চিনকে চাপে রাখতে ভারতের ‘তুরুপের তাস’ তাইওয়ান!

তাইওয়ানের তরফে সে দেশের বিদেশমন্ত্রী জোসেফ উ-ও এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “আগামীতে গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করার কথা ভাবা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের সঙ্গে আগাগোড়াই আমাদের সম্পর্ক ভাল। আমরা ভারতের সঙ্গেও বন্ধুত্ব তৈরি করতে চাই।”

চিনকে চাপে রাখতে ভারতের 'তুরুপের তাস' তাইওয়ান!
চীন যেমন বাংলাদেশর সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াচ্ছে, ভারতও চায় পূর্ব এশিয়ার অন্যতম উল্লেখযোগ্য সুসমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ তাইওয়ানের সঙ্গে মিত্রতা বাড়িয়ে নিতে।
Follow Us:
| Updated on: Oct 27, 2020 | 12:02 PM

TV9 বাংলা ডিজিটাল: তাইপেই-দিল্লি কথা, শুরু হতে পারে তাইওয়ান-ভারত বাণিজ্য (Taiwan-India Trade)। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ইতিমধ্যেই নাকি আনুষ্ঠানিকতাও সেরে ফেলেছে দুই দেশ। এবার স্রেফ পাকাপোক্ত সিলমোহর পড়ার অপেক্ষা। সূত্রের খবর, চিনের কারণে এতদিন চেয়েও ভারতের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেনি তাইওয়ান। তবে এবার ভারতের আগ্রহ এবং তাইওয়ানের চেষ্টায় সেই পথ খুলতে চলেছে। কেন্দ্রের তরফে সরকারি কোনও বিবৃতি না এলেও তাইওয়ানের সঙ্গে সন্ধিতে ভারত যে অগ্রসর হচ্ছে, তা এক কথায় পাকা।

চলতি বছরের মে মাস থেকেই লাদাখ (Ladakh) সীমান্তের টানাপোড়েন নিয়ে উত্তপ্ত ভারত-চিন দুই দেশ। গালওয়ানে (Galwan Valley) লাল ফৌজের বেআইনি অনুপ্রবেশ রুখতে গিয়ে শহিদ হয়েছেন ভারতীয় সেনার ২০ জওয়ান। এরপর থেকই ভারত-চিন সম্পর্কের চিড় আরও গভীর হতে থাকে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক করতে চিনা প্রশাসনিকদের সঙ্গে কয়েক দফায় কথা বলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে শীতল করার চেষ্টা করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। তবে লাল ফৌজের আস্ফালন না কমায় ভারতও ‘যুদ্ধের প্রস্তুতি’ নিতে শুরু করে।

এই মুহূর্তে ফ্রান্স থেকে পৌঁছয় অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান রাফাল। এই অবস্থায় চিনের প্রতিবেশী তাইওয়ানের সঙ্গে দোস্তি করে আরও চাপ তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে দিল্লি। একদিকে চিন যেমন পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভুটানের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়িয়ে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, পাল্টা পূর্ব এশিয়ার অন্যতম উল্লেখযোগ্য সুসমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ তাইওয়ানের সঙ্গে মিত্রতা বাড়িয়ে কৌশলী পদক্ষেপ করছে সাউথ ব্লক।

চিনা পণ্য বয়কট করে ব্যবসায়িক সম্পর্কে ছেদচিহ্ন বসিয়েছে কেন্দ্র। টিকটক-সহ শতাধিক অ্যাপকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি পূর্বের অনেক চুক্তিও বাতিল করেছে মোদী সরকার। বিকল্প খুঁজতে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। এরপর তাইওয়ানের সঙ্গেও যদি বন্ধুত্ব তৈরি হয়, তাহলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে।

চলতি মাসের শুরুতেই তাইওয়ানের ফক্সকন টেকনলজি গ্রুপ, উইস্টন কর্প এবং পেগাত্রন কর্প-কে ফার্ম তৈরির অনুমতি দিয়েছে ইউনিয়ন সরকার। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) চাইছেন আগামী ৫ বছরে ভারত স্মার্টফোন তৈরির কেন্দ্র হয়ে উঠুক। এতে দেশে অন্তত সাড়ে ১০ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

যদিও এই বিষয়ে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রক কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। তাইওয়ানের পক্ষ থেকেও আসেনি কোনও প্রতিক্রিয়া। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে তাইওযানের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করেছিল ভারত। ২০১৯ সাল পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে ১৮ শতাংশ। ভারত এই বাণিজ্যিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে বদ্ধ কর। তাইওয়ানের তরফে সে দেশের বিদেশমন্ত্রী জোসেফ উ-ও এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “আগামীতে গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করার কথা ভাবা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের সঙ্গে আগাগোড়াই আমাদের সম্পর্ক ভাল। আমরা ভারতের সঙ্গেও বন্ধুত্ব তৈরি করতে চাই।”

সম্প্রতি, তাইওয়ানের জাতীয় দিবস নিয়ে ট্যুইট করে অভিনন্দন জানায় ভারত। পাল্টা জনসমক্ষে তাঁর ভারত ভ্রমণের স্মৃতি রোমন্থন করে দুই দেশের সম্পর্কের চারা গাছে জল সাড় দিয়েছেন তাইয়ানের রাষ্ট্রপ্রধান সাই ইং-ওয়েনও।