Bhopal: কোভিড কেড়েছে বাবা-মাকে, ক্লাস টেনে প্রথম হওয়া ছাত্রী পেল ২৯ লক্ষ টাকার বকেয়া মেটানোর নোটিস
Bhopal: কোভিড-১৯ মহামারিতে বাবা-মা দুজনেরই মৃত্যুর পরও ৯৯.৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে মধ্যপ্রদেশে দশম শ্রেনীর বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে বনিশা পাঠক। তাকে এখন বাবার নেওয়া গৃহঋণের বকেয়া মেটানোর জন্য আইনি নোটিস পাঠিয়েছে এলআইসি।
ভোপাল: কোভিড-১৯ মহামারি কেড়ে নিয়েছে তার বাবা-মা দুজনকেই। কাঁধে চেপেছে ছোট ভাইয়ের দেখভালের দায়িত্ব। তার মধ্য়েই লড়াই চালিয়ে গিয়েছে সে। দশম শ্রেনীর বোর্ড পরীক্ষায় ৯৯.৮ শতাংশ স্কোর করে, মধ্যপ্রদেশে সেরা হয়েছে বনিশা পাঠক। সেই লড়াই জিতে নিলেও, বনিশাকে এখন পড়তে হয়েছে আইনি প্যাঁচে। বাবার নেওয়া গৃহঋণের বকেয়া মেটানোর আইনি নোটিসে জেরবার অবস্থা তার। বনিশা এখনও অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে, বাবার জমানো টাকা কিছুই হাতে পায়নি সে। ফলে, ঋণের কিস্তি শোধ দেওয়ার মতো ক্ষমতা নেই তার। এই কথা জানিয়ে বেশ কয়েকবার কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলেও, এখনও কোনও জবাব পায়নি ১৭ বছরের কিশোরীটি।
বনিশার বাবা জীতেন্দ্র পাঠক ছিলেন এলআইসির একজন এজেন্ট। অফিস থেকে তিনি মোটা টাকার গৃহঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালের মে মাসে, কোভিড-১৯ মহামারির ভয়াবহ দ্বিতীয় তরঙ্গ বনিশাদের জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছিল তাঁকে। কয়েকদিনের ব্যবধানে মৃত্যু হয় বনিশার মা সীমা পাঠকেরও। তারপর থেকে মামার প্রফেসর অশোক শর্মার বাড়িতেই থাকে বনিশা এবং তার ভাই ১১ বছরের বিভান। বাবা-মায়ের মৃত্যুর তীব্র শোক এবং মানসিক যন্ত্রনা সামলে, নিজের পড়াশোনার ক্ষতি হতে দেয়নি বনিশা। বোর্ডের পরীক্ষায় প্রায় ১০০ শতাংশ নম্বর পাওয়ার পর সে একটি কবিতায় লিখেছিল,’তোমাকে ছাড়াই আমি মাথা তুলে দাঁড়াবো বাবা’। রাজ্যের সকলের মুখে মুখে ঘুরেছিল সেই পঙক্তি।
Vanisha Pathak scored 100 in her English, Sanskrit, Science and Social Science Class X CBSE exams, and 97 in Mathematics – an incredible achievement for any student, but a particularly superb one for a 16-year-old girl who lost her parents to COVID-19 in May. pic.twitter.com/9JLuHqCmJg
— Anurag Dwary (@Anurag_Dwary) August 4, 2021
তবে, গত কয়েক মাস ধরে তার মৃত বাবার নামে আইনি নোটিস পাঠিয়ে যাচ্ছে এলআইসি কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি নোটিসের বয়ানই এক, ‘বকেয়া না মেটালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। শেষ নোটিস এসেছে গত ২ ফেব্রুয়ারি, তাতে জানানো হয়েছে এই বকেয়ার পরিমাণ ২৯ লক্ষ টাকা! এরপরই এলআইসি কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে সে জানায়, সে আর তার ভাই দুজনেই অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায়, বাবার জমা টাকা বা মাসে মাসে পাওয়া কমিশনের টাকা তুলতে পারবে না তারা। তাই, তার বয়স ১৮ না হওয়া পর্যন্ত ওই বকেয়া মেটানো সম্ভব নয়। বনিশার মামাও জানিয়েছেন, অত টাকা দেওয়ার মতো সংস্থান নেই তাঁর। জীতেন্দ্র খুব বড় মাপের এজেন্ট ছিলেন। মিলিয়ন ডলার রাউন্ড টেবল নামে সুপরিচিত বীমা ক্লাবের সদস্যও ছিলেন তিনি। তাই, তাদের আবেদন এলআইসি সহজেই মেনে নেবে বলে আশা করেছিলেন বনিশা।
কিন্তু, আশ্চর্যজনকভাবে এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে এলআইসি কর্তৃপক্ষ। তবে ভোপালের এলআইসি কর্তারা জানিয়েছেন, বনিশার আবেদন ইতিমধ্যেই এলআইসির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্তারা বনিশা এবং তাঁর মামাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছে, বনিশার ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত আর কোনও নোটিস পাঠানো হবে না। তবে, এলআইসি কর্তাদের মুখের কথায় ভরসা রাখতে পারছে না বনিশারা। তাদের দাবি, যেভাবে সরকারিভাবে বকেয়া মোটানোর কথা জানিয়েছিল সংস্থা। সেই রকমভাবেই নোটিস যে আর পাঠানো হবে না, সেটাও সরকারিভাবেই জানানো হোক।