Supreme Court: মৃত্যুর মুখে থাকা ধর্ষণ-হত্যার ৩ আসামীকে বেকসুর খালাস দিল শীর্ষ আদালত

Supreme Court acquits 3 rape-murder accused: সোমবার (৭ নভেম্বর), ২০১২ সালের ছাওলা গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তিনজন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

Supreme Court: মৃত্যুর মুখে থাকা ধর্ষণ-হত্যার ৩ আসামীকে বেকসুর খালাস দিল শীর্ষ আদালত
২০১২ সালের ছাওলা গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তিনজন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 08, 2022 | 1:40 PM

নয়া দিল্লি: সোমবার (৭ নভেম্বর), এক গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত তিনজনকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১২ সালে রাহুল, রবি এবং বিনোদ নামে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে হরিয়ানার এক ১৯ বছর বয়সী এক তরুণীর গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনা ছাওলা গণধর্ষণ কাণ্ড বলেই বেশি পরিচিত। এর আগে নিম্ন আদালত এবং দিল্লি হাইকোর্ট – দুই আদালতই এই তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল এবং মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। কিন্তু, এদিন শীর্ষ আদালত, দিল্লি হাইকোর্টের রায়কে খারিজ করে দিয়েছে।

ঠিক কী কারণে তিন অভিযুক্তকে খালাস দিল আদালত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, মামলার তদন্ত ও বিচারে ‘সুস্পষ্ট ত্রুটি’ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে শীর্ষ আদালত। এর ফলে বিচারপতিদের মনে গুরুতর সন্দেহের জন্ম নিয়েছে বলেও জানিয়েছে আদালত। এদিন এই মামলার রায় দানের সময় প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত, বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ বলেছে, “সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং নথিভুক্ত হওয়া প্রমাণাদির প্রেক্ষিতে এটা বলা কঠিন যে, বাদী পক্ষ দৃঢ় এবং সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের দোষ প্রমাণ করেছে।” ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার জন্য শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

এই ঘটনার সূত্রপাত ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। নির্যাতিতা তাঁর কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার সময় অভিযুক্ত তিনজন তাঁকে অপহরণ করেছিল বলে অভিযোগ। উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা হলেও, ওই তরুণী হরিয়ানার গুরগাঁওয়ের সাইবার সিটি এলাকায় কাজ করতেন। পুলিশের বয়ান অনুযায়ী, ওই দিন কর্মস্থল থেকে ফেরার সময়, তরুণীর বাড়ির কাছ থেকেই অভিযুক্তরা তাঁকে একটি গাড়িতে করে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।

সঠিক সময়ে তিনি বাড়ি ফিরে না আসায়, তাঁর বাবা-মা পুলিশের কাছে নিখোঁজ ব্যক্তির অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানার রেওয়ারির কাছে একাধিক ক্ষত-সহ তরুণীর পচা-গলা মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ময়নাতদন্তে জানা যায়, তাঁর উপর যারপরনাই অত্যাচার করা হয়েছিল। গাড়ির বিভিন্ন সরঞ্জাম, কাচের বোতল, ধাতব বস্তু এবং অন্যান্য জিনিস দিয়ে তাঁর উপর হামলা করা হয়েছিল। তাঁকে পালা করে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এমনকি, চোখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়েছিল।

তদন্তের পর পুলিশ, রাহুল, রবি এবং বিনোদকে গ্রেফতার করেছিল। পুলিশ দাবি করেছিল, তাদের মধ্যে একজন ওই তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। তরুণী প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সেই প্রত্যাখ্যানের প্রতিশোধ নিতেই এই অপরাধ করেছে তারা। নিম্ন আদালত তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। মামলাটিকে আদালত “বিরলের মধ্যে বিরলতম” বলেছিল। ২০১৪ সালের অগস্টে হাইকোর্টও সেই রায় বহাল রেখেছিল।

এদিন শীর্ষ আদালত অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস দেওয়ার পর, নিহত তরুণীর মা বলেছেন, “১১ বছর পরও, এই রায়। আমরা হেরে গিয়েছি, আমরা যুদ্ধে হেরে গিয়েছি। অনেক আশা নিয়ে বেঁচে ছিলাম, আমি বেঁচে থাকার ইচ্ছাই হারিয়ে ফেলেছি। আমি ভেবেছিলাম আমার মেয়ে বিচার পাবে। আর তাঁর বাবা বলেছেন, “অপরাধীদের সঙ্গে যা হওয়ার কথা ছিল, শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই তা হল। আমাদের দেশের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা গরিবদের জন্য নয়। এটা যদি কোনও ধনী প্রভাবশালী ব্যক্তি বা কোনও রাজনীতিবিদের সঙ্গে ঘটত, তাহলে কি তাদেরও আমাদের মতো পরিণতি হতো?”