছেন ঋতব্রতকে। ভিডিয়োর স্টেটাস আপডেটে তারক লিখেছেন, “নমস্কার, আমি তারক হালদার। আমাদের ‘দেশের নামে’ নাটকটির নির্দেশক ঋতব্রত মুখার্জি, দুপুরে তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করার পর থেকেই আমাদের বিপক্ষে বিভিন্ন রকম বক্তব্য উঠে আসছে। ভিডিওটিতে কোথাও আয়োজক সংস্থার বিপক্ষে আমরা কিছুই জানাইনি। আমাদের সঙ্গে ঘটে থাকা ঘটনাটি উল্লেখ করেছি মাত্র। পরবর্তীতে সুব্রত সেনগুপ্ত দাদার একটি ফেসবুক পোস্টে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে আমাদের কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছেন অনেকেই। এখন আমাদের সঙ্গে হওয়া কথোপকথনটি আপনাদের সম্মুখে আনা ছাড়া আর পথ আমরা দেখছি না।” সুব্রতর অনুমতি ছাড়াই ওই রেকর্ডিংটি হয়েছে, সে ব্য়াপারে দুঃখ প্রকাশও করেছেন তারক।
ওই অডিওতে সুব্রতর কণ্ঠস্বর হিসেবে যাঁর কণ্ঠের কথা বলা হয়েছে, তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “যেহেতু সেনসিটিভ ইস্যু তাই অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোনও রিস্ক নেবে না… এখন তো আর রিকোয়েস্টের জায়গা নেই… থার্ড পার্টি জড়িত আছে, এটা যদি আমার শো হত বা আমার নিজের প্রপার্টি হত, তাহলে আমি আমার মতো ডিসিশন নিতাম।” রেকর্ডিংয়ে ওই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার ফেসবুকে শো না-হওয়ার পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে ‘অনিবার্য কারণে’ এই দু’টি শব্দ লিখতে বলেন। রেকর্ডিংয়ে তিনি আরও বলেন, “জটিলতায় যাস না, এতে পরবর্তীতে কাজ করতে অসুবিধে হবে।”

 

 

 

ঋতব্রতর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আপনি রেকর্ডিং শুনলে বুঝতে পারবেন, যে ঠিক কীভাবে বারবার বলা হয়েছে থার্ড পার্টির কথা। আর সুব্রতবাবু নিজে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ‘সাংগঠনিক সমস্যার কারণে আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না’—ভাবুন একটা নাটক রাজনৈতিক কারণে বন্ধ হয়ে গেল!” সুব্রত তাঁর বৃহস্পতিবারের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “#ভুল_বার্তা। আগামীকাল ৫ই মার্চ, ২০২১, তাপস সেন কুমার রায় ভবনে যে দেশের নামে নাটকটি হবার কথা ছিল—সেটি এই স্বল্প সময়ে সাংগঠনিক সমস্যার কারণে আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না—কিন্তু নাটকটি আমরা অদূর ভবিষ্যতেই করব যথাযথ নিয়মবিধি মেনে। একটি ভুল বার্তা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়াচ্ছে—যেটা একেবারেই কাম্য নয়।”
এ দিকে, ‘নাটক বন্ধ না স্থগিত – কোনটা এবং কেন? কে দায়ী?’—এই শিরোনামে সুব্রত যে দীর্ঘ পোস্টটি করেছেন, তার সারমর্ম মোটামুটি এরকম: সোশ্য়াল মিডিয়া এবং গণমাধ্য়মে প্রচারিত হয়েছে, তিনি এই নাটকের ‘আয়োজক’। সুব্রতর সাফ বক্তব্য়, তিনি ‘আয়োজক’ নন। তাঁর আরও দাবি, ঋতব্রতদের নাট্য়দলকে আমন্ত্রণও জানাননি তিনি। নাট্য়দলের তরুণ কর্মীদের ‘সন্তানসম’ বলে সম্বোধন করে সুব্রতর স্বীকারোক্তি, প্রশাসনিক নিয়ম (অ্য়াডমিনিস্ট্রেটিভ প্রোটোকল)-এর যে প্রসঙ্গের অবতারণা তিনি করেছিলেন বৃহস্পতিবার, তা মিথ্য়ে (‘সুইট লাই’)। কারণ প্রশাসনের কোনও মহল বা ‘রাজনৈতিক সংগঠন থেকে’ কেউই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। বিষয়টি ‘ক্রমশ জটিলতর হয়ে উঠেছে’ এবং এর ফলে সুব্রত নিজেকে মানসিকভাবে ‘সম্পূর্ণ বিপর্যস্থ বোধ’ করছেন বলেও দাবি করেছেন পোস্টে।

 

 

সুব্রতর এই পোস্ট প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ওই রেকর্ডিংয়ে সম্পূর্ণ কথোপকথন নেই। অংশবিশেষ কেটে পোস্ট করা হয়েছে ফেসবুকে।” বৃহস্পতিবারের মতো এ দিন আবারও তিনি দাবি করেন, আমি আয়োজক নই। শুধু ওদের সাহায্য় করতে ব্য়বস্থাপনার দায়িত্বে ছিলাম। শো স্থগিত হওয়াকে কেন্দ্র করে কোনও রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্নই নেই।” সুব্রতর এই দাবির প্রেক্ষিতে আবার ঋতব্রতর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।