বাণিজ্যে বাইডেন কি ট্রাম্পেরই অন্য রূপ? ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা বিশেষজ্ঞ মহলে

ট্রাম্পের মতো বাইডেনও 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতিতেই হাঁটবেন।

বাণিজ্যে বাইডেন কি ট্রাম্পেরই অন্য রূপ? ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা বিশেষজ্ঞ মহলে
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 21, 2020 | 11:51 AM

TV9 বাংলা ডিজিটাল: পরবর্তী ৪৬ তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন জো বাইডেন (Joe Biden)। ট্রাম্পের বিদায় কার্যত নিশ্চিত। কিন্তু বাইডেন এলে তার কতটা প্রভাব পড়বে ভারতীয় বাজারে? ট্রাম্প আমলে ভারতীয় বাজারে যে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ’ তৈরি হয়েছে তাতে বড় কোনও বদল আসবে? ভারত ও আমেরিকার মধ্যে কি আদৌ কোনও বাণিজ্য চুক্তি হবে? বিশেষজ্ঞরা এই প্রশ্নের উত্তরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, আমেরিকা সর্বোপরি আমেরিকার স্বার্থ দেখে তবেই বিনিয়োগে নামবে। তার জন্য ভারতের সঙ্গে কম লেনদেনের নীতিতেও হাঁটতে পারে হোয়াইট হাউস। এমনই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

ট্রাম্প আমলের একাধিক নীতির সমালোচনা করেছেন জো বাইডেন। বাণিজ্যে নীতি থেকে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংঘাত সবেতেই ভিন্ন সুর বাইডেনের গলায়। সে ক্ষেত্রে আদৌ কি বাইডেনে লক্ষ্মী লাভ করবে ভারত? এই প্রশ্নও মাথা উঁচিয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার জল্পনা ট্রাম্প আমল থেকেই। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রী পীযুষ গয়াল গত কয়েক মাস ধরে বলে যাচ্ছেন দুই দেশই চুক্তির জন্য প্রস্তুত। কিন্তু চুক্তি হচ্ছে কোথায়! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প আমলে চুক্তির শর্ত ও বাইডেন আমলে চুক্তির শর্তে বিস্তর ফারাক থাকতে পারে।

আমেরিকা-ভারত স্ট্যাটেজিক পার্টনারসিপ ফোরামের প্রেসিডেন্ট ডঃ মুকেশ অঘি অবশ্য চুক্তি না হওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না। তাঁর কথায়, ভারতে মার্কিন কোম্পানিগুলির বিনিয়োগের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেছেন, “বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার জায়গায়, অন্য দিকে বাইডেন প্রশাসনকে সফলতা দেখাতে হবে। তাই জলবায়ু চুক্তি বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় ফেরার মতো ভারতের সঙ্গেও চুক্তি করবেন বাইডেন। যাতে সব দেশকেই একটা বার্তা পাঠাতে পারেন তিনি।”

মুকেশ জানিয়েছেন, বাইডেন অনেক ভেবে পদক্ষেপ করবেন। সে ক্ষেত্রে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংঘাত থামিয়ে তাদের সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটতেও পারেন তিনি। কারণ বেশির ভাগ সংস্থাই চিন থেকে দফতর গুটিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের মাধ্যমে লাভ তুলতে চাইবেন বাইডেন।

তবে বিশেষজ্ঞরা এ-ও বলছেন যে বাইডেন এলে ট্রাম্প জমানার খুব একটা পরিবর্তন হবে না। ট্রাম্পের মতো বাইডেনও ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতেই হাঁটবেন। আর বাণিজ্য চুক্তি প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য হবু প্রেসিডেন্ট নিজেই বিদেশনীতি সম্পর্কে “হোয়াই আমেরিকা মাস্ট লিড এগেনে” লিখেছেন যতক্ষণ না আমেরিকা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার করছে ততদিন কোনও নতুন বাণিজ্য চুক্তি করবে না হোয়াইট হাউস।

আরও পড়ুন: ভারতকে প্রতিদ্বন্দ্বীর নজরে দেখছে বেজিং! ‘চিন বিরোধিতা’র চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনলেন ট্রাম্প

অর্থাৎ ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি আদৌ হবে কি হবে না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। তবে হোয়াইট হাউসের মসনদে বসার পর ট্রাম্পের থেকে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে বাণিজ্য নীতি নির্ধারন করবেন বাইডেন, এমনটা না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, প্রচারে বাইডেন বলেছিলেন, “বায় আমেরিকান” অর্থাৎ আমেরিকাবাসীদের উপর বিনিয়োগ যা ট্রাম্পের “মেক আমেরিকা গ্রেট এগেনের” পরোক্ষ সমার্থক শব্দ। প্রেসিডেন্ট থাকালীন ট্রাম্প অধিক শুল্ক চাপানোর জন্য ভারতকে “শুল্ক রাজার” অপবাদ দিয়েছেন। বাইডেনও হয়তো ভারতের নাম না করেই এভাবে সওয়াল করতে পারেন! ওয়াকিবহাল মহল এই আশঙ্কাও ফেলে দিচ্ছে না।