Satyendar Jain: ৯ জুন পর্যন্ত ইডি হেফাজতে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিরোধীদের চাপের মুখেও অনড় কেজরীবাল
Satyendar Jain: মঙ্গলবার (৩১ মে), ইডি হেফাজতে পাঠানো হল দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে। তবে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিবালের দাবি এই মামলাকে ভুয়ো এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
নয়া দিল্লি: মঙ্গলবার (৩১ মে), দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির নেতা সত্যেন্দ্র জৈনকে ৯ জুন পর্যন্ত ‘এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট’ বা ইডির হেফাজতে পাঠানো হল। প্রসঙ্গত, সোমবার (৩০ মে) বিকালেই সত্যেন্দ্র জৈনকে কলকাতার এক সংস্থার সঙ্গে হাওয়ালা লেনদেনে যুক্ত থাকার দায়ে গ্রেফতার করেছিল ইডি। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তরই তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। তবে, এদিনই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীবাল এই মামলাকে ভুয়ো মামলা বলেছেন। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক কারণেই সত্যেন্দ্র জৈনকে নিশানা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে তাঁকে নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিন, আম আদমি পার্টি প্রধান বলেছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে সত্যেন্দ্র জৌনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি খতিয়ে দেখেছেন। তাঁর মতে ইডির দাখিল করা মামলাটি ভুয়ো। দিন কয়েক আগেই দুর্নীতির দায়ে মন্ত্রিসবা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল পঞ্জাবের আপ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। পরে পুলিশ গ্রেফতারও করে তাঁকে। সেই কথা উল্লেখ করে এদিন কেজরীবাল জানান, তাঁর সরকার কোনওরকম দুর্নীতি বরদাস্ত করবে না। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জৈনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটি আমি দেখেছি। একেবারে ভুয়ো এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বিচার ব্যবস্থার উপর আমাদের আস্থা আছে। জৈন সত্যের পথে চলেছেন, সব অভিযোগ থেকে মুক্ত হবেন তিনি।’
সত্যেন্দ্র জৈনের পাশে দাঁড়িয়েছেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়াও। সোমবার সত্যেন্দ্র জৈনের গ্রেফতারির পরই তিনি বলেছিলেন, ‘৮ বছর ধরে একটি ভুয়ো মামলা চলছে সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে’। তাঁর মতে, সত্যেন্দ্র জৈনকে আপ দল আসন্ন হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনের ইনচার্জ করেছে বলেই, তাঁর বিরুদ্ধে ফের এই ‘ভুয়ো মামলা’ নিয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যাতে তিনি হিমাচল প্রদেশে দলের কাজকর্মের দেখভাল করতে না পারেন, সেই উদ্দেশ্যেই সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিজেপিকে একহাত নিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনে পরাজয়ের ভয় পাচ্ছে গেরুয়া শিবির। তবে, সত্যেন্দ্র জৈনকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কেজরীবাল সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি-কংগ্রেস। দিল্লি কংগ্রেসের সভাপতি অনিল কুমার বলেছেন, ‘জৈনকে অনেক আগেই গ্রেফতার করা উচিত ছিল। তবে বছরের পর বছর ধরে তাঁকে রক্ষা করেছেন কেজরীবাল’।
গত এপ্রিলেই, সত্যেন্দ্র জৈন ও তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্যের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলির মোট ৪.৮১ কোটি টাকার সম্পত্তি অস্থায়ীভাবে বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। ইডির তদন্তকারীদের দাবি, ২০১৫-২০১৬ সালে সত্যেন্দ্র জৈন ও তাঁর আত্মীয়দের মালিকানাধীন এবং নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলিতে হাওয়ালা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ৪.৮১ কোটি টাকা ঢুকেছিল। জৈনের মালিকানাধীন এবং নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলি থেকে নগদ অর্থ পাঠানো হত। এর বিপরীতেই কলকাতা থেকে হাওয়ালা অপারেটররা ভুয়ো সংস্থা ব্যবহার করে টাকা পাঠাতো জৈনের সংস্থাগুলিতে। সেই অর্থ ব্যবহার করে দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায় সরাসরি জমি কেনা হয়েছিল এবং কৃষি জমি কেনার জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল।