নয়া দিল্লি: গ্যাংস্টার আতিক আহমেদ হত্যা মামলায় বড় মোড়। সোমবার, খোঁজ পাওয়া গেল তাঁর এক গোপন চিঠির। সোমবার (১৭ এপ্রিল), তাঁর আইনজীবী এই গোপন চিঠিটির কথা জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, হত্যার দুই সপ্তাহ আগেই এই চিঠিটি লিখেছিলেন আতিক। তাঁর মৃত্যু হলে চিঠিটি শীর্ষ আদালতে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি। শনিবার রাতে প্রয়াগরাজে, উমেশ পাল হত্যা মামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরাফ আহমেদ তিন দুষ্কতীর গুলিতে নিহত হন। আতিক এবং তাঁর ভাইকে উমেশ পাল হত্যা মামলার শুনানির জন্য আদালতে হাজির করতে গুজরাটের সবরমতী জেল থেকে প্রয়াগরাজে আনা হয়েছিল। পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই তাঁদের পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
আতিক আহমেদের আইনজীবীর মতে, সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই তাঁকে হত্যা করা হবে বলে আশঙ্কা করছিলেন আতিক। তিনি বলেছেন, “আতিক আমায় বলেছিলেন, জেলের ভিতর কয়েকজন পুলিশ অফিসার তাঁকে হুমকি দিচ্ছে। পুলিশ কর্তারা তাঁকে হত্যর হুমকি দিচ্ছিলেন। সব কথা তিনি এই চিঠিতে লিখে গিয়েছেন। তিনি আমায় বলেছিলেন, তাঁর মৃত্যু হলে এই চিঠিটি সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়ার জন্য।” তবে, তিনি যে পুলিশি হেফাজতে হত্যার আশঙ্কা করছেন, তা আগেই জানিয়েছিলেন আতিক আহমেদ। গত ২৬ মার্চ, গুজরাটের সবরমতী জেল থেকে আতিককে দিল্লিতে আনা হয়। ওইদিন জেলের বাইরে পা রেখেই সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ‘হত্যা হত্যা’ বলে চিৎকার করতে দেখা গিয়েছিল। মামলার প্রয়োজনে তাঁকে যাতে উত্তর প্রদেশে না আনা হয়, তার জন্য সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করেছিলেন আতিক। উমেশ পালের হত্যার পরই, ভুয়ো এনকাউন্টারে তাঁকে হত্যা করা হতে পরে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
এদিকে ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, আতিক আহমেদকে হত্যার সময় অন্তত ৯টি গুলি করা হয়েছিল। গ্যাংস্টার-রাজনীতিবিদের দেহে নয়টি গুলির ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। একটি গুলি লেগেছিল তাঁর মাথায়, বাকি আটটি তাঁর বুক ও পিঠে। তাঁর ভাই আশরাফের দেহে লেগেছিল ৫টি গুলি, একটি মাথায়, বাকিগুলি তাঁর পিঠে। আতিকের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে মোট ১০০টি ফৌজদারি মামলা ছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রয়াগরাজে উমেশ পাল হত্যার পর থেকেই আতিকের নাম ঘোরাফেরা করছিল সংবাদ শিরোনামে। উমেশ পাল ছিলেন বসপার প্রাক্তন বিধায়ক রাজু পাল হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী। ২০০৫ সালে হত্যা করা হয়েছিল আতিকের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী রাজু পালকে। আতিকই ছিলেন এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত। ২০১৯ সাল থেকেই তিনি গুজরাটের সবরমতি জেলে ছিলেন। আতিক হত্যার দুদিন আগেই, গত বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের এক এনকাউন্টারে নিহত হয়েছিল আতিকের ছেলে আসাদ। উমেশ পাল হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তের তালিকায় তারও নাম ছিল।