CWC Meeting: ‘কোন জাদুকাঠি নেই, দরকার শুধু…’, চিন্তন শিবিরের আগে কী বার্তা দিলেন সনিয়া
Congress Working Committee: উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের আগে, সোমবার নয়াদিল্লিতে হল কংগ্রেসের ওয়ার্কং কমিটির বৈঠক। কী বার্তা দিলেন সনিয়া গান্ধী?
নয়াদিল্লি: আগামী ১৩ মে থেকে রাজস্থানের উদয়পুরে বসছে জাতীয় কংগ্রেসের তিনদিনের চিন্তন শিবির। তার আগে সোমবার নয়াদিল্লিতে হয়ে গেল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির মহা-গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, কেসি বেনুগোপাল, পি চিদম্বরম, মল্লিকার্জুন খড়গে-সহ অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতারা। ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী সনিয়া সাফ জানালেন আত্মসমালোচনা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয় এমন সমালোচনা অপ্রয়োজনীয়। তিনি আরও বলেন, দলের এই গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে সকলের সহযোগিতা, পার্টির প্রতি সম্পূর্ণ আনুগত্য প্রয়োজন। যা দলের জি২৩ নেতাদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। চিন্তন শিবিরে দলের সংবিধানেরও পরিবর্তন হবে, এমনটাই জানানো হয়েছে।
এদিন সনিয়া জানান, আসন্ন চিন্তন শিবিরকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে। চিন্তন শিবির যাতে শুধুমাত্র আচার-অনুষ্ঠানে পরিণত না হয়, সেই দিকে লক্ষ্য রাখার বার্তা দেওয়া হয়েছে দলের কার্যকরী কমিটির সদস্যদের। চিন্তন শিবির থেকেই কংগ্রেসের পুনর্গঠনের সূচনার আহ্বান জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী। দলের মতাদর্শগত অবস্থানের পাশাপাশি তিন দিনের এই শিবিরে নির্বাচন এবং সংগঠন পরিচালনার পথও গুছিয়ে নিতে চাইছে কংগ্রেস। সনিয়া গান্ধীর এই বক্তব্য মনে করা হচ্ছে, চিন্তন শিবিরেই জেলা স্তর থেকে উপর মহল পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক নির্বাচনের সূচিও নির্ধারিত হতে পারে।
সনিয়া আরও জানিয়েছেন, চিন্তন শিবিরে মূলত ছয়টি বিভাগে আলোচনা চলবে – রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ন্যায়বিচার, কৃষক, যুব এবং সাংগঠনিক। দেশের প্রতিটি কোন থেকে ৪০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন চিন্তন শিবিরে। সনিয়া জানিয়েছেন, প্রতিনিধিদের কে কোন বিভাগের আলোচনায় অংশ নেবেন, তা ইতিমধ্যেই তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ছয়টি পৃথক বিভাগের আলোচনার বিষয় প্রস্তুত করার জন্য একটি সমন্বয় প্যানেলও তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু, পরপর দুই লোকসভা এবং একের পর এক বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে কংগ্রেস? সনিয়া বলেছেন, ‘এর কোন জাদুকাঠি নেই। নিঃস্বার্থভাবে কাজ, শৃঙ্খলা বজায় রাখা, সম্মিলিত উদ্দেশ্যের প্রতি দৃঢ়তা এবং স্থিতিস্থাপকতা প্রদর্শন, সহযোগিতা, পার্টির প্রতি সম্পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন প্রয়োজন’। সনিয়া আরও বলেন, কংগ্রেস দল বর্তমানে এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এই সময় দলের প্রতি প্রত্যেকের ঋণ শোধ করতে হবে। বিরকোধ নয়, দলের মধ্যে ঐক্য চাই – এই বার্তাই দিয়েছেন সভানেত্রী। বলেন, ‘আমাদের সম্মিলিতভাবে চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করতে হবে’।
এর পাশাপাশি চিন্তন শিবিরে দলীয় সংবিধানের একটি সংশোধনী নিয়েও আলোচনা করা হবে বলে এদিনের বৈঠকে জানিয়েছেন সনিয়া। তবে সেই সংশোধন দলীয় নির্বাচন বিষয়ক নয়। এই সংশোধনী ডিজিটাল মেম্বারশিপ সংক্রান্ত বলে জানানো হয়েছে। তিনদিনের বৈঠকের পর, সিদ্ধান্তগুলি আলোচিত হবে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে। তারপর ১৫ মে বিকালে ‘উদয়পুর নব সংকল্প’গ্রহণ করা হবে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে কংগ্রেসের রক্তক্ষরণ হয়েই চলেছে। দলের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্কও। এই অবস্থায় উদয়পুর চিন্তন শিবির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আগামী দিনে কোন পথে হাঁটবে শতাব্দী-প্রাচীন দলটি, সেই দিকেই এখন চোখ রাজনৈতিক মহলের।