New Delhi: ইস্তফা দিলেন দিল্লির লেফট্যানেন্ট গভর্নর অনিল বৈজল, ‘ব্যক্তিগত’ না পিছনে রয়েছে অন্য কারণ

Delhi Lieutenant Governor Resigns: বুধবার (১৮ মে), দিল্লির লেফট্যানেন্ট গভর্নরের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অনিল বৈজল। তিনি নিজে 'ব্যক্তিগত কারণে' ইস্তফা বলে উল্লেখ করলেও, ঠিক কী কারণে এই ইস্তফা, তাই নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।

New Delhi: ইস্তফা দিলেন দিল্লির লেফট্যানেন্ট গভর্নর অনিল বৈজল, 'ব্যক্তিগত' না পিছনে রয়েছে অন্য কারণ
ইস্তফা দিলেন অনিল বৈজল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 18, 2022 | 7:45 PM

নয়া দিল্লি: বুধবার (১৮ মে), দিল্লির লেফট্যানেন্ট গভর্নরের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অনিল বৈজল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যক্তিগত কারণেই ইস্তফা দিলেন দিল্লির লেফট্যানেন্ট গভর্নর। ইতিমধ্যেই, তিনি তাঁর ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দের কাছে। অনিল বৈজল ছিলেন দিল্লির ২১তম লেফট্যানেন্ট গভর্নর। এই পদ থেকে নাজিব জং আচমকা ইস্তফা দেওয়ার পর, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন অনিল।

দিল্লির লেফট্যানেন্ট গভর্নরের পদের নির্দিষ্ট কোনও মেয়াদকাল নেই। অনিল বৈজল এই পদে দীর্ঘ ৫ বছর ৪ মাস ধরে ছিলেন। অর্থাৎ, ইতিমধ্যেই তাঁর নির্ধারিত মেয়াদকাল ফুরিয়ে গিয়েছিল। এই পদে বসার পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন অনিল বৈজল। সরকারি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মতপার্থক্য হয়েছে তাঁর। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে নানা বিষয়ে তার বিরোধ ছিল। এমনকি, গভর্নরের নিযুক্ত আইএএস অফিসাররা দিল্লির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না অভিযোগ করে, অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা লেফট্যানেন্ট গভর্নরের অফিসের সামনে ধর্নাতেও বসেছিলেন।

তবে, ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে, লেফটেন্যান্ট গভর্নর এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে এই ক্ষমতার দ্বন্দ্বের অবসান হয়। শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, লেফটেন্যান্ট গভর্নরের স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। আদালত জানিয়েছিল, একমাত্র জমি, পুলিশ এবং জনশৃঙ্খলার বিষয় ছাড়া আর কোনও বিষয়ে তিনি স্বাদীন সিদ্ধআন্ত নিতে পারবেন না। রাজ্য শাসনের প্রকৃত ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের কাছেই রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়, কেজরিওয়ালের পক্ষে বড় জয় বলে মনে করা হয়েছিল। তবে, তারপরও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারের বিভিন্ন পদত্রক্ষেপের বিরোধিতা করে গিয়েছেন অনিল বৈজল। অন্যদিকে, আপ নেতারাও সমানে আক্রমণ করে গিয়েছেন তাঁকে।

১৯৬৯ সালের ব্যাচের আইএএস অফিসার অনিল বৈজল দিল্লি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব সামলেছেন। ৩৭ বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদে ছিলেন। অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের পদে। ইউপিএ সরকার আসার পর তাঁকে নগরোন্নয়ন মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর উপর দায়িত্ব ছিল, জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আর্বান রিনিউয়াল মিশন বাস্তবায়নের কাজ দেখভালের। এছাড়াও, ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের সেক্রেটারি-জেনারেল, প্রসার ভারতী কর্পোরেশনের সিইও, গোয়ার ডেভেলপমেন্ট কমিশনার, নেপালে ভারতের এইড প্রোগ্রামের উপদেষ্টার দায়িত্ব সামলেছেন অনিল বৈজল।

ইস্তফাপত্রে, অনিল বৈজল, তাঁর পদ ছাড়ার পিছনে ‘ব্যক্তিগত কারণ’এর কথা উল্লেখ করেছেন। তবে, তাঁর মতো ব্যক্তিত্ব হঠাৎ করে সরে যাওয়ায় এর পিছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। দিল্লি সরকারের সঙ্গে ক্রমাগত বিরোধে থাকা লেফট্যানেন্ট গভর্নরের সঙ্গে সম্প্রতি কি কেন্দ্রীয় সরকারেও দূরত্ব বেড়েছিল, এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে রাজধানীর রাজনৈতিক মহলে।