নির্বাচনী রাজনীতির নাড়ি টিপে দেখা যাক, কোথায় নারী?

মহাভারত (Mahabharata) দেখিয়েছে, ধীবর কন্যা ও তাঁর পুত্রের দৌলতে কুরুক্ষেত্র পর্যন্ত ঘটে গিয়েছে। বিষম, ভীষণ প্রতিজ্ঞা করে দেবদত্ত হয়ে উঠেছেন ভীষ্ম।

নির্বাচনী রাজনীতির নাড়ি টিপে দেখা যাক, কোথায় নারী?
অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 09, 2021 | 12:30 PM

কলকাতা:  অ্যারিস্টটল (Aristotle) বলিয়াছেন, ‘মানুষ একটি রাজনৈতিক প্রাণী।’  আদ্যোপান্ত আলুভাতে জীবনেও আপাদমস্তক সঠিক, নির্ভুল থাকার যে অভিযোজিত অভ্যেসে বেড়ে ওঠা আমাদের সেখানে, ‘অ্যাপলিটিক্যাল’ এই শব্দটিই ভ্রান্তিমাত্র। হয়ত তাই, কোথাও গিয়ে আমাদের উত্তর খুঁজতে হয়। মুখোমুখি হতে হয় আত্মসমালোচনার। সমষ্টি থেকে স্বতন্ত্র। এই উত্তর খোঁজে বাড়ির বাহিরমহল থেকে অন্দরও।

ভেতর বাড়ি বরাবরই যেন অন্য এক জগত। মহিলাদের খাস তালুক চিরকালই ‘অন্দরমহল’ নামেই থেকে গেল। গার্গী, অপালাদের সময় থেকে ২০২১…এগিয়েছে ঘড়ির কাঁটা, বদলেছে দিন। কিন্তু, সমানাধিকার, স্বাধীনতায় কতদূর সেই পালাবদল?মহাভারত (Mahabharata) দেখিয়েছে, ধীবর কন্যা ও তাঁর পুত্রের দৌলতে কুরুক্ষেত্র পর্যন্ত ঘটে গিয়েছে। বিষম, ভীষণ প্রতিজ্ঞা করে দেবদত্ত হয়ে উঠেছেন ভীষ্ম। তারপরেও ‘খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার এই তো মোদের পৃথিবী’।

৮ মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস (International Women’s Day)। অন্তত, ইতিহাস তাই বলে। মেয়েদের জন্য গোটা একটা দিন। ৩৬৫ দিনের মধ্যে, ওই একটি দিন। বাকি ৩৬৪ দিন একটা প্রশ্ন বটে। সেই প্রশ্নের প্রসন্ন উত্তর পাওয়া বোধহয় শতক পেরিয়েও অধরা।সেই উত্তর খোঁজার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস। সংসার থেকে সক্রিয় রাজনীতি, জীবনযুদ্ধে কতটা সাবলীল, সচেতন হতে পেরেছেন একবিংশ শতকের মহিলারা?

নারী ও স্বাধীনতা। প্রশ্ন ওঠে এই স্বাধীনতা কি সত্যিই স্বাধীনতা না কুড়িয়ে পাওয়া, দেখিয়ে দেওয়া আরোপিত স্বাধীনতা? প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী (Actor) সুদীপ্তা চক্রবর্তী জানান, মানসিকভাবে আমাদের স্বাধীন হতে হবে। স্বাধীনতা শব্দটির অর্থ অনুধাবন করতে হবে। সম্প্রতি শহরের বুকে ঘটে যাওয়া ‘রসিকা রহস্য মৃত্যুর’ উল্লেখ করে সুদীপ্তা বলেন, ‘মেয়েটি বারবার বলেছিল ও ভাল নেই। ওর মা-বাবাকে নিয়ে যেতে বলেছিল, কিন্তু কেন একটি পঁচিশ বছরের মেয়ে নিজে বেরিয়ে আসতে পারবে না, তার অপছন্দের জায়গা থেকে? কেন বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত সে একা নিতে পারবে না?’ কিন্তু এই সমস্যার সূত্র কোথায়? প্রশ্নের উত্তরে সুদীপ্তা জানান, এটা এই ‘ওয়াই জেনারেশনের’ সমস্যা।

