TV9 Explained: পলিগ্রাফ পরীক্ষা হবে আফতাবের, কী এই পরীক্ষা? মিথ্যা কথা কি ধরা পড়বেই?

Shraddha murder case: দিল্লির শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালার পলিগ্রাফ টেস্ট হবে। কিএই পলিগ্রাফ টেস্ট? কীভাবে হয় এই পরীক্ষা? লাই ডিটেক্টর যন্ত্রকে কি ফাঁকি দেওয়া যায়?

TV9 Explained: পলিগ্রাফ পরীক্ষা হবে আফতাবের, কী এই পরীক্ষা? মিথ্যা কথা কি ধরা পড়বেই?
পলিগ্রাফ টেস্টের মুখে আফতাব
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 21, 2022 | 8:30 PM

নয়া দিল্লি: দিল্লির শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে সোমবারই (২১ নভেম্বর) নার্কো টেস্ট হওয়ার কথা ছিল অভিযুক্ত আফতাব আমীন পুনাওয়ালার। কিন্তু, এদিন ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, নার্কো টেস্টের আগে আফতাবকে পলিগ্রাফ টেস্টের মুখোমুখি হতে হবে। তারপর তার মেডিক্যাল টেস্ট হবে, তারপরই হবে নার্কো টেস্ট। আগামী ১০ দিনের মধ্যেই সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্ব শেষ হবে বলে জানিয়েছে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাব। এদিন দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে দিল্লি হাইকোর্টে আফতাবের পলিগ্রাফ টেস্টের আবেদন করা হয়েছে। কী এই পলিগ্রাফ টেস্ট? কীভাবে কাজ করে এই মিথ্যা ধরার যন্ত্র? আসুন জেনে নেওয়া যাক –

লাই ডিটেক্টর মেশিন

লাই ডিটেক্টর মেশিন বা মিথ্যা ধরার যন্ত্র আবিষ্কার হয়েছিল আজ থেকে ১০১ বছর আগে, ১৯২১ সালে। জন অগাস্টাস লার্সেন তৈরি করেছিলেন এই যন্ত্র। উদ্দেশ্য ছিল যন্ত্রের মাধ্যমে অপরাধীদের সত্য স্বীকার করানো। আমাদের দেশে পলিগ্রাফ টেস্ট, নারকো টেস্ট বা এই জাতীয় যে কোনও পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি লাগে। মামলার গুরুত্বের উপর নির্ভর করে আদালত এই অনুমতি দেয়। আমাদের দেশে এর আগে অনেক সন্ত্রাসবাদী, অপরাধীর পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হয়েছে। আদালতে এই পরীক্ষার বিশেষ গুরুত্ব না থাকলেও, পলিগ্রাফ টেস্ট গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ জোগার করার সহায়ক হয়।

পলিগ্রাফ পরীক্ষা

পলিগ্রাফ পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় যে, প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কোনও ব্যক্তি মিথ্যা বলছে নাকি সত্য বলছে। যখন কেউ মিথ্যা বলে, তখন তার হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ ইত্যাদির পরিবর্তন ঘটে। পলিগ্রাফ পরীক্ষায় সেই শারীরিক পরিবর্তনগুলি ধরা পড়ে। পলিগ্রাফ যন্ত্রে সাধারণত চারটি বিষয় লক্ষ্য করা হয় – শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি, পালস রেট, রক্তচাপ এবং কতটা ঘাম বের হচ্ছে।

কীভাবে কাজ করে লাই ডিটেক্টর যন্ত্র?

পলিগ্রাফ পরীক্ষার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মেডিকেল টেস্ট করা হয়। সেখানে তার স্বাভাবিক হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ, পালস রেট ইত্যাদি যাচাই করা হয়। এরপর, লাই ডিটেক্টর মেশিনের চার বা ছয়টি পয়েন্ট ওই ব্যক্তির বুকে এবং আঙ্গুলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। তারপর তাকে প্রথমে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়। তারপর ধীরে ধীরে সংশ্লিষ্ট অপরাধ সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হয়। এই প্রশ্নগুলির জবাব দেওয়ার সময় মেশিনের স্ক্রিনে মানুষের হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ, পালস রেট ইত্যাদির পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা হয়। উত্তরদাতা মিথ্যা বললে তার হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ, পালস রেট কমে বা বেড়ে যায়। কপালে বা হাতের তালুতে ঘাম জমতে শুরু করে। এর থেকেই বোঝা যায় ওই ব্যক্তি মিথ্যা বলছে। সত্য কথা বললে সমস্ত শারীরিক কার্যকলাপই স্বাভাবিক থাকে।

মিথ্যাবাদীর ভিন্ন সঙ্কেত

ফরেন্সিক সয়েন্স বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও ব্যক্তি যখন মিথ্যা কথা বলে, তখন তার মস্তিষ্ক থেকে পি৩০০ (P300) নামে একটি বিশেষ সংকেত বের হয়। ওই স্নায়বিক সঙ্কেটের জন্যই তার হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ বেড়ে যায়।

পলিগ্রাফ পরীক্ষাকে কি কেউ ফাঁকি দিতে পারে?

সত্যি-মিথ্যা ধরার জন্য লাই ডিটেক্টর মেশিন মানব শরীরের পরিবর্তনগুলি পরিমাপ করে। কাজেই যদি কোনও ব্যক্তি তার হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ, পালস রেট এবং ঘাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তবে তার মিথ্যা পলিগ্রাফ পরীক্ষায় ধরা যাবে না। কিন্তু এই কারণেই পলিগ্রাফ টেস্ট পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবে অধিকাংশ মানুষেরই নিজের শরীরের উপর এতটা নিয়ন্ত্রণ থাকে না।