কাশ্মীরের ‘মন কি বাত’ শুনলেন মোদী, ‘ঠিক সময়ে’ রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

ভোটের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে কাশ্মীরের নেতাদের।

কাশ্মীরের 'মন কি বাত' শুনলেন মোদী, 'ঠিক সময়ে' রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
কাশ্মীরের সব দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী
Follow Us:
| Updated on: Jun 24, 2021 | 8:33 PM

নয়া দিল্লি: ২০১৯-এর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পর প্রথমবার ফারুক আব্দুল্লা, মেহবুবা মুফতিদের মুখোমুখি হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। গত কয়েকদিন ধরে তাই উপত্যকা নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। বৃহ্স্পতবার দিল্লিতে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলল সেই বৈঠক। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর যে সব নেতাদের দীর্ঘ দিন বন্দি করে রাখা হয়েছিল, তাঁরাও এ দিন সব সমস্যার কথা খুলে বলেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। বৈঠক শেষে এমনটাই জানিয়েছেন কাশ্মীরের নেতারা। সূত্রের খবর, কাশ্মীরকে রাজ্যের তকমা ফেরানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে এ দিন। সূত্রের খবর এ দিন বৈঠকে প্রধানমনন্ত্রী বলেছেন, ‘ঠিক সময়ে কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’

এ দিন বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভোট করে উপত্যকায় নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। কাশ্মীর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। এ দিনের বৈঠক সম্পর্কে মোদী বলেছেন, ‘কাশ্মীরের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক আদতে উন্নয়নের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কাশ্মীরের নেতাদের তিনি বলেছেন, ‘কাশ্মীরের মানুষ, বিশেষত যুব সমাজের আশা পূরণ করা হবে।’

এ দিন বৈঠক থেকে বেরিয়ে কাশ্মীরের আপনি পার্টির নেতা আলতাফ বুখারি বৈঠক শেষে জানিয়েছেন, কাশ্মীরে ভোটের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে আমরা কাশ্মীরকে রাজ্যের তকমা ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বৈঠক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বুখার বলেন, ‘ভাল পরিবেশে আজ কথাবার্তা হয়েছে।’

একই কথা বলেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমমর আব্দুল্লা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দু’জনেই আশ্বাস দিয়েছেন যত শীঘ্র সম্ভব রাজ্যের তকমা ফেরানো হবে ও নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’ ‘দিল কি দূরি’ ও ‘দিল্লি কি দূরি’ মেটানোর পথে যে কেন্দ্র এগোচ্ছে সে কথাও জানিয়েছেন ওমর আব্দুল্লা।

এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কাশ্মীরের আট রাজনৈতিক দলের ১৪ জন নেতা-নেত্রী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কাশ্মীরের চার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৮ -তে মেহবুবা মুফতি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেয় বিজেপি। তারপর থেকেই রাষ্ট্রপতি শাসনে রয়েছে ভূ-স্বর্গ। ২০১৯-এর ১ অগস্ট শেষ বার প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হয়েছিলেন ফারুক ও ওমর আব্দুল্লা। এর ঠিক তিনদিন পর ৪ অগস্ট তাঁদের আটক করা হয় ও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়নি।

বৈঠকে শেষে মেহবুবা মুফতি জানান, তিনি বৈঠকে ৩৭০ ধারা বা স্পেশাল স্টেটাস ফেরানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা কাশ্মীরের আত্মপরিচয়ের প্রশ্ন। আমরা এই স্টেটাস পাকিস্তান থেকে পাইনি, ভারত সরকার আমাদের দিয়েছে। নেহরু আমাদের দিয়েছেন। তাই আমরা চাই কয়েক মাস লাগুক বা বছর, ৩৭০ ধারা ফেরাতেই হবে।’

অন্য দিকে, বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এ দিন। তিনি উল্লেখ করেন, বৈঠকে প্রত্যেকেই সংবিধানের প্রতি গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা রাখার কথা বলেছেন। তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘কাশ্মীরের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চাই আমরা। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হবে কাশ্মীরে।’ রাজ্যের স্বীকৃতি ফেরানোর ক্ষেত্রেও প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের মতে, গত দু’বছর ধরে দমবন্ধ অবস্থায় থাকা কাশ্মীরের বরফ গলছে একটু একটু করে।