Merger of Amar Jawan Jyoti: অমর জওয়ান জ্যোতি ওয়ার মেমোরিয়ালে মিলিয়ে দেওয়াই শহিদদের জন্য প্রাপ্য শ্রদ্ধাঞ্জলি

National War Memorial: ১৯৪৭ সালের পরে শহিদ সব জওয়ানদের এমনকী গালওয়ানের সংঘর্ষে শহিদ প্রত্যেকের নাম রয়েছে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে।

Merger of Amar Jawan Jyoti: অমর জওয়ান জ্যোতি ওয়ার মেমোরিয়ালে মিলিয়ে দেওয়াই শহিদদের জন্য প্রাপ্য শ্রদ্ধাঞ্জলি
অমর জওয়ান জ্যোতি (ছবি-AFP)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 24, 2022 | 9:58 PM

ভা ই স অ্যা ড মি রা ল শে খ র সি ন হা

ইন্ডিয়া গেটের মূল কাঠামোটি তৈরি হয়েছিল ১৯২১ সালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকারের হয়ে লড়াইয়ে যে ভারতীয় জওয়ানরা আত্মবলিদান দিয়েছিলেন, তাঁদের স্মরণে এটি তৈরি হয়েছিল। নির্মাতা ছিলেন এডওয়ার্ড লুটিয়েন্স। বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই ইন্ডিয়া গেটের ইটের উপর জওয়ানদের নাম খোদাই করা রয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় শহিদ ভারতীয় জওয়ানদের সম্মানের জন্য এই স্মৃতিস্তম্ভটি তৈরি হয়েছিল। এরপর ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকেই ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর যে জওয়ানরা সর্বোচ্চ আত্মবলিদান করেছেন, তাঁদের জন্য একটি স্মৃতিসৌধের প্রয়োজন হয়। ১৯৪৭ সালের অগস্টে কোনওরকম বিবেচনা ছাড়াই দেশভাগ এবং তারপর স্বাধীনতার ভারত সশস্ত্র বাহিনীর অনেক জওয়ান এবং দেশবাসীকে হারিয়েছিল। স্বাধীন ভারতে যারা প্রাণ হারিয়েছিল, তাঁদের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান বা কৃতজ্ঞতার কোনও প্রতীক ছিল না।

এমনকী যখন ভারত ১৯৫০ সালে প্রজাতান্ত্রিক দেশ হয়ে ওঠে এবং রাজপথের কুচকাওয়াজ ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের প্রতীক হয়ে ওঠে, তখনও কেবল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের হয়ে লড়া ভারতীয় শহিদ জওয়ানদেরই শ্রদ্ধা জানানো হত। যারা ভারতের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য শহিদ হয়েছেন, তাদের অবদানকে স্মরণে রাখার বিষয়টি কোথাও একটা অপর্যাপ্ত থেকে যাচ্ছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই স্বাধীনতা-উত্তর ওয়ার মেমোরিয়ালের প্রয়োজন আরও বেশি করে অনুভূত হতে থাকে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকার ৩,৮৪৩ জন জওয়ানকে সম্মান জানাতে ইন্ডিয়া গেটের নীচে অমর জওয়ান জ্যোতির স্থাপনা করেছিলেন। যারা নিজেদের জীবন দিয়ে পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করেছিলেন, সেই সব জওয়ানদের সম্মান জানানোর জন্য এটি এক গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ ছিল।

তবে ইন্ডিয়া গেটের বাকি জায়গায় সেই জওয়ানদের নাম কোথাও খোদাই করা হয়নি। এই অভাবটা সেনার সব র‌্যাঙ্ক এবং ফাইলে বিশেষ করে নিহত জওয়ানদের আত্মীয়রা ভীষণ অনুভব করেছিলেন। তবে অমর জওয়ান জ্যোতি (অনন্ত শিখা, যা সবসময় জ্বলছে) হয়ে ওঠে রাষ্ট্রীয় গর্বের প্রতীক। প্রত্যেক ‘ন্যাশনাল ডে’তে, সেনা, নৌ বাহিনী ও বিমান বাহিনী দিবসে রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান (পরবর্তীতে সিডিএস) এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এই স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সম্মান জানান।

এরপর ২০১১-১২ সালের দিকে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল তৈরির প্রস্তাব, যা দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল, তাতে গতি আসে। সিআইএসসি সেই সময় একের পর এক বৈঠকে বসে, নগরোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে শুরু করে দিল্লির নগরোন্নয়ন পর্ষদ – সবার সঙ্গেই বৈঠক হয়। অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়। চেন্নাইয়ের এক স্থপতির বিশদ প্রকল্প যখন গৃহীত হয়েছিল, তখন তাতে স্বাধীনতা-পরবর্তী সমস্ত জওয়ানদের নাম খোদাই করার প্রস্তাব ছিল। এতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আত্মবলিদান দেওয়া ৩,৮৪৩ জন জওয়ানের নামও ছিল, যেগুলি জায়গার অভাবে অমর জওয়ান জ্যোতিতে লেখা যায়নি। ডিপিআর নিয়ে আলোচনার সময় সামরিক কর্তাদের মনে হয়েছিল ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের শিখা ৩,৮৪৩ জন জওয়ানের জন্য একটি উপযুক্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি হবে।

এখানে বৃত্তাকার পথে তাদের সবার নাম লেখা থাকবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোদির সরকার এর জন্য তহবিল স্থির করে এবং প্রস্তাবটির বাস্তবায়নের উপর নজর দেয়। ঘন ঘন আলোচনা হয়। বেশ কিছু প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতা ছিল, সেগুলিও কাটিয়ে ওঠা হয়। শেষে ২০১৯ সালের ৩০ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয়বার শপথ নেওয়ার ঠিক আগে স্বাধীন ভারতের শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি চিফ অফ ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফের নেতৃত্বে পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা এবং মর্যাদার সঙ্গে চিরন্তন শিখাকে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের নতুন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের সমস্ত জওয়ানদের সম্মান এখন এক জায়গায়তেই দেওয়া হবে, যেখানে ১৯৪৭ সালের পরে শহিদ সব জওয়ানদের এমনকী গালওয়ানের সংঘর্ষে শহিদ প্রত্যেকের নাম রয়েছে।

আরও পড়ুন : Uttar Pradesh Assembly Election 2022 : বাতিল মনোনয়ন! পুলিশের সামনেই গায়ে কেরোসিন তেল ঢাললেন প্রার্থী