Child Marriage Case: কারও বৌমা অন্তঃসত্ত্বা, ছেলে জেলে; অসমে ২ হাজার জনের গ্রেফতারে রাস্তায় মহিলারা
Assam: অসম পুলিশ জানিয়েছে, নাবালিকা বিবাহের ব্যাপারে অসমে গ্রেফতার করা হয়েছে ২ হাজার ২৫৮ জনকে। চার হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছে।
গুয়াহাটি: বাল্য বিবাহের অভিযোগে ইতিমধ্যেই অসমে গ্রেফতার হয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি জন। অসম সরকারের এই পদক্ষেপর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছেন প্রচুর মহিলা। নিজেদের স্বামী, পুত্রদের গ্রেফতারির প্রতিবাদ করেই পথে নেমেছিলেন তাঁরা। মহিলাদের এই প্রতিবাদ ঘিরে শনিবারক ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয় অসমের ধুবরি জেলায়। সে জেলার তামারা থানার বাইরে নিজের পরিজনদের মুক্তির দাবিতে ভিড় জমিয়েছিলেন প্রচুর মহিলা। প্রতিবাদরত মহিলাদের হঠাতে লাঠিও চার্জ করেছে পুলিশ। তবে শুধু ধুবরি জেলায় নয়, মাজুলি, বারপেটা, কোকরাঝাড়, বিশ্বনাথের মতো একাধিক জেলায় প্রতিবাদ দেখিয়েছেন মহিলা। আন্দোলনরত মহিলাদের অভিযোগ, বাল্য বিবাহের অভিযোগে তাঁদের পরিজনদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর জেরে রোজগারহীন হয়ে পড়েছে তাঁদের পরিবার। ধৃতদের মুক্তির দাবিতেই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ওই মহিলারা।
এ ব্যাপারে মাজুলি জেলায় প্রতিবাদে সামিল হওয়া ৫৫ বছরের নিরোদা দোলে সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে বলেছেন, “কেন শুধু ছেলেদের গ্রেফতার করা হচ্ছে? আমরা এবং আমাদের সন্তানদের কী ভাবে চলবে? আমাদের রোজগারের আর কোনও উপায় নেই।” বারপেটা জেলায় প্রতিবাদে নামা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে এক নাবালিকার সঙ্গে পালিয়েছিল। এই অভিযোগে তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, “আমার ছেলে ভুল করেছে। কিন্তু আমার স্বামীকে কেন গ্রেফতার করা হল?” মোরিগাঁওয়ের মোনোওয়ারা খাতুন নামের এক মহিলা বলেছেন, “আমার বউমার বয়স যখন ১৭ ছিল তখন বিয়ে হয়েছিল। এখন তার বয়স ১৯ বছর। সে অন্তঃসত্ত্বা। ছেলেকে জেলে ভরলে ওর দেখাশোনা করে করবে?”
এই সমস্ত প্রশ্ন তুলেই প্রতিবাদে নেমেছিলেন গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের বাড়ির মহিলারা। প্রতিবাদকারীদের হঠাতে লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এক সিআরপিএফ জওয়ান আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ধুরবি জেলার পুলিশ সুপার অপর্ণা এন। তিনি বলেছেন, “আন্দোলনকারীদের কেউ আহত হননি। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।” অসম পুলিশ জানিয়েছে, নাবালিকা বিবাহের ব্যাপারে অসমে গ্রেফতার করা হয়েছে ২ হাজার ২৫৮ জনকে। চার হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো আইন এবং চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট, ২০০৬-এর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অসম পুলিশ জানিয়েছে নাবালিকা বিবাহে অভিযুক্ত প্রায় ৮ হাজার জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সকলের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এমনকি নাবালিকা বিবাহে জড়িত ৫২ জন পুরোহিত, কাজিদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে।
অসম পুলিশের ডিরেক্টর জেনারাল অব পুলিশ জিপি সিং বলেছেন, “২ মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা পুলিশকে বলেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নাবালিকা বিবাহ বাড়ছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো আমরা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করি। জেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তালিকা তৈরি করা হয়। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই নাবালিকা বিবাহ রুখতে আগামী দিনেও কড়া নজরদারি চলবে।”