Saugata Roy Controversy: ‘…ক্ষমা করুন’, সৌগত রায়ের ‘গায়ের চামড়া দিয়ে জুতো’ মন্তব্যে কী বলছেন বিশিষ্টজনেরা?
Saugata Roy: TV9 বাংলা যোগাযোগ করেছিল সমাজের বেশ কিছু গণ্যমান্য কে। তাঁদের কেউ এড়িয়ে গেলেন প্রসঙ্গ আবার কেউ বা করলেন জোরাল প্রতিবাদ।
প্রথমে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’ অনুব্রত মণ্ডল– দুই তাবড় নেতার গ্রেফতারির পর বেশ কিছুটা অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল। ছেড়ে কথা বলছে না বিরোধী শিবিরও। পাল্টা আক্রমণ শানাচ্ছে তৃণমূলও। কার্যত হুঁশিয়ারির পথে হাঁটছেন শাসকদলের একাধিক নেতামন্ত্রী। এবার কামারহাটিতে এক দলীয় কর্মসূচীতে এসে বিতর্কিত, বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
প্রকাশ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সাংসদের হুঁশিয়ারি, “যাঁরা আমাদের বেশি নিন্দা করছেন, এরপর আমি বলব, তৃণমূলের সমালোচকদের গায়ের চামড়া দিয়ে পায়ের জুতো তৈরি হবে।” সৌগত রায়ের এ হেন মন্তব্যের পর শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা সহ জনসাধারণের একটা বড় অংশ। বহু বছর আগে ‘কেষ্ট’র সেই ‘শুঁটিয়ে লাল…’-এর ছায়াও দেখতে পেয়েছেন অনেকেই। রাজ্যের বিশিষ্টজনের কীভাবে দেখছেন এই গোটা বিষয়টিকে? জানতে TV9 বাংলা যোগাযোগ করেছিল সমাজের বেশ কিছু গণ্যমান্য কে। তাঁদের কেউ এড়িয়ে গেলেন প্রসঙ্গ আবার কেউ বা করলেন জোরাল প্রতিবাদ।
কবীর সুমন
ফোন করতেই এক মিনিট সঙ্গীত চর্চা করলেন (অনুমান তিনি রেওয়াজে বসেছিলেন)। এরপর জানতে চাইলেন কী কারণে ফোন করা হয়েছে তাঁকে। সৌগত রায় নাম শোনামাত্রই থামিয়ে দিয়ে সুমন বলেন, “সঙ্গীত ও সঙ্গীত সম্পর্কিত বিষয় ছাড়া আমি কোনও মন্তব্য করব না… নমস্কার ভাই, আমায় ক্ষমা করুন”।
রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়
এই মুহূর্তে জয়পুরের জঙ্গলে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছেন তিনি। ফোন করতেই তাঁর বক্তব্য, “বৃষ্টির মধ্যে জয়পুরের জঙ্গলের সৌন্দর্য উপভোগ করছি। এখন এই নোংরামির মধ্যে আমাকে টানবেন না! জয়পুরের জঙ্গলে বসে আমি এখন সৌগত রায়কে কিছুতেই গুরুত্ব দিতে পারব না।”
দেবশঙ্কর হালদার
জানালেন, কোনও রাজনৈতিক বিষয়ে মতামত দিতে চান না। শুধু বললেন সৌগতবাবু ভোটের সময় বা পরে যখন কথা বলেন, তখনও তিনি কোনও মন্তব্য করেন না। এখনও তাঁর এই বিষযে মতামত দেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই। তাঁর কথায়, “অনেক নেতাদের মুখেই অনেক কথা শুনেছি, কিন্তু কখনও এই সব রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলিনি, বলতে চাইও না। কোনও সামাজিক বিষয় নিয়ে বললে বলতাম। নেতারা ব্যক্তিগত ভাবে কী বলছেন, তাতে আমার কিছু এসে যায় না।”
শ্রীলেখা মিত্র
“এগুলো কী ধরনের মন্তব্য! তাহলে তো বলতে হবে কতিপয় চটিচাটা ছাড়া সবার গায়ের চামড়া দিয়েই জুতো বানাতে হবে। তাপস পালও এর আগে এমন বলেছিল। এই ভাষা হচ্ছে খুনি-মস্তানদের ভাষা। মানুষ দেখুক, কাদেরকে নিয়ে এসেছে ভোটে জিতিয়ে।”
রুদ্রনীল ঘোষ
চাঁচাছোলা ভাষায় তিনি বলেন, “আমি একটুও অবাক নই, তাঁর এই বক্তব্য শুনে। অনেকদিন আগেই এঁদের দাঁত-নখ বেরিয়ে এসেছে নীচুতলার কর্মীদের থেকে। এবার বড়রা বের করছেন। রবিনা ট্যান্ডনের সঙ্গে ‘তু চিজ বড়ি’ নাচে যেভাবে তিনি কোমড় দুলিয়েছিলেন, তাতেই তিনি নিজের রুচি বুঝিয়েছিলেন। শিক্ষক হয়ে সেটা করতে পারলে, এটা বলা কোন বড় কথা! ইডি-সিআইডি এসে নেতাদের তলব করছে এটা তো ভাল নিদর্শন নয় কোনও রাজ্যের জন্যই। আর এই কাজ করতে উচ্চতর আদালত বলছে, কোনও দল, মানুষ বা কেন্দ্র সরকার নয়। আসলে এঁরা ভয় পেয়েছে। তাই শেষ মুহূর্তে কামড় বসাতে চাইছে। বুঝতে পারছে এতদিন যা যা করেছে এবার কড়ায়-গণ্ডায় বুঝিয়ে দিতে হবে।”
বাদশা মৈত্র
বাদশার সাফ জবাব, “একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ অভিপ্রেত নয়। নিজের দলের লোক যারা রাজ্যটাকে লুঠ করছে প্রতিদিন যদি চামড়া তুলতে হয়, তাদের তুলুন আগে। যাঁরা প্রতিবাদ করছেন তাঁদের চামড়া তুলে লাভ নেই। এতে প্রতিবাদ আরও বাড়বে।”
গৌতম হালদার
সৌগত রায়ের বক্তব্য শুনে প্রথমে হাসলেন। তারপর বললেন তিনি সবে জামশেদপুর থেকে ফিরেছেন শো করে, তাই বিকেলে ফোন করলে ভাল হয়।