Kashmiri Pandits: দরজায় তালা, রাস্তায় ব্যারিকেড! কাশ্মীরি পন্ডিতদের ঘরবন্দি করল প্রশাসন
Kashmiri Pandit: কুলগামে এক হিন্দু শিক্ষিকার মৃত্যুর প্রেক্ষিতে গণহারে দেশত্যাগ করার হুমকি দিয়েছে কাশ্মীরি পন্ডিত সম্প্রদায়। বুধবার (১ মে), জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের ট্রানজিট ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শ্রীনগর: কুলগামে এক হিন্দু শিক্ষিকার মৃত্যুর প্রেক্ষিতে, মঙ্গলবারই (৩১ মে) গণহারে দেশত্যাগ করার হুমকি দিয়েছিল কাশ্মীরি পন্ডিত সম্প্রদায়। বুধবার (১ মে), জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন তাঁদের ট্রানজিট ক্যাম্পেই আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, উপত্যকার বিভিন্ন জায়গাতেই কাশ্মীরি পন্ডিতদের ট্রানজিট ক্যাম্পের বাইরে বের হতে দেওয়া হয়নি। প্রসঙ্গত, গত রবিবার জম্মুতে রজনী বালা নামে পন্ডিত সম্প্রদায়ের এক শিক্ষিকাকে হত্যা করেছিল উগ্রপন্থীরা। যার জেরে মঙ্গলবার, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের নিরাপদ এলাকায় স্থানান্তরিত করার দাবি জানিয়েছিলেন কাশ্মীরি পন্ডিতরা। এরপরই এদিন ট্রানজিট ক্যাম্পগুলির বাইরে নজিরবিহীন ব্যবস্থা নিল প্রশাসন।
এদিন, উপত্যকায় পন্ডিত সম্প্রদায়ের ট্রানজিট শিবিরগুলির প্রধান দরজায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। পন্ডিত সম্প্রদায়ের কেউ যাতে বাইরে না বের হতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সকাল থেকেই ট্যানজিট ক্যাম্পগুলির নিকটবর্তী সকল রাস্তায় ব্যারিকেড লাগিয়ে দেয় পুলিশ। সেই সঙ্গে প্রতিটি গাড়ি তল্লাশির ব্যবস্থা করা হয়। কোনও গাড়িতে পন্ডিত সম্প্রদায়ের কেউ থাকলেই, সেই গাড়িগুলিকে চেক পয়েন্ট থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শ্রীনগর শহরের ইন্দ্রা নগরে বহু কাশ্মীরি পন্ডিত পরিবার বসবাস করেন। পুলিশ ওই এলাকার সমস্ত প্রবেশ পথ ব্লক করে রেখেছে বলে জানা গিয়েছে। বাসিন্দাদের বাইরে বের হতেই দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ভেসু পন্ডিত এলাকায় অবশ্য শয়ে শয়ে কাশ্মীরি পন্ডিত রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। ন্যায় বিচার এবং অন্যত্র স্থানান্তরের দাবিতে তাঁদের স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, এই এলাকাতেই পন্ডিত সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ট্রানজিট ক্যাম্পটি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৮০-এর শেষ দিকে, বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের হুমকির মুখে জম্মু ও কাশ্মীর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন হাজার হাজার কাশ্মীরি পন্ডিত পরিবার। ২০১০ তাদের উপত্যকায় পুনর্বাসন দেওয়ার লক্ষ্যে, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এক বিশেষ কর্মসংস্থান প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছিল। প্রায় ৪০০০ কাশ্মীরি পন্ডিত এই প্যাকেজের মাধ্যমে সরকারি চাকরি নিয়ে ফিরে এসেছিলেন উপত্যকায়। কিন্তু, গত কয়েক মাস ধরে বারংবার জঙ্গিরা নিশানা করেছে উপত্যকায় কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিক ও কাশ্মীরি সংখ্যালঘু পন্ডিত সম্প্রদায়কে। রজনী বালা হত্যার কয়েকদিন আগেই একেবারে সরকারি কার্যালয়ে ঢুকে হত্যা করা হয়েছিল পন্ডিত সম্প্রদায়ের আরেক ব্যক্তি, রাজস্ব বিভাগের কর্মী রাহুল ভাটকে।
রাহুল ভাটের মৃত্যুর পরও, পন্ডিতদের প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল উপত্যকা। জায়গায় জায়গায় হয়েছিল পথ অবরোধ করেছেন। লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা, বিজেপি দল, কেন্দ্রীয় সরকার এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও স্লোগান উঠেছিল। রজনী বালার হত্যা সেই প্রতিবাদকে আরও একবার উসকে দিয়েছে। মঙ্গলবার কাশ্মীরের রাস্তায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘হায় হায়’ স্লোগান উঠেছে। তারা দাবি জানিয়েছিল, সরকারকে বাস ঠিক করে দিতে হবে। সেই বাসে করে তারা জম্মুতে কোনও নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে চান।