আরও পড়ুন: ট্রোলবাহিনী তফাত্‍ যাও! ‘বেবি বাম্প’-এ জড়তা কাটছে সেলেব থেকে সাধারণের

প্রায় অনুরূপ উত্তর দেন অভিনেতা (Actor) ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। তরুণ অভিনেতার কথায়, লিঙ্গ বৈষম্য বা স্বাধীনতার ধারণায় যে পিতৃতন্ত্রের শেকল আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে সেখানে পরিবার নয়, আর্থিক কাঠামো নয়, দায়ী কেবল শিক্ষার অভাব। যথোপযুক্ত শিক্ষা এমনকী প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থাও না করতে পারা আসলে এই আরোপিত স্বাধীনতা, বলা বাহুল্য ‘স্বাধীনতাহীনতার’ কারণ।

Actor Rwitobroto Mukhopadhyay speaks on International Women's Day

অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ

সামাজিক পরিচয় তৈরি করতে আত্মপ্রত্যয়ী হওয়ার বার্তা দিলেন সদ্য তৃণমূলে (TMC) যোগদানকারী অভিনেত্রী, প্রযোজক সুদেষ্ণা রায়। ‘ফ্রিডম অব চয়েস’ এবং ‘ইকনমিক ফ্রিডম’-এর বার্তা দিলেন সু্দেষ্ণা। প্রসঙ্গক্রমে নিজের দিদিমার পালিয়ে বিয়ে করার স্মৃতিও ভাগ করলেন তিনি। নিজের ইচ্ছায়, নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। ‘ম্যারেজ ইজ় লিগালাইজড প্রস্টিটিউশন’, বার্নাড শ’-এর সময় থেকে এই ধারণাটি বলবৎ হলেও কখনওই গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। কারণ, মহিলারা শ্রমের দাম পাননি কখনও। তাই, অর্থনৈতিকভাবে মহিলাদের স্বাধীন হওয়ার আগে স্বাবলম্বী হওয়া জরুরি বলেই মনে করছেন সুদেষ্ণা।

Sudeshna Roy speaks on International Women's Day

অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ

লক্ষ্যণীয়, ইকমনিক ফ্রিডমের ঠিক বিপরীতেই দাঁড়িয়ে আছে অর্থনৈতিক বৈষম্য। এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান ডেভলপমেন্ট স্টাডিজের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. সীমন্তিনী মুখোপাধ্যায় জানান,  ভারতীয় মহিলা বলে শুধু নয়, বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলিতেও মহিলারা ত্যাগ করার একটা সোশ্যাল হায়ারার্কি মেনে চলেন। ত্যাগের মধ্যে দিয়ে যে আমিত্বকে তাঁরা বরণ করেন, নিজের অজান্তেই লালন করেন পিতৃতন্ত্রকে। এ প্রসঙ্গে জাতীয় সমীক্ষার একটি তথ্যকে কেন্দ্র করে তিনি বলেন, ‘সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে পুরুষদের ৪২ শতাংশ মনে করেন মহিলাদের গায়ে হাত তোলা উচিত। অন্যদিকে, প্রায় ৫২ শতাংশ মহিলা মনে করেন স্বামী তাঁর স্ত্রীর গায়ে হাত তুলতে পারেন।

আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলকে বেছে নেওয়ার আগে কেন সতর্ক হওয়া ভাল? পোস্ট শেয়ার করলেন অনীক দত্ত

