Himachal Pradesh: ‘এই যুদ্ধে যোগ দেবে না বিজেপি’, ঐতিহ্য বদলাতে আত্মবিশ্বাসী হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী
Himachal Pradesh: হিমাচল প্রদেশে নির্বাচন আসতেই 'ফ্রিবি'র লড়াইয়ে নেমে গিয়েছে কংগ্রেস, আপ। তবে এই লড়াইয়ে নামবে না বিজেপি, এমনটাই দাবি করেছেন জয় রাম ঠাকুর।
সিমলা: নির্বাচন আসতেই শুরু হয়ে গিয়েছে ‘ফ্রিবি’ অর্থাৎ বিনামূল্যে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। কিন্তু, হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনী এই ‘ফ্রিবি’র প্রতিশ্রুতির লড়াইয়ে যোগ দেবে না বিজেপি। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর), এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী জয় রাম ঠাকুর। “রাজ্যের স্বার্থে” বিজেপি সরকার ১২৫ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। এর থেকে বেশি কোনও প্রতিশ্রুতি তারা দেবে না বলেই দাবি করেছেন জয় রাম ঠাকুর। বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে তিনি বলেছেন, “আমরা যতদূর করা সম্ভব, করেছি”।
সম্প্রতি এই ‘ফ্রিবি’ প্রদানের প্রতিশ্রুতি বন্ধের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালত অবশ্য বলেছে ‘ফ্রিবি’ এবং উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই, তাই ‘ফ্রিবি সংস্কৃতি’ বন্ধ করারও কোনও উপায় নেই তাদের হাতে। রেওয়াড়ি সংস্কৃতি বন্ধের জন্য বারবার আহ্বান করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সেই অবস্থানেই থাকলেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে একটি একান্ত সাক্ষাত্কার দিয়েছেন জয় রাম ঠাকুর। তাঁর দাবি, হিমাচলের জনগণ ফ্রিবির নামে ফাঁপা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কংগ্রেস এবং আপ। তবে হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “সত্য-মিথ্যা যাচাই করার জন্য যথেষ্ট বুদ্ধিমান রাজ্যের মানুষ। তারা বোকা নয়।”
ইতিমধ্যেই রাজ্যে বিনামূল্যে মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দিল্লি মডেল মেনে হিমাচল প্রদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্য়ে পাঁচ দফা সংস্কারের কথা বলেছে তারা। অন্যদিকে কংগ্রেস রাজ্যের প্রতি ঘরে ঘরে বিনামূল্যে ৩০০ ইউনিট বিদ্যুত সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাশাপাশি ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলাদের মাসে মাসে ১৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
আগামী নির্বাচনে জয় রাম ঠাকুরকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করেছে বিজেপি। এই বিষয়ে জয় রাম ঠাকুর বলেছেন, “আবার আমাকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এটা আমার অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের বিষয়। কিন্তু এর সঙ্গে বড় দায়িত্বও বর্তেছে আমার কাঁধে। এখন দলকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা আমার দায়িত্ব।” এতদিন পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশে ক্ষমতার লড়াইটা ছিল একেবারে দ্বিমুখী – বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে। এবার তৃতীয় পক্ষ হিসেবে লড়াইয়ের ময়দানে প্রবেশ করেছে আম আদমি পার্টি। তবে, তারপরও রাজ্যে কংগ্রেসই বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বলে দাবি করেছেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি জানিয়েছেন, আপ হিমাচলে তৃতীয় শক্তি হিসেবেই থেকে যাবে। বিজেপি তাদেরকে কোনও হুমকি বলেই মনে করছে না বিজেপি। কারণ, রাজ্যে তাদের কোনও উপস্থিতিই নেই। তবে জয়রাম ঠাকুরের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হল রাজ্যের রাজনৈতিক ঐতিহ্য। এই রাজ্য বরাবর পরিবর্তনে বিশ্বাস রেখেছে। এখনও পর্যন্ত কোনও দলই দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরতে পারেনি। ঐতিহ্য বজায় থাকলে এবার ক্ষমতায় আসার কথা কংগ্রেসের। তবে, এবার এই ঐতিহ্য ভাঙার বিষয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী জয় রাম ঠাকুর। তাঁর দাবি বীরভদ্র সিংয়ের মতো নেতার প্রয়াণে রাজ্যে কংগ্রেস এখন “নেতৃত্বহীন”। তাই “আরামদায়ক সংখ্যাগরিষ্ঠতা” নিয়েই ক্ষমতায় ফিরবেন বলে আশাবাদী বিজেপি।