‘আমি যে যন্ত্রণা দিয়ে গিয়েছি…’, কাদের কাছে বিশ্বস্ত ঠিকানা রিয়া?

রিয়ার জীবনে হলুমান চল্লিসা বড় ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, “আমি ২০২০ সাল থেকে হনুমান চালিসা পড়া শুরু করি, আর এখন দিনে এক বা দুইবার অন্তত সাতবার করে একটানা পাঠ করি। এটা আমার জন্য ধ্যানের মতো কাজ করে।” রিয়া আরও বলেন...

আমি যে যন্ত্রণা দিয়ে গিয়েছি..., কাদের কাছে বিশ্বস্ত ঠিকানা রিয়া?

| Edited By: জয়িতা চন্দ্র

Nov 10, 2025 | 2:46 PM

অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী গত পাঁচ বছরে যে কঠিন পরিস্থিতি দিয়ে গিয়েছেন, তা এক কথায় বলতে গেলে দুর্বিষহ। ২০২০ সালে অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের আকষ্মিক মৃত্যুর পর রিয়া একাধিক মামলায় জড়িয়ে পড়েন। একদিকে মানসিক যন্ত্রণা, অন্যদিকে আইনের কোপ। জেল হেফাজত থেকে শুরু করে সমাজে বয়কটের ডাকের মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। তবে সম্প্রতি সিবিআই তাঁকে উক্ত মামলায় ক্লিন চিট দিয়েছে, যদিও সুশান্তের পরিবার সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। এই পুরো ঘটনা রিয়ার মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলে— তিনি পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD)-এ ভুগছিলেন।

রিয়া জানিয়েছেন, এই কঠিন অভিজ্ঞতাই অনেক মানুষকে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হতে সাহায্য করেছে। তাঁর কথায়, “আমি যে দিন কাটিয়েছি, তা এতটাই প্রকাশ্য ছিল যে অনেকেই আমার কাছে এসে নিজেদের মানসিক সমস্যার কথা বলতে স্বস্তিবোধ করেন। তাঁরা মনে করেন, আমি বুঝতে পারি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক কতটা প্রভাব ফেলতে পারে। আমার কয়েকজন পুরনো বন্ধু, যাঁরা আমাকে দশ বছর ধরে চেনে, তাঁরাও তখন এসে নিজেদের পারিবারিক বা সম্পর্কজনিত সমস্যার কথা জানাতে থাকে। এত ভয়, এত লজ্জা—এই বিষয়গুলো সমাজে এখনও গভীরভাবে রয়েছে।”

নিজের সুস্থ হয়ে ওঠার এই লড়াই প্রসঙ্গে রিয়া বলেন, “আমি প্রতিদিন সকালে ওঠার পর এবং রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মনে করাতাম, আমি কী কী কারণে কৃতজ্ঞ। অনেক দিন এমনও কেটেছে যখন কৃতজ্ঞ হওয়ার মতো কিছুই মাথায় আসেনি। কিন্তু আমি নিজেকে বলতাম —আমি হাঁটতে পারছি, আমার হাত-পা কাজ করছে, চোখে দেখতে পাচ্ছি—এগুলোর জন্য ধন্যবাদ।”

রিয়ার জীবনে হলুমান চল্লিসা বড় ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, “আমি ২০২০ সাল থেকে হনুমান চালিসা পড়া শুরু করি, আর এখন দিনে এক বা দুইবার অন্তত সাতবার করে একটানা পাঠ করি। এটা আমার জন্য ধ্যানের মতো কাজ করে।” রিয়া আরও বলেন, “বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, তাঁদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলা—এসব সত্যিই অনেকটা সাহায্য করে ফিরে আসতে। শেয়ার করা মানে বোঝাপড়ার জায়গা তৈরি করা। এই কারণেই আমি আমার পডকাস্ট শুরু করেছি—মানুষের জীবনের গল্প শুনে, তাঁদের থেকে শেখার মাধ্যমে নিজেকে আরেকটু বোঝা যায়। আমরা সবাই চায় কেউ যেন আমাদের বোঝে, আমাদের কথাগুলো শোনে। আর যদি আমরা এমন একটা কমিউনিটি পাই, যাঁরা আমাদের বুঝবে, আর আমরাও তাঁদের একই সহানুভূতি দিতে পারবো, সেটাই আমাদের মানুষ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখবে।”