শুধু তাই নয়, পাঠ্য বই থেকে শুরু করে পেশা নির্বাচনেও মহিলাদের জন্য বিশেষ  বরাদ্দে থাকে শিক্ষকতা, অধ্যাপনা বা সেবিকার ভূমিকা। কিন্তু, কোনও কর্পোরেট পেশায় জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন কোনও মহিলা, এমন ছবি খুব বেশি দেখা যায়না। আমাদের চোখেরই যেন একটা এমন অভ্যেস হয়ে গিয়েছে, মহিলা মাত্রই তিনি শিক্ষকতা, অধ্যাপনার বাইরে যেতে পারবেন না। অর্থাৎ, ঘরোয়া কাজই মহিলাদের একমাত্র দায় ও দায়বদ্ধতা।’

ঘরে কোনও মহিলা উদয়াস্ত খাটছেন। নিজের শ্রমের বিনিময়ে কোনও মূল্য পাচ্ছেন না তিনি। অথচ, সেই শ্রম কোনওভাবেই গৃহীত হচ্ছে না। কারণ, তিনি বাড়িতে থাকেন। হোমমেকার। এই ধারণা কেবল বিত্তকে কেন্দ্র করে হয়না বলেই মনে করেন পার্নো। আবার সমাজ ও রাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে জীবন নয়। প্রত্যেক সমাজের যে নির্দিষ্ট নিয়ম তা লিঙ্গ ভেদ করে না। সমাজের মধ্যে থেকেই নিজের ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যকে জন্ম দিতে হবে, সম্মান করতে হবে।

Actor Parno Mitra speaks on International Women's Day

স্ব অর্জিত অধিকারকে সম্মান করতে শুরু করলে, বুঝতে শুরু করলেই ভাষা আসবে মুখে। আর ভাষা  আসলেই নিয়মিত নিয়মকে প্রশ্ন করতে শিখবে মানুষ, লিঙ্গভেদ না করেই। হোমমেকার পৌলমী মুখার্জি যদিও বলছেন, ‘মুখের ভাষা কী হতে পারে তা জানা নেই। রাজনীতি নিয়েও কখনও ভাবিনি। আসলে রাজনীতি যে বিচ্ছিন্ন কোনও কিছু এমন মনে হয়নি। কোন রান্নায় কতটা মশলা লাগবে বা কার সঙ্গে আলাপ করতে হবে, কাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ছেলে কী খাবে, মেয়ে কী ভাববে—-এই সবকিছুই তো বুঝে নিয়ে চলতে হয়। মাথায় নিয়ে চলতে হয়। আশাপূর্ণা দেবী যেরকম লিখেছেন, মেয়েরা সবচেয়ে বড় অভিনেত্রী। জীবনভর তারা অভিনয় করতে পারে। এই তো আসল রাজনীতি।’ কিন্তু, সবারা সামনে এসে সংগঠিত রাজনীতি বা দলীয় রাজনীতি? না, এমনটা ভাবার অবকাশ হয়নি পৌলমীর।

আসন্ন নির্বাচনে যখন নীলবাড়ি দখলে তৎপর বাংলার প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল, তখন এক ঝাঁক তরুণ তারকা এলেন দলীয় রাজনীতির একেবারে সামনের সারিতে। সদ্যই প্রকাশিত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা। সেই তালিকার ৫০ জনই মহিলা প্রার্থী। বিরোধীদের দেওয়া ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলার তৃণমূল তারকা’-র তকমা তুড়ি মেরে উড়িয়ে  দিয়ে দলে যোগ দিয়েছেন সায়নী ঘোষ, জুন মালিয়ার মতো প্রার্থীরা। অন্যদিকে, সদ্যই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন  অভিনেত্রী পায়েল সরকার, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের মতো বাণিজ্যিক ছবির নায়িকারা। ‘পপুলার ফেস’ হয়ে বা না হয়ে একযোগে মহিলাদের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ। আদৌ কি সচেতন পদক্ষেপ করছেন তাঁরা?

আরও পড়ুন: উপলক্ষ্য নারী… দিবস-রজনী | পর্ব ৩ : মহিলা চালিত মিষ্টির দোকানে কেন এত ভীড়?

