Backaches: শুধু বয়স্ক নয়, অল্প বয়সিরাও ভুগছেন ব্যাক-পেইনে, কারণটা জানলে হাঁ হয়ে যাবেন!

Back Pain Problems: বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করে নিয়েছেন, কমবয়সিদের মধ্যে ব্যাক পেইনের সমস্যা বাড়ছে। প্রশ্ন হল কেন এমন ঘটনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

Backaches: শুধু বয়স্ক নয়, অল্প বয়সিরাও ভুগছেন ব্যাক-পেইনে, কারণটা জানলে হাঁ হয়ে যাবেন!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 18, 2022 | 7:00 PM

পিঠ ও কোমরের ব্যথার (Bachachess) সঙ্গে মূলত যোগ রয়েছে মেরুদণ্ডের হাড়ের (Spinal Bone) ক্ষয়। এই ধরনের ক্ষয় সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে দেখা যায়। তবে আজকাল সব বয়সের লোকেদের মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয়ের সমস্যায় আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। কলেজ পড়ুয়া তরুণ তরুণী (Youths) থেকে শুরু করে কমবয়সি অফিসকর্মী— প্রায় সকলেই ব্যাক পেইনের (Back Pain) সমস্যার অভিযোগ করছেন। চিকিৎসকরা বলছেন এমনিতে ব্যাক পেইন হওয়া কোনও অস্বাভাবিক বিষয় নয়। কারণ মানুষের পূর্বপুরুষরা চারপায়ে হাঁটত। তখন মেরুদণ্ড ছিল আকারে সোজা। ধীরে ধীরে মানুষ দু’পায়ে হাঁটতে শেখে। দু’পায়ে হাঁটার জন্য এবং ভারসাম্য রক্ষার জন্য তখন মেরুদণ্ডেরও খানিকটা পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনের জন্যই প্রত্যেকটি মানুষের কোমরে ব্যথা অবশ্যম্ভাবী।

তবে বিশ্রাম নিলে সাধারণত এই ধরনের ব্যথা কমে যায়। তবে সকলের এমন হয় না। ব্যথা অনেকে ক্ষেত্রেই স্থায়ী হয় বা বারবার ফিরে আসে। চিকিৎসকরা বলছেন এই ধরনের রেকারেন্ট ব্যথা বা বারংবার কোমরে ব্যথার পিছনে দায়ী থাকতে পারে ভুল ভঙ্গিমায় কাজ করা, কর্মস্থলে দীর্ঘ সময় অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে বসে থাকা ইত্যাদি। এছাড়া দুর্ঘটনার কারণে কোমরের ডিস্ক প্রোলাপ্সের কারণেও সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।

কর্মস্থলে সমস্যা

ওয়ার্ক ফ্রম হোম কালচারে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেই কাজে বসে যান অনেকে। তারপর ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা একটানা চেয়ারে বসে কাজ করতে হয় তাদের। অবশ্য অফ লাইন বা অফিসে গিয়েও অনেকে কাজ করেন। সেখানেও কর্মীদের দীর্ঘসময় চেয়ারে বসেই কাজ করতে হয়। অনেকের নিজের দৈহিক উচ্চতার অনুপাতে চেয়ারও মেলে না। ফলে অস্বাভাবিক ভঙ্গিমাতেই ডেস্কে বসে কাজ চলিয়ে যেতে হয় দীর্ঘ সময় ধরে। এর ফলে অল্পবয়সেই আসতে পারে ব্যাক পেইনের সমস্যা। বিশেষ করে আইটি সেক্টরের কর্মীদের মধ্যে এই ধরনের শারীরিক সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, অল্পবয়সিদের মধ্যে এক্সারসাইজের অভাবও ব্যাক পেইনের পিছনে অন্যতম কারণ। সারাদিনে ৯ ঘণ্টার শিফটে কাজ করে অনেকেই শরীরচর্চার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে পেশিতে এবং সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রাও কমছে।

বিশেষজ্ঞরা এও বলছেন, ল্যাপটপ নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত দেহ ভঙ্গিমায় কাজ বেশিরভাগ লোকেই করেন না। বাড়িতে কাজ করলে অনেকেই শুয়ে শুয়ে কাজ করেন। কেউ আবার বিছানায় ল্যাপটপ রেখে বসে বসে কাজ করেন। দু’টি ভঙ্গিমাই ত্রুটিপূর্ণ। ল্যাপটপে সম্পূর্ণ ভুল শারীরিক ভঙ্গীতে কাজ করার ফলে পিঠে ব্যথা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ল্যাপটপ হোক বা কম্পিউটার— সবসময় টেবিল চেয়ারে বসেই কাজ করুন।

অবশ্য টেবিল-চেয়ারে বসে কাজ করারও নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এক্ষেত্রে পা থাকবে মাটি স্পর্শ করে। পা মেঝে না ছুঁয়ে থাকলে পায়ের তলায় অবশ্যই ছোট টুল রাখতে হবে। চেয়ারে হাতল থাকা দরকার যাতে কনুই একটা সহায়তা পায়। কবজি বা রিস্ট রাখার জায়গাও থাকা দরকার। এছাড়া ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের মনিটর থাকতে হবে চোখের সোজাসুজি। এই উপায়ে কাজ না করলে ব্যাক পেইন হবেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চেয়ার টেবিলে কাজ করার সময় আরগোনমিক চেয়ার ব্যবহার করা উচিত।

তবে শুধু কম্পিউটার বা ল্যাপটপ নয়, অন্যান্য ধরনের কিছু কাজ রয়েছে যা করার সময়েও আমরা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বসি না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বই পড়া বা টিভি দেখার সময় আমরা অনেকেই সোফায় বা বিছানায় গা এলিয়ে দিই। দীর্ঘসময় ঘাড় উঁচু বা নিচু করে থাকি। এই ধরনের শারীরিক ভঙ্গিমাও ব্যাক পেইনের কারণ হতে পারে। এই ধরনের সমস্যা থেকে বাঁচতে তাই টেবিল চেয়ারে বসেই বই পড়ুন। আর টিভি দেখার সময় খেয়াল রাখুন যাতে টিভির স্ক্রিন চোখের সোজাসুজি থাকে।

চেয়ারে-টেবিলে বসে কাজ করার সময় ঘণ্টা খানেক অন্তর চেয়ার ছেড়ে উঠে বসুন। ডাইনে-বায়ে শরীরটাকে বেঁকিয়ে নিন। একটু হেঁটে আসুন। মোট কথা শরীরের পেশিগুলিকে একটু সচল করুন। এর ফলে দেহে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। ব্যথার আশঙ্কাও কমবে। অনেকে আবার শীতকালে শরীরে ব্যথা বাড়ার কথা বলেন। এই ধরনের ব্যক্তিরা আদা চা খেতে পারেন। ব্যথা কমবে। এছাড়া দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়েও খেতে পারেন শোওয়ার আগে। ব্যথা থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাবেন। দেহের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাও বাড়বে।