Judge JB Pardiwala: ‘বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে দেশ’, সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধান জারির আহ্বান জানালেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি

কোনও মামলার রায়দানের জন্য, সেই মামলার বিচারকদের ব্যক্তিগত আক্রমণের তীব্র নিন্দা করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা। সোশ্যাল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোর বিধান জারির আহ্বানও জানালেন।

Judge JB Pardiwala: 'বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে দেশ', সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধান জারির আহ্বান জানালেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি
বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 04, 2022 | 4:28 PM

নয়া দিল্লি: কোনও মামলার রায়দানের জন্য, সেই মামলার বিচারকদের ব্যক্তিগত আক্রমণের তীব্র নিন্দা করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা। রবিবার (৩ জুলাই) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘রায়দানের জন্য বিচারকদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করা, দেশকে এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যায়’। সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে একাংশের মানুষ দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে থাকেন, তা নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোর বিধান জারির আহ্বান করেছেন তিনি। বিচারপতি আরও বলেছেন, ‘মিডিয়া ট্রায়াল’, অর্থাৎ, কোনও বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে কাটাছেঁড়া ‘আইনের শাসনের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়’। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবারই বিতর্কিত মন্তব্য করে বরখাস্ত হওয়া প্রাক্তন বিজেপি মুখপাত্রকে আদালতে মৌখিকভাবে তিরস্কার করেছিলেন বিচারপতি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি সূর্য কান্ত। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় দুজন বিচারপতিকেই আক্রমণ করা হয়েছিল।

বিচারপতি পর্দিওয়ালার মতে, ‘অর্ধেক সত্য এবং তথ্য’ নিয়ে চর্চাকারী এবং যারা আইনের শাসন, প্রমাণ, বিচার প্রক্রিয়া এবং বিচার ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা বোঝেন না, এমন মানুষেই ছেয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। তিনি বলেন, ‘কোনও বিচার পরিচালনা করার কথা আদালতের। ডিজিটাল মিডিয়ায় বিচার, বিচার বিভাগের জন্য অযথা হস্তক্ষেপ। এটা এখন লক্ষ্মণ রেখাকে অতিক্রম করে গিয়েছে। যখন কেউ শুধুমাত্র অর্ধেক সত্যকে অনুসরণ করেন, তখন সমস্যা আরও বেশি হয়। সাংবিধানিক আদালত সর্বদা ভিন্নমত এবং গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণ করেছে।’

কিন্তু, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচারকদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করা কোনও গঠনমূলক সমালোচনা নয়। বরং, সেগুলি একেবারেই ব্যক্তিগত মত। বিচারপতি পর্দিওয়ালা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বিচারকদের রায়ের গঠনমূলক সমালোচনামূলক মূল্যায়নের পরিবর্তে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচারকদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করা হয়। এটাই বিচারিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করছে এবং এর মর্যাদা হ্রাস করছে। এখানেই আমাদের সংবিধানের অধীনে আইনের শাসন রক্ষার জন্য সারা দেশে ডিজিটাল এবং সোশ্যাল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির ‘অসীম শক্তি’ নিয়েও মুখ খুলেছেন বিচারপতি পর্দিওয়ালা। তাঁর মতে, বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই প্ল্যাটফর্মে কাউকে অপরাধী বা কাউকে নির্দোষ বলে প্রচার করা শুরু হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তিনি বলেন, ‘এমনকি বিচার শেষ হওয়ার আগেই, সমাজ বিচারিক কার্যক্রমের ফলাফলকে বিশ্বাস করতে শুরু করে। বিশেষ করে বিচারাধীন স্পর্শকাতর মামলাগুলির ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধান প্রবর্তনের কথা বিবেচনা করতে হবে সংসদকে।’

বিচারপতি পর্দিওয়ালা আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র হিসেবে ভারতকে এখনও সম্পূর্ণ পরিপক্ক বলা যায় না। এই দেশে বিশুদ্ধভাবে আইনি এবং সাংবিধানিক বিষয়গুলির রাজনীতিকরণ করার জন্য সর্বদাই সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা হয়। আইনের শাসনই ভারতীয় গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য। জনমতও আইনের শাসনের অধীনেই থাকা উচিত। আমরা অধিকার রক্ষা করে থাকি। মানুষ যা পছন্দ করেন না, আমাদের সেইসব জিনিসও বলতে হয়। বিচার বিভাগের রায় জনমতের দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে না।’