Filtered water vs Boiled water: ফিল্টার ওয়াটার নাকি ফোটানো জল? কোনটি বেশি নিরাপদ?

Monsoon Seasoon: চিকিৎসকরা অবশ্য বলেন, জন্ডিস, টাইফয়েড, ডায়ারিয়ার মতো জলবাহিত অসুখ এড়াতে চাইলে ফুটিয়ে জল পানই বেশি নিরাপদ। তা বলে কি ফিল্টারের প্রয়োজনীয়তা নেই?

Filtered water vs Boiled water: ফিল্টার ওয়াটার নাকি ফোটানো জল? কোনটি বেশি নিরাপদ?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 07, 2022 | 8:56 AM

জল (Water) ছাড়া বাঁচার কল্পনাও করতে পারে না মানুষ। এই কারণেই বলা হয় জলের অপর নাম জীবন (Water is Life)। সমস্যা হল জনবিস্ফোরণ, পরিবেশ দূষণ এবং মাটির তলার জলের অপচয়ের কারণে পরিষ্কার পানীয় জল (Drinking Water) পাওয়া দিনকেদিন দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। তাই কিছু ব্যক্তি প্রভূত অর্থ খরচ করে বাড়িতে বসাচ্ছেন ওয়াটার ফিল্টার (Water Filter)। আবার কিছু লোক ট্যাপের জল ধরে রেখে ফুটিয়ে পান করছেন। প্রশ্ন হল, জল পরিশুদ্ধ করার ক্ষেত্রে কোন উপায়টি সবচাইতে বেশি নিরাপদ? ফিল্টার নাকি জল ফোটানো? চিকিৎসকরা অবশ্য বলেন, জন্ডিস, টাইফয়েড, ডায়ারিয়ার মতো জলবাহিত অসুখ এড়াতে চাইলে ফুটিয়ে জল পানই বেশি নিরাপদ। তা বলে কি ফিল্টারের প্রয়োজনীয়তা নেই?

ট্যাপ ওয়াটার ভালো?

ট্যাপের জলের বিশুদ্ধতা নিয়ে সন্দেহের কিন্তু অবকাশ রয়েছে। জল শোধনাগার থেকে যে জল আসে তা সাধারণ ভাবে জীবাণুমুক্ত হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কারণ জীবাণুমুক্ত করার জন্য জলে মেশানো হয় ক্লোরিন এবং ফ্লুরাইড। এর ফলে জলে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়। এই পর্যন্ত ঠিক আছে। তবে যে নলের মাধ্যমে জল শোধনাগার থেকে ট্যাপের মুখ পর্যন্ত পরিবাহিত হয়, সেই নল কতখানি জীবাণুমুক্ত তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বইকি। তাছাড়া যে জলাধারে জল শুদ্ধ করে রাখা হয়, সেই জলাধারের শুদ্ধতা নিয়েও খানিক প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে জলবাহিত অসুখ সম্পর্কে দেশের সরকার অবহিত। তাই যথেষ্ট সাবধনতা অবলম্বন করা হয়।

জল ফোটানো কেন জরুরি?

নিরাপদ জল পাওয়ার জন্য সমগ্র পৃথিবীতেই দূষিত জল ফুটিয়ে পান করা অন্যতম প্রাচীন পন্থা। জল ফোটানোর পিছনে মূল লক্ষ্য হল জীবাণুকে ধ্বংস করা। তবে জল ফোটালেই যে তা পুরোপুরি নিরাপদ হবে এমন ভাবাটা সম্পূর্ণ ঠিক নয়।

২০ মিনিট ধরে জল ফোটালে ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীর মতো ক্ষুদ্র জীবাণু মারা যায় ঠিকই, তবে জলে থাকা নানা ক্ষতিকর ধাতু, রায়াসনিক পদার্থ নষ্ট হয় না। উদাহরণ হিসেবে লেড, আর্সেনিক, ম্যাগনেশিয়াম, নাইট্রেটের কথা বলা যায়।

তবে কি ফিল্টারের জলই পান করা উচিত?

ফোটানো জলের সঙ্গে তুলনা করলে বলা যায় ফিল্টারের জল বেশি নিরাপদ। কারণ ওয়াটার পিউরিফায়ারগুলি বিভিন্ন রোগ জীবাণু, রাসায়নিক, ধাতুকে জল থেকে আলাদা করে দিতে পারে। বিশেষ করে রিভার্স অসমোসিস পদ্ধতি যুক্ত ফিল্টার থেরে আলট্রা ভায়োলেট রে প্রযুক্তি সম্পন্ন পিউরিফায়ার এই কাজটি সাচারুভাবে করে। এছাড়া বোতলের জলের প্রতি নির্ভরশীলতাও কমায় ফিল্টার।

বিশুদ্ধ জল পানের লাভ

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অটুট রাখতে বিশুদ্ধ জলপানের কোনও বিকল্প নেই। এছাড়া জল বিকাপক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে। ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্যও জল অত্যন্ত জরুরি। ফলে বিশুদ্ধ জল পান না করলে বারবার পেটের নানা গণ্ডগোলে ভুগতে হবে ও তার ফলে শরীর হয়ে পড়বে কৃশ। ত্বক হারিয়ে ফেলবে তার ঔজ্জ্বল্য।

দূষিত জলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

নানা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জল সঠিকভাবে পরিশুদ্ধ না হলে তার মধ্যে অসংখ্য জীবাণু থাকার আশঙ্কা থেকে যায়। উদাহরণ হিসেবে জিয়ার্ডিয়া ল্যাম্বলিয়া, ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়ার মতো পরজীবী এবং ভিব্রিও কলেরির মতো ব্যাকটেরিয়ার কথা বলা যায়। এই ধরনের জীবাণুগুলি স্বাস্থ্যের ভয়ঙ্কর হানি ঘটায়। দেখা দেয় নানা অসুখ। উদাহরণ হিসেবে ডায়ারিয়া, সেপসিস, কলেরার কথা বলা যায়।

জল শুদ্ধ করার অন্যান্য প্রক্রিয়া

জল ফোটানো এবং ফিল্টার ব্যবহারের সঙ্গে জল জীবাণুমুক্ত করার আরও কিছু উপায় আছে। উদাহরণ হিসেবে পাতন প্রক্রিয়া এবং ক্লোরিন মেশানোর কথা বলা যায়।

জল খুব নোংরা হলে জল ফুটিয়ে তার বাষ্প ধরে রেখে পান করা যায়। অন্যদিকে দূষিত জল ফুটিয়ে ছেঁকে তার মধ্যে ক্লোরিন ট্যাবলেট কিংবা তরল ক্লোরিন দিয়ে জল জীবাণুমুক্ত করা যেতে পারে। বিশেষ করে প্রান্তিক এলাকায় এই উপায়ে জল পান করা যেতে পারে। তবে বেশিদিন এই পদ্ধতিতে জল পান করা উচিত নয়। কারণ থাইরয়েডের সমস্যায় ভোগা রোগীর দেহে এই পদ্ধতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।