এবার তালিব সরকারের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহী’ আফগানিস্তানের দূতাবাসই

Afghanistan : নতুন তালিব সরকারকে মান্যতা দিচ্ছে না দিল্লিতে অবস্থিত আফগানিস্তান দূতাবাস।

এবার তালিব সরকারের বিরুদ্ধে 'বিদ্রোহী' আফগানিস্তানের দূতাবাসই
তালিব সরকারের বিরুদ্ধে সরব দিল্লিতে আফগানিস্তান দূতাবাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 09, 2021 | 8:06 PM

নয়াদিল্লি : নতুন সরকার গঠিত হয়েছে আফগানিস্তানে। মোল্লা হাসান আখুন্দকে প্রধানমন্ত্রী করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে তালিবান। কিন্তু আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে মানতে চাইছে না তাদের দূতাবাসই। দিল্লিতে অবস্থিত আফগানিস্তান দূতাবাসের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, নতুন সরকারকে মান্যতা দিচ্ছে না তারা। আর এই বিবৃতি জারি করা হয়েছে আফগানিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের নামেই।

তালিবানের তৈরি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে মন্ত্রিসভায় কোনও মহিলা প্রতিনিধিত্ব নেই। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলিরও কাউকে জায়গা দেওয়া হয়নি মন্ত্রিসভায়। এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছে দিল্লির আফগানিস্তান দূতাবাস। তালিবানের তৈরি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভাকে অবৈধ এবং অযৌক্তিক বলে জানিয়েছে দূতাবাস।

স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, নতুন সরকারের দূরত্ব রেখে চলতে চাইছে দিল্লিতে আফগানিস্তানের দূতাবাস। তবে তালিবানের নতুন সরকার কিংবা তাদের ভারতীয় দূতাবাসের বক্তব্য, কোনওটারই কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত দেয়নি নয়াদিল্লি।

এদিকে তালিবান সরকার গঠন হলেও যে কোনও রকম আন্তর্জাতিক সাহায্য পেতে হলে, তাদের অন্য দেশগুলির স্বীকৃতি প্রয়োজন। ভারত সহ বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলির থেকে স্বীকৃতি প্রয়োজন তালিবানের। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ‘অ্যাসিস্ট্যান্স মিশন ইন আফগানিস্তান’-এর যে মেয়াদ ছিল, তা এই মাসেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। সেই মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে কি না, তা নিয়ে এর মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিরাপত্তা পরিষদকে। আর এখন রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিত্ব করছে ভারত। কিন্তু দিল্লি এখনও পর্যন্ত তালিবান সরকারকে মান্যতা দেয়নি।

সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে তালিবানের ৩৩ জনের মন্ত্রিসভার অর্ধেকই ‘জঙ্গি’। রাষ্ট্রপুঞ্জের জঙ্গি তালিকায় নাম রয়েছে আফগানিস্তানের ১৭ জনের।

দিল্লিতে আফগানিস্তান দূতাবাসের থেকে বলা হয়েছে, “ইসলামিক রিপাবলিক অফ আফগানিস্তান নাগরিকদের স্বাধীন ইচ্ছাপ্রকাশের অধিকার দিচ্ছে না। দেশের সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।” শুধু তাই নয়, তালিবানের নতুন সরকার দেশের নাগরিকদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আসেনি বলেও লেখা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

এদিকে ১৫ অগস্ট তালিবানরা কাবুল দখলের পর সুপ্রিম লিডার হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজ়াদা বক্তব্য ছিল, তালিবরা আন্তর্জাতিক আইনের মেনে চলবে। ইসলামিক আইনকে আন্তর্জাতিক আইন ও সমঝোতার পথে বাধা হতে দেবে না। তালিব নেতাদের প্রতিশ্রুতির পর গোটা বিশ্বের কূটনৈতিক মহল আশায় ছিল, আফগানিস্তানের নতুন তালিবান সরকার গঠনমূলক হবে। আফগানিস্তানের সব প্রান্তের, বিশেষ করে আফগানদের সরকারে জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু সময় আসতেই নিজেদের মুখোশ খুলতে শুরু করে দিয়েছে তালিবান।

একের পর এক ‘মধ্যযুগীয়’ নিয়ম চালু করা হচ্ছে। তালিবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের ডেপুটি প্রধান আহমাদুল্লাহ ওয়াসিক জানিয়ে দিয়েছেন, মহিলাদের খেলাধুলোর কোনও প্রয়োজন নেই। ক্রিকেট সহ অন্য যে কোনও ধরনের ক্রীড়াতেই মহিলারা অংশ নিতে পারবেন না, কারণ এগুলিতে শরীর প্রদর্শন হয়। আবার তালিবানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সরকার যে মিছিল বা প্রতিবাদ কর্মসূচিগুলির অনুমতি দেবে, একমাত্র সেগুলিই করা যাবে। কবে, কখন, কোথায় মিটিং-মিছিল হবে, তা আগে থেকে সরকারকে জানাতে হবে। একইসঙ্গে মিছিলে কী কী স্লোগান দেওয়া হবে, তাও জানাতে হবে। এমনই সব নিয়ম চালু করা হচ্ছে তালিবান রাজে।ট

আরও পড়ুন : ‘সিংহের গুহায় ঢুকেছে তালিবান, এ বার ফল ভুগবে’, পঞ্জশীর নিয়ে ফের হুংকার মাসুদ বাহিনীর