এ প্রসঙ্গে বাম ছাত্র সংগঠনের (SFI) সর্বভারতীয় নেত্রী দীপ্সিতা ধর জানান, মহিলারা রাজনীতিতে আসছেন, সচেতনভাবে হোক বা না হোক, কিন্তু তাঁরা আসছেন, এই  আসাকে স্বাগত। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র এখনও সামন্তমুক্ত নয়। দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ যেখানে পুরোপুরি চাষের উপর নির্ভর, একটি ফিউডল ক্যাপিটালিস্ট শাসনতন্ত্রের মধ্যে থেকে  মহিলাদের স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়ে ওঠার লড়াইতে সামিল হতে হবে। সম্প্রতি, দিল্লি সীমান্ত জুড়ে চলা কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে এনে দীপ্সিতা জানান, আন্দোলনের মূল হোতা এখন মহিলারাই। তাঁরা প়ঞ্চায়েত চালাচ্ছ্ন, মহা প়ঞ্চায়েতে মতামত রাখছেন, যে হাতে রান্না করছেন, সে হাতেই ট্র্যাক্টর চালাচ্ছেন। এই বিকল্পই আদর্শ হওয়া উচিত। কোনও পন্থা, ডান বা বাম নয়, বিকল্পই হোক আদর্শ।

SFI Leader Dipshita Dhar spekas on international women's day

প্রশ্ন ওঠে কোন বিকল্প? নির্বাচনী ইস্তেহারে দফায় দফায় যে পরিবর্তন ও নতুন মুখের সমাহার তা কি আদৌ সচেতনতায় না কেবলই ভোটের জোয়ার ? সমীক্ষা বলছে, ভোটের ইভিএমে রাজনৈতিকভাবে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে  তিন তালাক সংক্রান্ত আইন, মুসলিম মহিলাদের পুরুষ অভিভাবক ছাড়াই হজে যাওয়ার অধিকার, শবরীমালা নিয়ে আন্দোলন— আবার উজ্জ্বলা যোজনা, ক্র্যাড্ল বেবি প্রকল্প, কন্যাশ্রী কিংবা রূপশ্রী প্রকল্পের নির্বাচনী প্রভাব থাকবেই।

কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রভাবটা মিশ্রও হতে পারে। ও দিকে সামাজিক সুরক্ষা বা ন্যূনতম আয় যোজনার নির্দিষ্ট পরিবার-ভিত্তিক টাকা যদি পরিবারের প্রধান হিসেবে মহিলাদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়, তাতে যে শুধুমাত্র সেই টাকার অপচয়ের সম্ভাবনা কমে বা মহিলাদের সামাজিক প্রভাব বাড়ে, সেটাই নয়, ভোটেও তার একটা ছাপ অবশ্যই পড়ে। দেশে ক্রমশই বাড়ছে মহিলা ভোটারের সংখ্যা। কিন্তু, সেই সংখ্যা কতটা আশাপ্রদ তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বহুক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, মহিলাদের ভোট নির্ধারণ করেন বাড়ির পুরুষরা। অনেক ক্ষেত্রে ভোটই দেন না মহিলারা। ক্ষেত্র বিশেষে, ভোটের কারণ সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল নন তাঁরা।

জেন্ডার আইডেনটিটি ক্রাইসিসকে প্রতিনিয়ত বহন করতে করতে একসময় বাড়ির মহিলারা যে ‘কর্তা’ ও ‘তুষ্টিকরণের কর্মণিতে’ অভ্যস্থ হয়ে যান, তারই প্রতিফলন ঘটে ইভিএম বাক্সে সে ধারণাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন সকলেই।

