প্রয়োজনের বেশি ঘুমোন? হতে পারে বন্ধ্যাত্ব, মৃত্যুও
নিয়মিত ৯/১০ ঘণ্টারও বেশি ঘুমোন? তা সত্ত্বেও ক্লান্তি ভাব কাটছে না?
TV9 বাংলা ডিজিটাল: নিয়মিত ৯/১০ ঘণ্টারও বেশি ঘুমোন? তা সত্ত্বেও ক্লান্তি ভাব কাটছে না? আপনি ওভারস্লিপিং সিনড্রোমে আক্রান্ত। এখনই সাবধান হন, না হলে হতে পারে মৃত্যুও। (Side Effects of Oversleeping)
কেন হয়?
⦁ চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, হাইপারসমনিয়ার রোগের কারণে আপনার মধ্যে দেখা দিতে পারে এই সিনড্রোম। হাইপারসমনিয়া আদপে এক ধরনের মেডিক্যাল ডিজঅর্ডার। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি দুশ্চিন্তা, কাজ করার অনীহা এবং স্মৃতিভ্রম-সহ একাধিক রোগের শিকার হতে পারেন। ⦁ অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণেও হতে পারে ওভার স্লিপিং। এই রোগে ব্যক্তির ঘুমের মধ্যেই সাময়িক ভাবে দমবন্ধ হওয়ার অনুভূতি হতে পারে। ফলে ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত হয়। ⦁ এ ছাড়াও ঘুমোতে যাওয়ার খানিক আগে ক্যাফিন যুক্ত পানীয় গ্রহণ, জোরাল আলো অথবা জোরে শব্দও ঘুম চক্রে বাধা সৃষ্টি করে ওভারস্লিপিং সিনড্রোমে আক্রান্ত করতে পারে আপনাকে। ⦁ অনেক সময় বিশেষ কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও আপনি লাগামহীন ঘুমের শিকার হতে পারেন।
কী কী ক্ষতি হতে পারে?
⦁ ওবেসিটি
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে কোনও ব্যক্তি যদি নিয়মিত ১০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ঘুমোনোর অভ্যাস করেন তবে যে ব্যক্তি দিনে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমোন তাঁর থেকে ২১ শতাংশ বেশি ওবেসিটিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওই প্রথম ব্যক্তির।
⦁ অবসাদ
কম ঘুম যেমন অবসাদের কারণ একই সঙ্গে বেশি ঘুমও কিন্তু অবসাদ ডেকে আনতে পারে আপনার জীবনে। গবেষণা বলছে, অবসাদে আক্রান্ত ১৫ শতাংশ মানুষ কিন্তু ওভারস্লিপিং করে থাকেন। এর ফলে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যর আরও অবনতি হতে পারে।
⦁ মাথা ধরা এবং ক্লান্তি ভাব
কোনও দিন ১২ ঘণ্টা ঘুমিয়ে মাথা ধরা নিয়ে উঠেছেন? এমনটাই স্বাভাবিক। যদি আপনি চা-কফিতে অভ্যস্ত হন তবে রোজকারের নির্ধারিত সময়ে আপনার শরীর ক্যাফিন না পাওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনি যদি ক্যাফিন গ্রহণকারী না হন তবে দীর্ঘ সময় জল না খাওয়ার জন্য শরীরে ডিহাইড্রেট হওয়ার ফলেও মাথা ব্যথা এবং ক্লান্তি ভাবে হতে পারে। ঘুম থেকে উঠেও ঘুম পেতে পারে আপনার।
⦁ ব্যথা বৃদ্ধি একটা সময় ছিল, যখন ডাক্তাররা রোগ নিরাময়ের জন্য সম্পূর্ণ বেড রেস্টের সুপারিশ করতেন। তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞানেও এসেছে নানা পরিবর্তন। এখন ডাক্তাররা মনে করেন, সুস্থ শরীরের জন্য বডি মুভমেন্ট জরুরি। নচেৎ রক্ত চলাচলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি একই ভাবে দীর্ঘ সময় ধরে শুয়ে থাকার কারণে আপনার শরীরেও ব্যথা হতে পারে, বাড়তে পারে পুরনো ব্যথাও।
⦁ বন্ধ্যাত্ব
কম ঘুম অথবা বেশি ঘুম হরমোনের মাত্রাকে প্রভাবিত করে। ব্যহত হয় শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ যা কারণ হতে পারে বন্ধ্যাত্বের।
⦁ মৃত্যু
অবাক হবেন না। দিনের পর দিন মাত্রাছাড়া ঘুম মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, যে ব্যক্তি দিনে ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমোন তাঁর মৃত্যুর সম্ভাবনা দিনে সাত/আট ঘণ্টা ঘুমোনো এক জন ব্যক্তির থেকে বেশি। কেন? তার নিশ্চিত কারণ এখনও গবেষণার পর্যায়েই। তবে ধারণা করা হয়, অত্যধিক ঘুম ডেকে আনে মানসিক অবসাদ। শারীরিক দিক দিয়েও ব্যক্তিকে করে তোলে কমজোরি। আর সে সব কারণেই সে ক্রমশ এগিয়ে দিতে থাকে মৃত্যুর দিকে।
তবে মনে রাখতে হবে এক-আধদিন ৯/১০ ঘণ্টা ঘুম কিন্তু ওভারস্লিপিং সিনড্রোম নয়। তা যদি রোজকারের অভ্যেসে পরিণত হয়, তবেই বিপদ।