Shraddha Walkar Murder Case: ‘আমাকে মেরে টুকরো টুকরো করে ফেলবে…’, ২ বছর আগেই থানায় জানিয়েছিলেন শ্রদ্ধা, এবার স্ক্যানারে পুলিশও

Shraddha Walker Murder Case : মুম্বইয়ের ভাসাই পুলিশকে আফতাবের অত্যাচারের কথা চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। সেখানে তাঁকে খুন করে টুকরো টুকরো করে ফেলার হুমকির কথাও উল্লেখ করেছিলেন শ্রদ্ধা।

Shraddha Walkar Murder Case: ‘আমাকে মেরে টুকরো টুকরো করে ফেলবে…’, ২ বছর আগেই থানায় জানিয়েছিলেন শ্রদ্ধা, এবার স্ক্যানারে পুলিশও
একটা ডেটিং অ্যাপ। এক তরুণ-তরুণীর প্রেম। এক ছাদের তলায় জীবনযাপন। সবই ঠিক চলছিল। কিন্তু সেই কাহিনির ক্লাইম্য়াক্স? হার মানিয়ে দিয়েছে বলিউডের থ্রিলারকে।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 23, 2022 | 1:43 PM

নয়া দিল্লি : দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়াকার (Shraddha Walker) খুনের ঘটনা নিয়ে এখন তোলপাড় গোটা দেশ। আফতাব পুনাওয়ালা (Aftab Poonawalla) লিভ পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে শ্বাসরোধ করে খুন করে গত ১৮ মে। তারপর তাঁকে ৩৫ টুকরোয় কেটে তা ছাতারপুরের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে দেয়। খুনের প্রায় ছয় মাস পরে এই হাড়হিম করা ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এবার এই ঘটনার তদন্ত শুরু হতেই পুলিশের হাতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এবার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’ বছর আগেই এরকম পরিণতির আন্দাজ করতে পেরেছিল শ্রদ্ধা ওয়াকার।

বুধবার তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দু’ বছর আগেই আফতাবের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। ফ্ল্যাটে শ্রদ্ধার উপর আফতাব শারীরিক অত্যাচার চালাত বলে অভিযোগ। এমনকী তাঁকে মারার চেষ্টাও করেছিল আফতাব। মহারাষ্ট্রের ভাসাইতে এই মর্মে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শ্রদ্ধা। তিনি জানিয়েছিলেন, আফতাবের পরিবারও সেই সম্পর্কে অবগত ছিল। দিল্লি পুলিশের হাতে এই তথ্য উঠে আসার পরে এক অন্য মোড় নিল শ্রদ্ধা খুনের তদন্ত। এদিকে দিল্লিতে বর্তমানে আফতাবের বাবা-মায়ের ও শ্রদ্ধার সহকর্মী করণের বক্তব্য রেকর্ড করছে পুলিশ।

দিল্লি পুলিশের তরফে এখন এই লিখিত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর ভাসাই পুলিশ এই অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ করেছিল কি না তাও দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, তদন্তে নেমেই পুলিশের কাছে শ্রদ্ধার উপর আফতাবের অত্যাচারের বিষয়ে নানান তথ্য উঠে এসেছিল। জানা গিয়েছিল, শ্রদ্ধা তাঁর সহকর্মী ও বন্ধুদের ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে আফতাবের অত্যাচারের কথা জানিয়েছিলেন। এই কথোপকথন ও পুলিশের কাছে করা অভিযোগের সময়ও মিলে যাচ্ছে। শ্রদ্ধা সেই সময় তাঁর বন্ধু তথা সহকর্মীকে নিজের আঘাতপ্রাপ্ত চেহারার ছবিও পাঠিয়েছিলেন। এমনকী অভ্যন্তরীণ ক্ষত নিয়ে তাঁকে একবার হাসপাতালে ভর্তিও হতে হয়েছিল। ভাসাই পুলিশকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ‘আজ আমায় শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করেছিল ও (আফতাব)। ও আমাকে ভয় দেখায় এবং হুমকি দেয় যে আমায় প্রাণে মেরে টুকরো টুকরো করে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। গত ৬ মাস ধরে ও আমার উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। কিন্তু আমার সরাসরি পুলিশ স্টেশনে যাওয়ার ক্ষমতা নেই।’ সেই চিঠিতে শ্রদ্ধা আরও লিখেছিলেন, ‘ওর বাবা-মা জানতেন ও আমাকে মারে এবং আমাকে খুনও করতে চায়। তাঁরা জানেন আমরা একসঙ্গে থাকছি। সপ্তাহান্তে তাঁরা মাঝে মাঝে এখানে আসেনও।’ সেই চিঠিতেই শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন, তাঁদের বিয়েতে আফতাবের সম্মতি ছিল। খুব তাড়াতাড়ি যেকোনও সময় তাঁদের বিয়ে হতে পারে বলেই শ্রদ্ধা তখনও আফতাবের সঙ্গে ছিলেন। তবে চিঠির শেষে শ্রদ্ধা লিখেছিলেন,’আমি ওঁর সঙ্গে থাকতে চাই না। তাই আমার কোনওরকম ক্ষতি হলে তার পিছনে একমাত্র আফতাবই থাকবে। কারণ ও আমাকে যখনই যেখানে দেখে শুধু মারার হুমকি দেয়।’

২০১৯ সালে ডেটিং অ্যাপে পরিচয় হয়েছিল আফতাব ও শ্রদ্ধার। তারপর ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে সম্পর্কে গড়ে ওঠে। গত মে মাসে দিল্লিতে এসে বাড়ি ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে বসবাসও শুরু করে তারা। আর ২০২০ সাল নাগাদই আফতাবের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ করেন শ্রদ্ধা। তবে এত অত্যাচার ও খুনের হুমকির পরও দু’জন সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। আর শ্রদ্ধার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর দেড় বছরের মধ্যেই আফতাবের হাতে খুন হতে হল শ্রদ্ধাকে। খুন প্রকাশ্যে আসার পর প্রথমে পুলিশের কাছে, তারপর আদালতের কাছে এই খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে।