Modi Govt’s 8th anniversary: ড্রোন প্রযুক্তিই ভবিষ্যৎ, মোদী সরকারের প্রণোদনায় গোটা বিশ্বকে প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দিয়েছে ভারত

Modi govt's drone rules: মোদী সরকারের বিভিন্ন ড্রোন নীতির ফলে দেশে ড্রোনের ব্যবসা এবং শত্রুপক্ষের ড্রোনের মোকাবিলা করা সহজতর হয়েছে।

Modi Govt’s 8th anniversary: ড্রোন প্রযুক্তিই ভবিষ্যৎ, মোদী সরকারের প্রণোদনায় গোটা বিশ্বকে প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দিয়েছে ভারত
প্রতীকী চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 26, 2022 | 7:00 AM

নয়াদিল্লি: বর্তমান সময়ে জাতীয় নিরাপত্তা থেকে কৃষি, ওষুধ, বিনোদন – বিভিন্ন ক্ষেত্রেই দারুণ কার্যকর হয়ে উঠেছে ড্রোন, অর্থাৎ, মানববিহীন উড়ন্ত যান। গত প্রায় ১ দশক ধরেই সারা বিশ্বেই ড্রোনের উন্নয়ন ঘটলেও, চার বছর আগে পর্যন্ত ভারতের ড্রোন বিষয়ে কোনও নীতিই ছিল না। যে কারণে, আমাদের দেশে ড্রোনের উত্পাদন এবং প্রযুক্তিগত বিবর্তনের সহায়ক পরিবেশই গড়ে ওঠেনি। ফলে, একদিকে যেমন ভারতে ড্রোনের বিকাশ থমকে ছিল, তেমনই জম্মুতে আইএএফ ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার মতো জাতীয় নিরাপত্তাগত সমস্যারও মুখোমুখি হতে হয়েছে। দেশে ড্রোনে ব্যবহারে এই অব্যবস্থা পাল্টে দিয়েছে মোদী সরকার। এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিধি আরোপ করে, সংশোধনী জারি করে ড্রোনের উৎপাদন এবং এই প্রযুক্তির উন্নয়ন মসৃণ করা হয়েছে। আবার, শত্রুপক্ষের ড্রোনের মোকাবিলা করার জন্য নির্দিষ্ট নীতি ও কর্মপদ্ধতিও স্থির করা হয়েছে।

ড্রোনের উত্পাদন এবং ব্যবহারকে সহজতর করার লক্ষ্যে, ২০১৮ সালে, মোদী সরকার ভারতের প্রথম ড্রোন নীতি – সিভিল এভিয়েশন রিকোয়্যারমেন্ট ২০১৮ , প্রকাশ করেছিল। এতে, ড্রোন উৎপাদন, নিবন্ধন এবং পরিচালনের বিভিন্ন পরিমিতিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে সরকার শত্রু ড্রোন-বিরোধী পরিকাঠামো তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল। এই পরিকাঠামো উন্নয়নের ফলে শত্রুপক্ষের ড্রোন থেকে দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়েছে। এরপর, ২০২১ সালে মোদী সরকার ড্রোন বিধিমালা ২০২১ জারি করেছে। এই নয়া বিধিমালা ড্রোন উৎপাদন এবং পরিচালন ব্যবস্থাকে আগের থেকে অনেক সহজ করেছে। একই বছরে ড্রোন উত্পাদনকারীদের জন্য একটি পিএলআই স্কিম অর্থাৎ উৎপাদন-ভিত্তিক আর্থিক প্রণোদনা প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পে ড্রোন উত্পাদন খাতে ৩টি অর্থবর্ষে মোট ১২০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। পাশাপাশি ডিজিটাল স্কাই প্ল্যাটফর্ম তৈরির কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।

এই সকল নীতি ও প্রকল্পের ফল স্বরূপ, ভারতে ড্রোন উৎপাদন, ব্যবসা, পরিচালন অনেক সহজ হয়ে উঠেছে। দেশের সুরক্ষাও নিশ্চিত হয়েছে। এর আগে ড্রোন তৈরির অনুমোদন পাওয়ার জন্য ইউনিক অথোরাইজেশন নাম্বার, ইউনিক প্রোটোটাইপ আইডেন্টিফিকেশন নম্বর, উত্পাদন এবং উড়ানের যোগ্যতার শংসাপত্র, সার্টিফিকেট অব কনফরম্যান্স, রক্ষণাবেক্ষণের শংসাপত্র, আমদানি ছাড়পত্রের মতো নথি দাখিল করতে হতো। ড্রোন বিধিমালা ২০২১ জারির পর, এই অপ্রয়োজনীয় নথিগুলি আর লাগে না। আগে ২৫ টি ফর্ম পূরণ করতে হতো। এখন সেই সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৫-এ।

ড্রোন চালানোর জন্য আগে মোট ৭২ ধরনের ফি দিতে হতো। সেই ফি-এর সংখ্যাও কমে হয়েছ ৪। এছাড়া, এর আগে ড্রোনের আকারের উপর নির্ভর করত ফি-গুলির পরিমাণ। এখন সব আকারের ড্রোনের ক্ষেত্রেই ফি সমান করা হয়েছে। ডিজিটাল স্কাই প্ল্যাটফর্মে তৈরি হয়ে গেলে, সেখানে এক জায়গাতেই প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রগুলি মিলবে। এতে আগের থেকে কাজের গতি অনেক বাড়বে বলে, আশা করা হচ্ছে। কোন কোন এলাকায় ড্রোন চালানো যাবে, সেই তথ্যও একটি ইন্টাব়্যাক্টিভ এয়ারস্পেস মানচিত্রের মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্মে দেখানো হবে। হলুদ, সবুজ এবং লাল রঙ দিয়ে ড্রোন ওড়ানোর সুবিধাজনক অঞ্চল চিহ্নিত করা থাকবে।

এই সকল নয়া এবং সংশোধিত বিধিগুলি থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ড্রোনের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে আধুনিক ভারতে আরও বেশি করে কাজে লাগানোটাই মোদী সরকারের অভিপ্রায়। প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির সময়েও, দেশের দুর্গম এলাকাগুলিতে ভ্য়াকসিন পৌঁছে দিতে এই ড্রোন প্রযুক্তিকেই কাজে লাগিয়েছিল মোদী সরকার। চলতি বছরে প্রজাতন্ত্র দিবসের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের সবথেকে বড় আকর্ষণ ছিল ১০০০ ড্রোনের লেজার শো।

ড্রোন প্রযুক্তির যেভাবে দ্রুত বিবর্তন ঘটছে, তাতে প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন অদূর ভবিষ্যতে মানুষের জীবনে ড্রোনের ব্যবহার বাড়বে বই কমবে না। খাদ্য ও অন্যান্য পণ্য পরিবহনে ইউরোপ-আমেরিকায় ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোনকে কাজে লাগানো হচ্ছে। এই অবস্থায়, ড্রোন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে মোদী সরকার বাকি বিশ্বকে প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। ভারতে মেধার অভাব নেই। তাই, মোদী সরকারের প্রণোদনায় ড্রোন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি করতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এর ইঙ্গিত মিলেছে ২০২০-২১ অর্থবছরেই। এই সময়কালে সমস্ত দেশীয় ড্রোন নির্মাতাদের সম্মিলিত লাভ প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।