Dhanbad Fire: মেয়ের বিয়ের রাতেই ঝলসে গেলেন মা-মাসি-কাকিমা-সহ ১৪ জন, তারপরও নমঃ নমঃ করে অনুষ্ঠান সারলেন বাবা

Dhanbad Fire: উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা একটি ঘরে ঢুকে এমনও দৃশ্য দেখেন, ঝলসে এক মহিলার কোলে একটি শিশুকন্যা। মহিলার শরীরে সাড় নেই।

Dhanbad Fire: মেয়ের বিয়ের রাতেই ঝলসে গেলেন মা-মাসি-কাকিমা-সহ ১৪ জন, তারপরও নমঃ নমঃ করে অনুষ্ঠান সারলেন বাবা
ঝলসে মৃত্যু হল ১৪ জনের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 01, 2023 | 4:53 PM

আসানসোল: আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ছিল ‘শুভ মুহূর্ত’। প্রস্তুতি সব সারা। সাজগোজে ব্যস্ত ছিলেন সকলে, সন্ধ্যায় মণ্ডপে যাবেন বলে। তার আগেই ঝলসে গেল ১৪ জনের শরীর। মেয়ের বিয়ের রাতেই ঝলসে মৃত্যু হল মা, মাসি, দাদু-ঠাকুমা-সহ ১৪ জনের। ধানবাদের আশীর্বাদ টাওয়ার আবাসনে আগুন লাগার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। তাঁদের মধ্যে ১০ জন মহিলা, তিন জন শিশু এবং একজন পুরুষ। মঙ্গলবার রাতে  ধানবাদের শক্তিমন্দির এলাকার একটি বহুতলের বাসিন্দা সুধীরলাল শ্রীবাস্তবের মেয়ের বিয়ে ছিল। অতিথি, নিমন্ত্রিতরা সকলেই এসে গিয়েছিলেন। ওই আবাসন থেকে একটু দূরে সিদ্ধি বিনায়ক হোটেলে চলছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। তখন সুধীরলালের আত্মীয় পরিজনরা, যাঁরা গ্রাম থেকে এসেছিলেন, তাঁরা তৈরি হচ্ছিলেন সেই অনুষ্ঠান হলে যাওয়ার জন্য। তখনই আগুন লাগে। প্রদীপের আগুন থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পর্দায়। পর্দা থেকে রান্নাঘর। রান্নাঘরে সিলিন্ডার ব্লাস্ট করে। তা থেকেই ভয়ঙ্কর ঘটনা। প্রাথমিকভাবে সেই তথ্যই জানা যাচ্ছে।

আত্মীয় পরিজনরা উদ্ভ্রান্তের মতো ছোটাছুটি করতে থাকেন। সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে আসার চেষ্টা করেন। তখন সকলেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে যান। কারও বা ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ অগ্নি নির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। বাঁচানোর জন্য বিলাসবহুল অভিজাত আবাসনে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। কিন্তু তাঁরা সে অর্থে কিছুই করে উঠতে পারেননি। সাহায্যের জন্য দমকল বাহিনী যায়। কিন্তু দমকলের কাছে মই না থাকায় তাঁদের দোতলা ও তিনতলায় পৌঁছতে বেগ পেতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই আবাসনের পাশে রয়েছে পাটলিপুত্র নার্সিংহোম। তাঁদেরই রিজার্ভারের জল থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। আগুন লাগার পর ওই আবাসনের ৬৮ টি পরিবারকে রাতেই বের করে দেওয়া হয়। সিল করে দেওয়া হয় আবাসন। পুলিশ এলাকা ঘিরে ফেলেছে। ফরেনসিক টেস্ট হবে বলে জানা গিয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও থানার তরফ থেকে কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। ওই হোটেলে রাতেই এসবের মাঝেই মেয়ের বিয়ে সেরে ফেলেন সুধীরলাল শ্রীবাস্তব। কোনও মতে মেয়ে বিদায় করেন।

সকালে গিয়ে দেখা যায়, আত্মীয় পরিজনরা ফিরে গিয়েছেন। খাবার নষ্ট হয়েছে। ফেলে দেওয়া হয়েছে খাবার। তবে সকাল থেকে সুধীরলাল এবং তাঁর পরিবারের লোকদের দেখা মেলেনি। হাসপাতালে দেখা যায় সুধীরলালের ভাই দীনেশলাল ও শোকাহত আত্মীয় পরিজনদের। ১৪ টি দেহ ময়নাতদন্তের পর নিতে এসেছেন তাঁরা। শোকস্তব্ধ সবাই। জানা গিয়েছে, সুধীরলালের ভাইয়ের বউ,নাতি-নাতনি, দূর সম্পর্কের ভাইজি এরকম ১৪ জনের প্রাণ খেয়েছে আগুন।

উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা একটি ঘরে ঢুকে এমনও দৃশ্য দেখেন, ঝলসে এক মহিলার কোলে একটি শিশুকন্যা। মহিলার শরীরে সাড় নেই। কিন্তু তিনি শেষ নিঃশ্বাস মুহূর্ত চেষ্টা করেছেন সন্তানকে আগলে রাখার। সন্তান বেঁচে ছিল, কিন্তু যতক্ষণে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়, শেষ রক্ষা হয়নি।