লিভার শরীরের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যাবতীয় শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া ঠিক রাখতে গেলে আগে লিভার ভাল রাখতে হবে। যাবতীয় ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ওষুধ যাবতীয় সব কিছু হজম হয় এই লিভারের মাধ্যমেই। এবার লিভারে ফ্যাট জমলে সেই প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়ে। লিভারের ফাংশন ঠিকমতো হয় না। এই সমস্যাই ফ্যাটি লিভার হিসেবে পরিচিত। আজকাল ফ্যাটি লিভার লাইফস্টাইল ডিজিজ। প্রচুর মানুষ ভুগছেন এই সমস্যায়। যার জন্য দায়ী হল আমাদের রোজকারের জীবনযাত্রা। ফ্যাটি লিভার দু রকমের হয়ে থাকে। অ্যালকোহলিক এবং নন অ্যালকোহলিক। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, সুস্থ লিভারে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফ্যাট থাকে। যদি সেই ফ্যাট লিভারের প্রয়োজনীয় ওজনের তুলনায় ৫-১০% বেশি হয় তখন তাকে ফ্যাটি লিভার বলা হয়। এরপর যদি লিভারের প্রদাহ, ফাইব্রোসিস বাড়তে থাকে সেখান থেকে লিভার অফ সিরোসিস হতে পারে।
অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (ARLD) হল এমন একটি রোগ, যা অত্যধিক অ্যালকোহল সেবনের কারণে হয়। আর নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সমস্যা ( NAFLD) আসে রোজকার জীবনযাপন থেকে। অতিরিক্ত পরিমাণ তেল-মশলাদার খাবার, মিষ্টি, ভাজাভুজি খাওয়া, কোনও রকম শরীরচর্চা না করা এসব থেকেই আসে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। দিনের পর দিন বাড়ছে এই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যা। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হলে শরীরে একটা অস্বস্তি লেগেই থাকে। হজম করতে সমস্যা হয়, খেতে অসুবিধে হয়। সকালের দিকে বমি ভাব থাকে। এছাড়াও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রাতে হাত আর পায়ের তলায় চুলকুনি, পেট ফুলে যাওয়া, ত্বকের নীচে থাকা রক্তনালী বড় হয়ে গেলেএবং লিভার বড় হওয়া হল ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ।
কেন লিভারের সমস্যায় বেশি চুলকোয়?
কেন লিভারের সমস্যা হলে বেশি চুলকোয় এর সঠিক কারণ চিকিৎসকদের হাতেও নেই। যদি পিত্ত লবণের পরিমাণ বেশি হয়ে যায় সেখান থেকেও হতে পারে এই সমস্যা। এছাড়াও লিভারের মধ্যে সিরাম অ্যালকালাইন ফসফেটেস থাকে, এটি মূলত রক্তে থাকা একরকম এনজাইম। যা শরীরের প্রোটিন ভেঙে ফেলে।
কাদের ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বেশি?
হাই কোলেস্টেরল, হাই ট্রাইগ্লিসারাইড, ওবেসিটি, পিসিওএস, হাইপোথাইরয়েডিজম, মেটাবলিক সমস্যা, স্লিপ অ্যাপনিয়া, টাইপ ২ ডায়াবেটিস থাকলে এই সমস্যা বেশি হয়। প্রাপ্তবয়সকদের মধ্যে এর ঝুঁকি বেশি।
ফ্যাটি লিভার এড়াতে যা কিছু এড়িয়ে চলবেন-
ওজন বজায় রাখতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা, অ্যালকোহল একেবারেই না খাওয়া দরকার।
ধূমপান একদম বন্ধ।
স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। শাক-সবজি, ফল এসব বেশি করে খান।
প্রক্রিয়াজাত খাবার আর তৈলাক্ত খাবার একদম বাদ