সদ্যোজাত মেয়ের মুখ না দিয়েই চলে যেতে হল তাঁকে, নদিয়ার জওয়ান সুূবোধ ঘরে ফিরছেন কফিনবন্দি হয়ে

TV9 বাংলা ডিজিটাল: খবরটা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শুনে টিভির চ্যানেলটা খুলতেই গোটা পৃথিবীটা যেন অন্ধকার করে গিয়েছিল নদিয়ার (Nadia)  রঘুনাথপুরের ঘোষ পরিবারের বউ অনিন্দিতার। পেটের সেলাইয়ের ক্ষত শুকোয়নি। ছোট্ট কয়েক দিনের মেয়েটার তখন বিছানায় শুয়ে খিদের জ্বালায় কাঁদছে। অনিন্দিতা টিভিতেই জানতে পারে তাঁর জওয়ান স্বামী শহিদ হয়েছেন পাকসেনার গুলিতে। ছিমছিম একতলার বাড়ির ছাদ যেন কার্যত […]

সদ্যোজাত মেয়ের মুখ না দিয়েই চলে যেতে হল তাঁকে, নদিয়ার জওয়ান সুূবোধ ঘরে ফিরছেন কফিনবন্দি হয়ে
সদ্যোজাত মেয়ের মুখ না দিয়েই চলে যেতে হল তাঁকে, নদিয়ার জওয়ান সুূবোধ ঘরে ফিরছেন কফিনবন্দি হয়ে
Follow Us:
| Updated on: Nov 16, 2020 | 7:15 AM

TV9 বাংলা ডিজিটাল: খবরটা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শুনে টিভির চ্যানেলটা খুলতেই গোটা পৃথিবীটা যেন অন্ধকার করে গিয়েছিল নদিয়ার (Nadia)  রঘুনাথপুরের ঘোষ পরিবারের বউ অনিন্দিতার। পেটের সেলাইয়ের ক্ষত শুকোয়নি। ছোট্ট কয়েক দিনের মেয়েটার তখন বিছানায় শুয়ে খিদের জ্বালায় কাঁদছে। অনিন্দিতা টিভিতেই জানতে পারে তাঁর জওয়ান স্বামী শহিদ হয়েছেন পাকসেনার গুলিতে। ছিমছিম একতলার বাড়ির ছাদ যেন কার্যত ভেঙে পড়েছিল অনিন্দিতার মাথায়। সরে গিয়েছে পায়ের তলার মাটিও।

এই তো বৃহস্পতিবারই কথা হয়েছিল সুবোধের সঙ্গে। তখনও তাঁর কয়েক দিনের ছোট্ট মেয়েটাকে নিয়েই গল্প হয়েছিল। নিজের মেয়ের মুখটাও পর্যন্ত দেখা হয়নি তাঁর। শুধু হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো ছবিটাই ছিল সম্বল। ডিসেম্বরেই ফেরার কথা ছিল সুবোধের। মেয়ের একুশ দিনের ষষ্ঠী পুজো! কিন্তু তাঁর আগেই ফিরছেন সুবোধ। কিন্তু কফিনবন্দি হয়ে।

বাইশ বছরের সুবোধ ঘোষ তিন বছর আগে ৫৯ মেডিক্যাল রেডিমেন্ট ইউনিটে যোগ দেন। গত শনিবার পাক সেনার (Pakistan) গুলিতে শহিদ হয়েছেন জম্মু কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) বারামুলা সেক্টরে। সেখান থেকে ফোন আসার আগেই টিভিতে খবরটা দেখে নিয়েছিলেন অনিন্দিতা। বছর খানেক আগে অনিন্দিতার সঙ্গে সুবোধের বিয়ে হয়। কিছু দিন আগে জন্ম নেয় তাঁদের কন্যাসন্তান। এখনও মেয়ের মুখ দেখেননি সুবোধ।

রবিবার অনিন্দিতার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল ছোট্ট একতলার বাড়িটায় যেন গোটা পাড়া ভেঙে পড়েছে। কেউই নিজের চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না। অনিন্দিতার চোখ ঝাপসা। নির্বাক মুখে তাকানোর উপায় নেই। বাচ্চাটাকে পরিবারের অন্য সদস্য সামলাচ্ছেন। আর অনিন্দিতা শুধু তাঁদের বিয়ের ছবি হাতে বসে রয়েছে। তাঁর না বলা চোখের ভাষা বলে দিচ্ছে চরম অভিমানের কথা! ‘কেন এমনটা করে ফাঁকা করে চলে গেলে’…. উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা নেই কারোর।

দুঃখপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি টুইট করেছেন, “শহিদের পরিবারের প্রতি মন থেকে সমবেদনা।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “শহিদের বলিদান ব্যর্থ যাবে না। পরিবারের প্রতি সমবেদনা।”