Justin Bieber: রামসে হান্ট সিন্ড্রোম কী? বিরল রোগে আক্রান্ত জাস্টিন বিবারের কেরিয়ারের কি ইতি?
Ramsay Hunt syndrome: ২৮ বছর বয়সী এই পপ স্টার সম্প্রতি ভিডিয়োয় নিজের অসুখের কথা প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, 'আপনারা অবশ্যই আমার মুখ দেখতে পাচ্ছেন। আমার রামসে হান্ট সিন্ড্রোম নামক এক বিরল রোগ দেখা গিয়েছে।...'
বিরল স্নায়ু রোগ (Ramsay Hunt syndrome) আক্রান্ত মার্কিন পপ স্টার জাস্টিন বিবার (Justin Bieber)। বাতিল করতে হয়েছে পর পর শো। জনপ্রিয় এই তারকা গায়কের শারীরিক অবস্থার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই মন খারাপ ভক্তদের। তাহলে কি কেরিয়ারে ইতি পড়তে চলেছে বিবারের? সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে শরীরের এই কঠিন বাস্তবের কথা জানিয়েছেন। তারপর থেকেই ভাইরাল সেই ভিডিয়ো। তিনি নিজে ওই ভিডিয়োয় জানিয়েছন, ‘মারাত্মক ভাইরাসের জেরে মুখের বাঁদিকে পুরোপুরি পক্ষাঘাতগ্রস্ত। ডানদিকের চোখের পাতা পর্যন্ত নড়ছে না। বলতে গেলে মুখের বাঁ দিকটা পুরো অবশ হয়ে গিয়েছে। আমি কেবল শারীরিকভাবে মুখের এই অংশগুলি নড়াচড়া করতে সক্ষম নই।’
২৮ বছর বয়সী এই পপ স্টার সম্প্রতি ভিডিয়োয় নিজের অসুখের কথা প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘আপনারা অবশ্যই আমার মুখ দেখতে পাচ্ছেন। আমার রামসে হান্ট সিন্ড্রোম নামক এক বিরল রোগ দেখা গিয়েছে। এক ভাইরাস থেকে আমার কানেপ স্নায়ু ও আমার মুখের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুখের একাংশের পক্ষাঘাতের কারণ। যেমন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন এই চোখটি নড়ছে না। আমার মুখের এইপাশে হাসির কোনও চিহ্ন নেই। তাই আমার মুখের ডান পাশটি সম্পূর্ণ প্যারালাইসিস হয়ে গিয়েছে।’
তিনি ভিডিয়োতে এও উল্লেখ করেছেন, ‘চিকিৎসকদের কথা অনুযায়ী তাঁকে এখন পুরো রেস্ট নিতে হবে। না হলে এই রোগের থেকে তাড়াতাড়ি মুক্তি মিলবে না। আমার মুখের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট চেষ্টা করছি, আর সেটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবেও। আর সেই সময়টা হল এখনই। অবস্থা বেশ গুরুতর কিন্তু আমি আশা করি, এই অবস্থা থেকে কাটিয়ে উঠব। তাই এই সময়টা বিশ্রাম নেওয়ার সময়। এই অবস্থা কাটিয়ে আমি দ্রুত ১০০ শতাংশে ফিরে আসতে পারব। আমি যেটা করতে পারি, সেটা করতেই আমার জন্মগ্রহণ।’
View this post on Instagram
রামসে হান্ট সিন্ড্রোম কী?
১৩ বছর বয়সে নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। তাঁর সুরের ছন্দে মাতিয়ে গোটা বিশ্বে অগণিত অনুরাগী তৈরি করে ফেলেছেন মাত্র ২৮ বছর বয়সেই। জনপ্রিয় এই তারকা গায়কের বিরল অসুখ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রামসে হান্ট সিনড্রোম, হার্পিস জোস্টার ওটিকাস নামেও পরিচিত। মুখের নার্ভের জেনিকুলেট গ্যাংলিয়নের একটি ভাইরাস সংক্রমণ ঘটলে এমনটা হয়ে থাকে। যা মুখের স্নায়ুকে দারুণ প্রভাবিত করে। সাধারণত কান এ কানের পর্দায় বা তার চারপাশে ও কখনও কখনও মুখ ও জিহ্বাপ উপরের অংশে লাল র্যাশেস . ফুসকুড়ি , ফোস্কা দেখা যায।
কারণ
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রামসে হান্ট সিনড্রোম হার্পিস জোস্টার ভাইরাসের পুনরায় সক্রিয় হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। রোগীর আগে চিকেনপক্স হয়ে থাকলে এমন অবস্থার শিকার হতে পারেন। অত্যন্ত বেদানাদায়ক এক অসুখ। কারণ ফুসকুড়ি বা ফোস্কাগুলি শরীরের মধ্যে জ্বালাভাব ধরায়। এছাড়া এই সিন্ড্রোমটি মুখের পক্ষাঘাত ও আক্রান্তের কানে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে। মারাত্মক ভাইরাসটি মুখের স্নায়ুকে সংক্রমিত করে। সাধারণত মুথের পেশিগুলি প্রথমে আক্রান্ত হয়।
প্রসঙ্গত, নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতি এক লক্ষ মানুষের মধ্যে মাত্র পাঁচ থেকে ১০জন প্রতি বছর রামসে হান্ট সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হন। এটি অত্যন্ত বিরল এক রোগ, তা বলাই বাহুল্য।
অন্য়ান্য উপসর্গ
রামসে হান্ট সিনড্রোমের কিছু অন্যান্য উপসর্গও রয়েছে, সেগুলি হল, কানে ব্যথা, শ্রবণশক্তি হ্রাস, কানের ভিতর নানারকম আওয়াজ পাওয়া, মুখ ও চোখ শুকিয়ে যাওয়া, এক চোখ বন্ধ করতে অসুবিধা হওয়া, ভার্টিগো, মুখের রুচি নষ্ট হয়ে যাওয়া।
চিকিত্সা
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগ সনাক্ত করা বেশ কঠিন। অনেক চিকিত্সকই এই অসুখের মুখোমুখি হোন না। ফলে রোগীর চিকিত্সা বেশিরভাগ সময়ই ভুল হয়ে থাকে। এই রোগ নির্ণয় করতে কানের ফোস্কাগুলি থেকে তরল পদার্থ নমুনা হিসেবে পরীক্ষা করতে দেওয়া যেতে পারে। ডাক্তাররা একটি টিয়ার বা রক্তের নমুনা সংগ্রহ করতে পারেন। মুখের স্নায়ু ফুলে গেলে একটি ইমেজিং স্ক্যান যেমন এমআরআই দ্বারা প্রকাশ করা যেতে পারে। ভাইরাসটি মস্তিষ্ক বা অন্যান্য স্নায়ুতে ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তা নির্ধারণ করতে স্ক্যান করানো হল সঠিক উপায়। এছাড়া অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি এবং কর্টিকোস্টেরয়েডগুলি সাধারণত এই অবস্থার চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ওষুধগুলি শুরু করা হলে চিকিত্সায় সাড়া মেলে। লক্ষণগুলি গুরুতর হলে হাসপাতালে ভরতি করানো ছড়া উপায় থাকে না। এছাড়া, ফেসিয়াল নার্ভ প্যারালাইসিসে আক্রান্ত রোগীদের চোখ বন্ধ করতে অসুবিধা হয়, তাই চোখের ময়েশ্চারাইজেশন এবং লুব্রিকেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বমি বমি ভাব এবং মাথা ঘোরার জন্য মেডিসিন দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।