বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক, রাতারাতি কোটিপতি ওড়িশার রিক্সাচালক

rickshaw, কটকের সুতাহাট এলাকার মিনতি পট্টনায়েক নামে ৬৩ বছরেরে ওই প্রৌঢ়া নিজের তিন তলা বাড়ি, সোনার গয়না সহ যাবতীয় সম্পত্তি বুধা সামল নামক রিক্সাচালকের নামে লিখে দিয়েছেন। জানা গিয়েছে দীর্ঘ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিনতি ও তাঁর পরিবারকে পরিষেবা দিয়ে আসছেন বুধা।

বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক, রাতারাতি কোটিপতি ওড়িশার রিক্সাচালক
ছবি: টুইটার
Follow Us:
| Updated on: Nov 16, 2021 | 6:19 PM

ভুবনেশ্বর: বিখ্যাত হিন্দি সিনেমার জনপ্রিয় সংলাপ ‘দেনেওয়ালা যব ভি দেতা, দেতা ছপ্পড় ফাডকে’, অর্থাৎ ভগবানের আশীর্বাদে যখন তখন ফিরতে পারে ভাগ্য। এমন সংলাপই বাস্তবে সত্যি বলে প্রমাণিত হতে দেখা গেল। ওড়িশার এক বৃদ্ধা মহিলা নিজের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির সবটাই লিখে দিলেন এক রিক্সাচালকের নামে। কটকের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে তাজ্জব বনে গিয়েছেন অনেকে। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ওই রিক্সাচালকের থেকে পরিষেবা পাচ্ছেন ওই বৃ্দ্ধা। আর সেই পরিষেবার স্বীকৃতি হিসেবে এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রাতারাতি লিখে দিলেন রিক্সাচালকের নামে।

কটকের সুতাহাট এলাকার মিনতি পট্টনায়েক নামে ৬৩ বছরেরে ওই প্রৌঢ়া নিজের তিন তলা বাড়ি, সোনার গয়না সহ যাবতীয় সম্পত্তি বুধা সামল নামক রিক্সাচালকের নামে লিখে দিয়েছেন। জানা গিয়েছে দীর্ঘ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিনতি ও তাঁর পরিবারকে পরিষেবা দিয়ে আসছেন বুধা। বিভিন্ন প্রয়োজনে মিনতি ও তাঁর স্বামীকে ২৫ বছর ধরে সাহায্য করেছেন ওই গরীব রিক্সাচালক। আগের বছর মিনতির স্বামী কিডনি বিকল হয়ে মারা গিয়েছেন। চলতি বছরে তাঁর একমাত্র কন্যা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তারপর থেকেই অন্ধকার নেমে আসে মিনতির জীবনে। খারাপ সময়ে প্রতি মূহুর্তে পাশে ছিলেন ওই রিক্সাচালক।

মিনতি পট্টনায়েক জানিয়েছেন, “আমার স্বামী ও মেয়ের মৃত্যুর পর থেকে আমি মারত্মকভাবে ভেঙে পড়ি। সেই সময় আমার কোনও আত্মীয় আমার পাশে ছিল না। আমি সম্পূর্ণ একা হয়ে গিয়েছিলাম। এই কঠিন সময়ে বুধা ও তাঁর পরিবার আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। বিনিময়ে কোনও কিছু পাওয়ার আশা ছাড়াই তাঁরা আমার দেখভাল করেছে, আমার স্বাস্থ্যের যত্ন নিয়েছে। আমার আত্মীয়দের অনেক সম্পত্তি, আমি তাই বরাবরই চাইতাম মৃত্যুর আগে আমার সম্পত্তি গরীব দুঃখীদের দিয়ে যেতে।”

মিনতি আরও বলেন, “সেই কারণেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আইনত বুধাকে আমার সম্পত্তি দিয়ে যাব, যাতে আমার মৃত্যুর পর কেউ তাদেরকে বিব্রত করতে না পারে। বুধা রিক্সা করে আমার মেয়েকে কলেজে নিয়ে যেত। আমি তাঁকে বিশ্বাস করি। তাঁকে সম্পত্তি দিয়ে আমি কোনও মহৎ কাজ করছি না। এই সম্পত্তি তাঁরই প্রাপ্য।”

জানা গিয়েছে, মিনতির তিন বোনের মধ্যে দুই জন এই সম্পত্তি হস্তান্তরের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু মিনতি তাঁর সিদ্ধান্ত অনড় ছিলেন। তাই আইনের সাহায্য নিয়ে মিনতি সবরকম বন্দোবস্ত করেছেন, যাতে তাঁর মৃত্যুর পর নিয়ম মেনে সব সম্পত্তি বুধার হাতে হস্তান্তরিত হয়।

মিনতিকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করা বুধা জানিয়েছেন “আমি ভাবতেই পারিনি মা আমাকে এত বড় সম্মান দেবেন। আমি দীর্ঘদিন ধরে মায়ের সবরকম খেয়াল রাখার চেষ্টা করেছি। আগামি দিনেই সেটা করে যাব।” জানা গিয়েছে, দু’বছর আগেই বুধা রিক্সাচালকের পেশা ছেড়ে দিয়েছেন এবং মিনতির অনুরোধে তাঁরা বাড়িতে নিজের পরিবারকে নিয়ে থাকা শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন Yogi Adityanath: উন্নয়নের ‘লাইফ লাইন’ হবে পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ে, ভোটমুখী উত্তর প্রদেশে যোগীর প্রতিশ্রুতি