বাংলার রাজনীতির ময়দানে এখন সর্বাধিক চর্চিত বোধহয় দলীয় স্লোগান ও প্যারডিগুলি। লক্ষ্যণীয়, বাম সংগঠকদের ‘টুম্পা তোকে নিয়ে ব্রিগেড যাব’ বা ‘বেলা চাও’-এর প্যারডি ‘পিসি যাও’ কিংবা, অধুনা শাসক শিবিরের ‘খেলা হবে’—শুধুমাত্র ভোট আবহের মেজাজকে নিয়ন্ত্রণ করছে এমন নয়, একই সঙ্গে খানিকটা যেন উস্কে দিচ্ছে নারী পণ্যায়নের ধারণাকে এমনটাই মতামত বিশেষজ্ঞদের।

এ প্রসঙ্গে, অভিনেত্রী সুদেষ্ণা রায় জানান, ‘পিসি যাও’ বা ‘টুম্পা, তোকে নিয়ে ব্রিগেড যাব’-র মধ্যে কোনও অন্যায় নেই। ‘পিসি’ একটি আত্মিক সম্পর্কের ধারক, আর অন্যদিকে ‘টুম্পা’ কোনও বিশেষ ধারণা পোষণ করে না। স্বাভাবিক , সহজাত ভাবেই গানটি চলতে পারে। বামনেত্রী দীপ্সিতা ধরের দাবি, ‘টুম্পা, তোকে নিয়ে ব্রিগেড যাব’ গানের মধ্যে কোথাও একটা  পিতৃতন্ত্রের বীজ লুকিয়ে থাকলেও আসলে কর্মহীন, অন্নহীন যে আমজনের ছবি সেই ছবিই উঠে এসেছে প্যারডিতে। এতে অন্যায় নেই।

যদিও, এই প্যারডির তীব্র বিরোধিতা করেছেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা, পায়েল, পার্নো, সীমন্তিনীরা। সুদীপ্তার দাবি, কেবল ‘টুম্পার প্রেমিকেরই’ দায়িত্ব কেন হবে ব্রিগেড যাওয়ার? ‘বেকার যুবক’ শব্দবন্ধটি যত সহজে শোনা যায়, ‘বেকার যুবতী’ কেন তত প্রচলিত নয়? প্রায় একই সুর পয়েল-পার্নোর গলায়।

Sudipta Chakraborty Soeaks on International Womem's Day

সদ্য বিজেপিতে (BJP) যোগদানকারী অভিনেত্রী পায়েল সরকার বলেন, ‘রাজনীতির ময়দানে কোথাও মহিলাদের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তু বানানোর পক্ষপাতী নই। এই ধরনের গান কেবল মহিলাদের অসম্মান করে তা নয়, রাজনীতির ময়দানেও বর্জনীয়। যদিও, নারী পণ্যায়ন কেবল রাজনীতিতে হচ্ছে এমনটা নয়, সর্বত্রই হচ্ছে।’

BJP party member Actor Payel Sarkar says on International women's Day

অধ্যাপক সীমন্তিনীর বক্তব্য, অর্থনৈতিক দায়ভার কেবল নয়, আসলে সমাজের ধারণাতেই রয়েছে, মহিলাদের মাথা পাকে বয়সে। সেইজন্য যত সহজে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘পিসি’ সম্বোধন করা যায় তত সহজে প্রধানমন্ত্রীকে আঘাত করা যায় না। তাহলে, ক্ষমতার শীর্ষে থেকেও কি মহিলারা পণ্যে পরিণত হচ্ছেন?

Dr. Simantini Mukherjee Speaks on International Women's Day

দিনের পর দিন যে ধনতন্ত্র, মনুবাদের জড়োয়া গায়ে জড়িয়েছেন মহিলারা তা একেবারে ত্যাগ করা মুশকিল। দীর্ঘ সময়ের লড়াই। সেই লড়াইতে সামিল সুদীপ্তা, পৌলমী, পার্নো, সীমন্তিনীরা। তাঁদের মতো আরও কয়েক কোটি মুখ। বদল আসবে। হবে পালাবদল। আন্তজার্তিক নারী দিবসে আত্মস্বীকৃতিকে আপন করুক অন্দরমহল। দাবি এটুকুই।