Eggs in Summer: সুগার-হার্ট-কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রোজ কটা করে ডিম খাবেন? গরমে কেমন ডিম উপযুক্ত?

Benefits of Egg: ডিমকে ঘিরে একাধিক মিথ রয়েছে যেমন গ্রীষ্মে একেবারেই ডিম খাওয়া উচিত নয়, কারণ খাদ্যটি শরীর গরম করে! ফলে শরীরে পড়তে পারে বিরূপ প্রভাব। যে কোনও সময় পেট খারাপ হতে পারে ডিম থেকে ইত্যাদি।

Eggs in Summer: সুগার-হার্ট-কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রোজ কটা করে ডিম খাবেন? গরমে কেমন ডিম উপযুক্ত?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 10, 2022 | 9:34 PM

উচ্চমানের প্রোটিন এবং অপরিহার্য পুষ্টি উপাদানের উৎস হল ডিম (Egg)। কিন্তু এই গ্রীষ্মে ডিম (Egg in Summer) খাওয়া কি আদৌ উচিত হবে? কোলেস্টেরল (Cholesterol) কিংবা হার্টের অসুখের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলবে না তো ডিম? কীভাবে ডিম খাওয়া উচিত? কটা ডিমই বা খাবেন? কী বলছেন নিউট্রিশনিস্টরা? বাচ্চা হোক কিংবা বুড়ো, ব্রেকফাস্টে ডিম থাকলে আর বোঝহয় কিছু খাওয়ার দরকার পড়ে না! তাছাড়া পুষ্টিবিদরা বরাবার বলে আসছেন, প্রাতঃরাশ (Breakfast) সবসময় ভারী আর সুষম হওয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ ব্রেকফাস্টে থাকতে হবে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট আর ভিটামিন। ডিম কিন্তু প্রোটিন, ফ্যাট আর ভিটামিনের অনেকখানি চাহিদা পূরণে সক্ষম। এছাড়া ডিমে রয়েছে শরীরের পক্ষে উপকারী একাধিক খনিজ।

নিউট্রিশনিস্টরা বলছেন, সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্রেকফাস্ট অত্যন্ত জরুরি ভূমিকা পালন করে। সকালের খাবারে একাধিক ভিটামিন ও খনিজ উপস্থিত থাকলে তা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাছাড়া একটু পেট ভরে ব্রেকফাস্ট করলে তা দীর্ঘসময় অন্য খাবার খাওয়া থেকে আমাদের বিরত রাখে। ফলে শরীরেও বাড়তি ক্যালোরির প্রবেশ ঘটে না।

এদিকে সাধারণ মানুষের মনে ধারণা রয়েছে, ডিমে প্রচুর ক্যালোরি থাকে। এছাড়া উচ্চমাত্রায় থাকে কোলেস্টেরল। তাই হার্ট, কোলেস্টেরল কিংবা সুগার রোগীর জন্য ডিম উপকারী কি না তা নিয়ে সংশয়ে ভোগেন অনেকেই। ডায়েটিশিয়ান এবং পুষ্টিবিদরা কিন্তু ডিম খাওয়ার বিষয়টিকে যুক্তি দিয়ে বিচার করার কথা বলছেন। কী সেই যুক্তি? দেখা যাক—

এনার্জির স্টোরহাউজ

হাই কোয়ালিটি প্রোটিন, বি ভিটামিন যেমন ভিটামিন বি২ (রাইবোফ্ল্যাভিন), ভিটামিন বি১২, ফোলেট, বায়োটিন, ভিটামিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড সহ কোলিন থাকে ডিমে। আছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী ও হাড়ের জন্য উপকারী ভিটামিন ডি। উপস্থিত আছে চোখের জন্য দারুণ ভালো ভিটামিন এ। এছাড়া রয়েছে সেলেনিয়াম, আয়োডিন, ফসফরাসের মতো ট্রেস এলিমেন্ট ও খনিজ!

