টলিপাড়ার অন্দরে নানা ধরনের সমস্যার মেঘ ঘনীভূত হয়। আবার টলিপাড়ার কাজের স্বার্থেই সবপক্ষ সেই সমস্যার সমাধান খুঁজে নেয়। আর সেই টলিপাড়ার হাঁড়ির খবর দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেয় TV9 বাংলা। কিছুদিন আগেই টলিপাড়ার একটি ওয়েব মাধ্যমের কাজ স্থগিত থাকার রহস্য খোঁজ করতে চেষ্টা করেছিল TV9 বাংলা। সেই খবর হল টলিপাড়ার ফেডারেশনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে স্থগিত একটি আন্তর্জাতিক ওটিটি মাধ্যমের জন্য তৈরি সিরিজ। নাম ‘লহু’। এই সিরিজের পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়। ছবির মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন কলকাতার অভিনেত্রী সোহিনী সরকার ও ওপার বাংলার অভিনেতা আরিফিন শুভ। সেই খবরের সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল এই সিরিজের পরিচালক তথা অভিনেত্রী সঙ্গে। তবে অভিনেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি, অন্যদিকে পরিচালক মুখ খুলতে চাননি। এই অব্যবস্থায় ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস জানিয়েছিলেন, তিনি শুটিং বন্ধ হওয়ার কথা জানেন না। তবে শুটিংয়ের কিছু পাওনা বাকি, য়ার কথা প্রযোজক সংস্থাকে জানানো হয়েছে।
এই সিরিজের কাজ আবার কবে শুরু হবে বা ভবিষ্যত কী? সেই দিকেই নজর ছিল সকলের। এবার ‘লহু’ সিরিজের প্রযোজক অরিন্দম দে (পরিচালক হিসেবে পরিচিত টলিপাড়ায়) জানিয়েছেন, এই সিরিজের কাজ বন্ধ রেখেছেন তিনি নিজে। কারণ ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছেন তিনি TV9 বাংলার সঙ্গে। পরিচালকের কথায়, “টাকার পেমেন্টের জন্য শুটিংয়ের কাজ বন্ধ তেমন নয়, তবে ফেডারেশনের সঙ্গে কিছু মিস কমিউনিকেশনের জন্য ‘লহু’ সিরিজের কাজ আপাতত স্থগিত। তবে খুব শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে। আশা করছি আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই আবার শুটিংয়ের কাজ শুরু হবে।”
এই ভুল বোঝাবুঝির বিষয়ে একটু বিস্তারিত জানতে চাইলে প্রযোজক অরিন্দম দে জানিয়েছেন, আসলে এই সিরিজটি দেখানো হবে বাংলাদেশের ‘চরকি’ নামক ওয়েব মাধ্যমের কলকাতা এডিশনে। সেই কারণেই শুটিংয়ের কাজ শুরুর ঠিক চিরদিনের মাথায় জানতে পারি এই প্রযোজনার জন্য দ্বিগুণ অর্থ দিতে হবে। অরিন্দম বলেছেন, “তবে এই প্রযোজনা তো শুধুই এপার বাংলায় দেখানো হবে, তাই অর্থ শুধুই এখান থেকেই আসবে। এবং এই অব্যবস্থায় সিরিজের কাজ স্থগিত করে টাকা মেটাচ্ছি। আর ফেডারেশনের সঙ্গে ‘চরকি’ সংস্থার সঙ্গে পারিশ্রমিক নিয়ে নানা বিষয় স্থির হলেই আমি সেই অর্থ দিয়ে কাজ সম্পূর্ণ করব।”
তিনি আরও বলেন, “স্বরূপবাবু ঠিকই বলেছেন, টাকা দেওয়া হয়েছে এবং আরও কিছু টাকা বাকি আছে। সেটা শীঘ্রই দেওয়া হচ্ছে। শুধু এই ওটিটি মাধ্যম ও ফেডারেশনের যাবতীয় নিয়ম ঠিক হওয়ার অপেক্ষা করছি। আসলে একজন প্রযোজক হিসেবে নির্দিষ্ট বাজেট নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল। এবার বাজেট বাড়লে সেটারও ব্যবস্থা করতে হয়। তবে ‘চরকি’ ও ফেডারেশনের নির্ধারিত নিয়ম মেনেই কাজ করতে চাই। আশা করছি, সব ভুল বোঝাবুঝির সমাধান শীঘ্রই হবে আর নতুন বছরের প্রথম মাস অর্থাৎ জানুয়ারির ১৫ তারিখ থেকে আবার কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
বাংলাদেশের ওয়েব মাধ্যম ‘চরকি’ কিছুদিন আগেই কলকাতায় লঞ্চ হয়। কলকাতা ও বাংলাদেশ মিলিয়ে বেশ কিছু সিরিজ ঘোষণা করা হয়, আবার বেশ কিছু প্রযোজনা এপার বাংলার উদ্যোগে হওয়ার কথা। ওটিটি কনটেন্টে যেমন সেন্সর নেই, তেমনই শুটিংয়ের কাজের নিয়ম নিয়েও রয়েছে নানা ধোঁয়াশা। এক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক স্তরের ওয়েব মাধ্যম শুধুমাত্র এপার বাংলার দর্শকদের জন্য দেখানো হলে তার আয়-ব্যয় নিয়েও বিভিন্ন ধরনের নিত্যনতুন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তবে ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক যে কোনও প্রযোজনার ক্ষেত্রে কলাকুশলীদের পারিশ্রমিক দ্বিগুণ হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রযোজকের মতে, “এই সিরিজের প্রযোজনা এপার বাংলার, দেখানোও হবে এপার বাংলার দর্শকদের জন্য।” আশা করা যায়, প্রযোজক সংস্থা ও ফেডারেশনের তালমিল ঠিক হয়ে সুন্দর ভাবে নতুন-নতুন সিরিজের কাজ সম্পন্ন হবে।