Monkeypox: মাঙ্কিপক্সের মোকাবিলায় কি এগিয়ে ভারত? দারুণ আশার কথা শোনাচ্ছেন চিকিৎসকরা
Monkeypox: ভারতীয় শিশুদের স্মলপক্সের টিকা দেওয়া হয় বলে 'মাঙ্কিপক্স' সংক্রমণ মোকাবিলায় ভারতীয়রা বাড়তি সুবিধা পাবে বলে মনে করছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা।
নয়া দিল্লি: কোভিড-১৯ মহামারির বিপদ কাটতে না কাটতেই শিয়রে এসে দাঁড়িয়েছে অন্য বিপদ, ‘মাঙ্কিপক্স’ সংক্রমণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিকতম তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত আফ্রিকার বাইরে ১৯টি দেশ থেকে অন্তত ১৩১ টি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা নিশ্চিত করা হয়েছে। আরও ১০৬ জনের ক্ষেত্রে এই রোগ সংক্রমণের সন্দেহ করা হচ্ছে। ভাইরাল বিশেষজ্ঞরা এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে বলে দাবি করছেন। তবে, আফ্রিকার বাইরে আচমকা দ্রুত হারে এই রোগ ছড়ানো নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁরা। ভারতে এখনও এই ভাইরাস এসে পৌঁছায়নি। তবে, এই রোগ প্রতিরোধে ভারত বিশেষ সুবিধা পাবে বলে মনে করছেন ভাইরাল বিশেষজ্ঞরা।
ভারতে এখনও পর্যন্ত একটিও মাঙ্কিপক্সের ঘটনা রেকর্ড করা হয়নি। তবে, বিভিন্ন রাজ্যে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সন্দেহভাজন মাঙ্কিপক্স রোগীদের বিচ্ছিন্ন করার জন্য, বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কস্তুরবা হাসপাতালে ২৮টি শয্যা তৈরি রাখা হয়েছে। বিমানবন্দরে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। তামিলনাড়ু রাজ্য প্রশাসনও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে সতর্ক করেছে। ভারতের জাতীয় রোগ প্রতিরোধ কেন্দ্র থেকেও মাঙ্কিপক্স আক্রান্তদের নিভৃতবাসে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, যতক্ষণ পর্যন্ত আক্রান্তদের শরীরে ফুসকুড়ি থাকবে, নতুন ত্বক তৈরি না হবে, ততক্ষণ রোগীদের বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা উচিত।
তবে, ভারত মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছে বলে মনে করছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা। স্মলপক্স বা গুটি বসন্তর সঙ্গে ভারতের যোগই এর কারণ। ১৯৭৪ সালে বিংশ শতাব্দীর সবথেকে ভয়ানক গুটি বসন্ত মহামারির মুখে পড়েছিল ভারত। ওই বছরের জানুয়ারি থেকে মে – এই ৫ মাসের মধ্যেই স্মলপক্স আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৫ হাজারেরও বেশি ভারতীয়ের। বেশিরভাগ মৃত্যুই ঘটেছিল বিহার, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে। তবে, এর পরের বছরই এই প্রাদুর্ভাব দূর হয়েছিল। এরপর থেকে ভারতে শিশুদের বাধ্যতামূলকভাবে স্মলপক্সের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল।
আর এই স্মলপক্সের টিকাই, মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে, এমনটাই বলছেন ভাইরাল বিশেষজ্ঞরা। আফ্রিকায় দীর্ঘদিন ধরেই মাঙ্কিপক্স আঞ্চলিক রোগে পরিণত হয়েছে। আফ্রিকার দেশগুলির অভিজ্ঞতা থেকে ভাইরাল বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অন্তত ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে গুটি বসন্তের টিকা, মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে সফল হয়। ২০১৯ সালে মার্কিন খাদ্য এবং ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা,ডেনমার্কের ‘বাভারিয়ান নর্ডিক’ সংস্থার তৈরি ‘জিনোয়েস’ ভ্যাকসিনকে গুটি বসন্তের পাশাপাশি মাঙ্কিপক্সের টিকা হিসাবেও অনুমোদন দিয়েছিল। ভারতীয় শিশুরা জন্মের পরই গুটি বসন্তের টিকা পেয়ে থাকে। তাই মনে করা হচ্ছে, ভারতে শেষ পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে, গুটিবসন্তের টিকাই রক্ষা করবে ভারতীয়দের। এই জন্যই ভাইরাল বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, সম্ভবত এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাকি বিশ্বের থেকে বাড়তি সুবিধা পাবে ভারত।