LocalCircles Survey: মূল্যবৃদ্ধি থেকে কর্মহীনতার সমাধানে মোদী সরকারে আস্থা আছে কি ভারতের? কী বলছে সমীক্ষা রিপোর্ট?

LocalCircles Survey: 'লোকালসার্কলস' সংস্থার করা সমীক্ষা অনুযায়ী নরেন্দ্র মোদী সরকারের অ্যাপ্রুভাল রেটিং বর্তমানে ৬৭ শতাংশ, অর্থাৎ করোনা মহামারির শুরু থেকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে প্রধানমন্ত্রীর গ্রহণযোগ্যতা।

LocalCircles Survey: মূল্যবৃদ্ধি থেকে কর্মহীনতার সমাধানে মোদী সরকারে আস্থা আছে কি ভারতের? কী বলছে সমীক্ষা রিপোর্ট?
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 30, 2022 | 4:20 PM

নয়া দিল্লি: কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে, গত তিন বছরে গোটা বিশ্বজুড়েই রাষ্ট্রনেতাদের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে। শুধুমাত্র নিজের গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেল, মহামারির পর থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গ্রহণযোগ্যতা বা অ্যাপ্রুভাল রেটিং এখন সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। ‘লোকালসার্কলস’ সংস্থার করা এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৬৪,০০০ মানুষ। তাদের মধ্যে ৬৭ শতাংশই জানিয়েছেন, দ্বিতীয় মেয়াদে নরেন্দ্র মোদী সরকার হয় তাদের প্রত্যাশা পূরণ করেছেন, নয়তো প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গিয়েছেন।

২০২০ সালে ভারতে প্রবেশ করেছিল কোভিড মহামারি। দীর্ঘ দিন থেমে ছিল অর্থনৈতিক কার্যক্রম। সেই বছর ‘লোকালসার্কলস’-এর করা সমীক্ষায় নরেন্দ্র মোদীর উপর আস্থা রেখেছিলেন ৬২ শতাংশ মানুষ। তবে তার পরের বছর, অর্থাৎ, ২০২১ সালে ভারতকে যুঝতে হয়েছিল কোভিড-১৯ মহামারির ভয়াবহ দ্বিতীয় তরঙ্গের সঙ্গে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘অ্যাপ্রুভাল রেট’ বা গ্রহণযোগ্যতা এক ধাক্কায় নেমে এসেছিল ৫১ শতাংশে। সেখান থেকে এক বছরের মধ্যেই ১৬ শতাংশ গ্রহণযোগ্যতা বাড়ল প্রধানমন্ত্রীর।

এর পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্যতে সেই বিষয়গুলিও উঠে এসেছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ মহামারির তৃতীয় তরঙ্গের জন্য অনেক ভালোভাবে তৈরি ছিল সরকার। শুধু মহামারির মোকাবিলা নয়, এই সময়ে দেশের অর্থনীতিকেও চাঙ্গা রাখার কাজ করেছে মোদী সরকার। তবে, এখনও বহু মানুষের মনে কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে দেশে যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে।

সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৪৭ শতাংশ জানিয়েছেন মোদী সরকার কর্মসংস্থানের সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ। তবে, সমীক্ষার ফল অনুযায়ী এই ক্ষেত্রেও মোদী সরকারের উপর মানুষের আস্থা ক্রমে বাড়ছে। ২০২০ সালে মোদী সরকারের আচমকা লকডাউনে জারির ফলে পরিযায়ী শ্রমিকরা বিপদের মুখে পড়েছিলেন। ওই বছর কর্মসংস্থান সমস্যার সমাধানের বিষয়ে মোদী সরকারের উপর আস্থা রেখেছিলেন ২৯ শতাংশ মানুষ। পরের বছর এই সংখ্যাটা কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছিল ২৭ শতাংশে। চলতি বছরে ৩৭ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী সরকারই দেশে কাজ না থাকার সমস্যার সমাধান করতে পারবে।

অতি সম্প্রতি, আট বছর পূর্ণ করেছে মোদী সরকার। তবে, অষ্টম বছরে এসে সরকারকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে তীব্র মূল্যবৃদ্ধির। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৭৩ শতাংশও বলেছেন, গত ৩ বছরে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মূল্য এবং তাদের জীবনধারণের খরচ এতটুকু কমেনি। আবার, এর পাশাপাশি, ৭৩ শতাংশ মানুষই জানিয়েছেন, মোদী সরকারের আমলে নিজেদের এবং পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আশাবাদী। মোদী সরকার ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষকে মূল্যবৃদ্ধির আঁচ থেকে রক্ষা করতে গম-চিনি রফতানির উপর বিধিনিষেধ জারি করেছে। জ্বালানি তেলে আবগারি শূল্কও কমিয়েছে।

এই সমীক্ষায় ভারতে ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ব্যবসা করার স্বাচ্ছন্দের বিষয়েও মতামত সংগ্রহ করেছে ‘লোকালসার্কলস’। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৪৪ শতাংশ জানিয়েছেন, বায়ুদূষণ কমাতে এবং বাতাসের গুণমান বৃদ্ধির জন্য সরকার যথেষ্ট সচেষ্ট নয়। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এবং বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিভিন্ন সময়েই মোদী সরকারের আমলে ভারতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ ক্রমশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে, সাম্প্রতিক সমীক্ষায় কিন্তু ৬০ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিকাশে সরকার কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। ৩৩ শতাংশ মানুষ অবশ্য ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বলেছেন, মোদী সরকারের আমলে ভারতে ব্যবসা করা অনেক সহজ হয়ে উঠেছে।