Malappuram Teacher: অবসরের দিনেই ‘আদর্শ শিক্ষকের’ বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি যৌন হেনস্থার অভিযোগ, গ্রেফতার সিপিএম নেতা ও শিক্ষক
Kerala School Teacher: যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকের নাম শশী কুমার কেভি। মলপ্পুরমের সেন্ট জেম্মা জিএইচএসএস স্কুলে দীর্ঘ ৩৮ বছর শিক্ষকতা করেছেন। এ বছর ৩১ মার্চ ওই স্কুল থেকে অবসর নেন তিনি।
মলপ্পুরম: প্রায় ২৫ বছর ধরে পড়ুয়াদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল এক প্রাইমারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এক প্রাক্তনী অভিযোগ করার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যান্য প্রাক্তনীরা নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। পঞ্চাশের বেশি স্কুল প্রাক্তনীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পকসো মামলা দায়ের করে পুলিশ। কেরলের মলপ্পুরমের ওই প্রাইমারি স্কুল শিক্ষককে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে। ওই স্কুল শিক্ষক সিপিএমের কাউন্সিলরও ছিলেন। যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষক নেতাকে বহিষ্কার করেছে সিপিএম। কাউন্সিলরের পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকের নাম শশী কুমার কেভি। মলপ্পুরমের সেন্ট জেম্মা জিএইচএসএস স্কুলে দীর্ঘ ৩৮ বছর শিক্ষকতা করেছেন। এ বছর ৩১ মার্চ ওই স্কুল থেকে অবসর নেন তিনি। সেই অবসরের অনুষ্ঠান নিয়েই স্কুলের ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করা হয়েছিল। সেখানে তাঁকে আদর্শ শিক্ষক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। সেই পোস্টেই ওই স্কুলের এক প্রাক্তনী শিক্ষকের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁর বাড়ি মঞ্জেরিতে। এর পর একে একে অনেক প্রাক্তনী ওই শিক্ষকের সঙ্গে তাঁদের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা জানাতে থাকেন। সেখানেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে #MeToo Campaign শুরু হয়। অভিযোগ, গত ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন শ্রেণির পড়ুয়া তাঁর হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এর পর ৭ মে মলপ্পুরম পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের করে। তার পর থেকেই বেপাত্তা ছিলেন শিক্ষক। শুক্রবার ওয়ানাডের মুথাঙ্গার একটি হোমস্টে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বীণা পিল্লাই নামে ওই স্কুলের এক প্রাক্তনী বলেছেন, “শশী কুমার ১৯৮৪ সালে স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন। স্কুলে তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন এবং ক্লাসের বাইরে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিতেন। গত ২৫ বছর ধরে প্রতি ক্লাসের ৫-৬ জন করে ছাত্রী তাঁর হাতে হেনস্থার কথা জানিয়েছেন।” বীণা ওই স্কুল পাশ করেছিলেন ১৯৮৮ সালে। তিনি অবশ্য ওই শিক্ষকের হাতে হেনস্থার শিকার হননি বলে জানিয়েছেন। বীণা আরও জানিয়েছেন, শশীর বিরুদ্ধে আগেও অনেক বার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি। অভিযোগ ২০১৯ সালে এক বাচ্চার বুকে শশী এমন ভাবে মেরেছিলেন, যে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। তখনও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রাক্তনী জানিয়েছেন কী ভাবে তাঁকে হেনস্থা করেছিলেন শশী। তিনি ওই স্কুলে পাঁচ বছর পড়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন শশী। সিপিএমের টিকিটে জিতে কাউন্সিলরও হয়েছিলেন। ২০০৫ থেকে ২০১০ এবং ২০১৫ থেকে কাউন্সিলর ছিলেন। যদিও কাউন্সিলর হলেও স্কুল থেকে তিনি কোনও দিন ছুটি নেননি বলেও জানা গিয়েছে। যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠার পর কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। সিপিএমও তাঁকে বহিষ্কার করে। কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি সিভানকুট্টি শিক্ষা দফতরকে শশীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং যত দ্রুত সম্ভব রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।