
ইদানিং দেখা যাচ্ছে, ব্লাড সুগারের সমস্য়া যে কোনও বয়সের মানুষদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, মূলত অনিয়ন্ত্রিত লাইফস্টাইল, বিশেষ করে অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়ার জন্য়ই এমন সমস্য়ায় ভুগছেন বেশিরভাগ মানুষরা। তবে যদি প্রথম থেকেই একটু সচেতন হওয়া যায়, তাহলে ওষুধ না খেয়েই সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কী করবেন? চিকিৎসরকরা দিলেন তারই হদিশ।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনই মূল চাবিকাঠি বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাবার ও পর্যাপ্ত ঘুম—এই তিনটি অভ্যাসই ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
ডাক্তারদের মতে, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রথমেই নজর দিতে হবে খাদ্যতালিকায়। নন-স্টার্চি শাকসবজি যেমন—লেটুস, পালং শাক, বেল পেপার ও টমেটো বেশি করে খেতে হবে। এগুলো ফাইবারে ভরপুর ও ক্যালরিতে কম। অন্যদিকে, চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন সফট ড্রিংকস, সাদা পাউরুটি, পাস্তা ও পেস্ট্রি যতটা সম্ভব পরিহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব খাবার দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়।
লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) সমৃদ্ধ খাবার—যেমন আপেল ও চিনাবাদাম—রক্তে শর্করা ধীরে ছাড়ে, ফলে তা স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে। মাছ, বাদাম, অলিভ অয়েলের মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারও রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে কার্যকর।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত খাবার খাওয়া অপরিহার্য। খাবার বাদ দিলে রক্তে শর্করার ওঠানামা বেড়ে যেতে পারে।
এছাড়া, পর্যাপ্ত জল পান করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে জলের ঘাটতি হলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়, তাই বিশেষজ্ঞরা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান করার পরামর্শ দেন।
নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের পেশিকে গ্লুকোজ ব্যবহার করতে সাহায্য করে, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে। সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম যেমন—দ্রুত হাঁটা, সাঁতার বা সাইক্লিং করার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
একই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি। ঘুমের অভাব ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে, যা রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করে।
সুস্থ ওজন বজায় রাখা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি, নিয়মিত রক্তে শর্করা পরীক্ষা করা জরুরি, যাতে বোঝা যায় কোন খাবার বা অভ্যাস কীভাবে প্রভাব ফেলছে।
এছাড়া, অ্যালকোহল সেবন সীমিত রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা, কারণ অতিরিক্ত অ্যালকোহল রক্তে শর্করার মাত্রা অস্থিতিশীল করতে পারে।