ডিম ও মিথ

ডিমকে ঘিরে একাধিক মিথ রয়েছে যেমন গ্রীষ্মে একেবারেই ডিম খাওয়া উচিত নয়, কারণ খাদ্যটি শরীর গরম করে! ফলে শরীরে পড়তে পারে বিরূপ প্রভাব। যে কোনও সময় পেট খারাপ হতে পারে ডিম থেকে ইত্যাদি। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ডিম হল ‘সুপারফুড’। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের খাদ্যতালিকার অন্যতম অংশ হল ডিম। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, পুষ্টির দিকে থেকে ভাবতে হলে মরশুমি ফল ছাড়া কোনও খাদ্যকেই এভাবে নির্দিষ্ট ঋতুর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া উচিত নয়।

কেন হ্যাঁ বলবেন ডিমে?

• গ্রীষ্মের সঙ্গে লড়তে হলে শরীরে একাধিক খনিজ উপাদানের জোগান বজায় থাকা জরুরি। ডিমে একাধিক খনিজ থাকে। ফলে গ্রীষ্মের সঙ্গে লড়তে হলে ডিম খাওয়াই যায়।

• ইলেকট্রোলাইটস-এর ভারসাম্যের অভাবে গ্রীষ্মে ডিহাইড্রেশনের সম্মুখীন হন অনেকেই। অথচ ডায়েটে নিয়মিত ডিম রাখলে এই ধরনের ইলেকট্রোলাইটস-এর অভাব হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

• ডিম সবসময়ই আমাদের এনার্জি লেভেল হাই রাখে। ফলে নিয়মিত ডিম খেলে ক্লান্তি এবং দুর্বলতায় ভুগতে হয় না।

• ডিমে আছে উচ্চমাত্রায় লাইপোপ্রোটিন যা রক্তে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। ভালো কোলেস্টেরল হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের হার্টের অসুখ হওয়াও প্রতিরোধ করে।

• ডিমে আছে পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন এ যা চোখের স্বাস্থ্যের পক্ষেও অত্যন্ত উপযোগী।

•ডিমের কুসুম খাওয়া নিয়েও অনেকে দ্বন্দ্বে ভোগেন। অথচ কুসুমে থাকে লুটিন এবং জিয়াজ্যান্থিন যা শরীরের পক্ষে অতীব উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বহন করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি।

• ডিমে রয়েছে দেহ গঠনের জন্য উপযোগী অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি যা পেশির গঠনে সাহায্য করে। আমাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়া ডিমের প্রোটিন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।

• ডিমে থাকে ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি যা হাড় মজবুত রাখে।

– লম্বাসময়ের জন্য কাজে নামার আগে বা অফিসের কাজে বেরনোর আগে ডিম খেলে দীর্ঘসময় পেট ভরা থাকে। এনার্জির মাত্রাও থাকে তুঙ্গে। লম্বা সফরে বেরনোর আগেও ডিম খেলে তাই চট করে খিদে পায় না। ক্লান্তিও গ্রাস করে না।

কেমন ডিমে খাবেন?

ডিম আমরা নানাভাবে খাই। ওমলেট, পোচ করে কিংবা সেদ্ধ করে। তবে ডিমের পূর্ণ পুষ্টি পেতে চাইলে সবসময় সেদ্ধ করেই ডিম খাওয়া উচিত।

গ্রীষ্মে রোজ কটা করে ডিম?

হজমের গণ্ডগোল, স্থূলত্বের সমস্যা বা কিডনির অসুখ না থাকলে দু’টো করে সেদ্ধ ডিম খাওয়া যায় রোজ। এছাড়া খুব বেশি কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে শুধু দু’টি ডিমের সাদা অংশ খেতেই পারেন। সেক্ষেত্রে সপ্তাহে দু’দিন একটি করে ডিমের কুসুম খান। কারণ কুসুমে থাকে ভিটামিন ডি ও ভালো কোলেস্টেরল। তবে অবশ্যই একবার ডায়েটিশিয়ান বা নিউট্রিশনিস্ট-এর পরামর্শ নেওয়া উচিত।