Yashwant Sinha: ‘কেউ আমার সঙ্গে কথা বলেনি’, বাকি জীবন ‘নির্দল’ থাকবেন যশবন্ত
Yashwant Sinha: আর কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন না। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী দলগুলির যৌথ প্রার্থী হয়ে পরাজয়ের পর, সাফ জানালেন যশবন্ত সিনহা।
নয়া দিল্লি: আর কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন না। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই), সাফ জানালেন যশবন্ত সিনহা। অতি সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী দলগুলির যৌথ প্রার্থী হয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবে, নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে তিনি কোনও লড়াই দিতে পারেননি। তিন রাউন্ডেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ের প্রয়োজনীয় ভোটমূল্য পেয়ে গিয়েছিলেন দ্রৌপদী। রাষ্ট্রপতি পদ প্রার্থী হওয়ার আগে তৃণমূল কংগ্রেস দলের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন যশবন্ত। মঙ্গলবার, সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে তিনি জানিয়েছেন, “আমি আর কোনও পার্টিতে যোগ দেব না, নির্দল হিসেবেই থাকব।”
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন যশবন্ত সিনহা। পরে, দলের সহ-সভাপতিও করা হয়েছিল তাঁকে। বিরোধীদের যৌথ রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম অনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার আগে তিনি দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। টুইট করে তিনি বলেছিলেন, “বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে দল থেকে সরে বৃহত্তর বিরোধী ঐক্যের লক্ষ্যে কাজ” করতে চান। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পরাজয়ের পরও জনজীবনে কাজ করার লক্ষ্য থেকে তিনি সরে আসেননি বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবে বাধ সাধতে পারে তাঁর বয়স, এমনটাই মনে করছেন ৮৪ বছরের যশবন্ত। তিনি বলেছেন, “দেখতে হবে জনজীবনে আমি কী ভূমিকা পালন করতে পারি, আমি কতটা সক্রিয় থাকতে পারি। আমার এখন ৮৪ বছর বয়স, তাই এইগুলি বিষয়গুলি নিয়ে ভাবতেই হবে। দেখতে হবে আমি কতদিন কাজ চালিয়ে যেতে পারি।”
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি তাঁর। এমনটাই দাবি করেছেন ঘাসফুল শিবিরের প্রাক্তন সহ-সভাপতি। তবে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত স্তরে যোগাযোগ রয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে যশবন্ত বলেছেন, “কেউ আমার সঙ্গে কথা বলেননি। আমিও কারোর সঙ্গে কথা বলিনি। তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ রয়েছে।”
অতীতে দুইবার দেশের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন যশবন্ত সিনহা। প্রথমবার, ১৯৯০ সালে চন্দ্রশেখর মন্ত্রীসভার অর্থমন্ত্রী হয়েছিলেন যশবন্ত। এরপর অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলেও আরও একবার অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। পরে অল্প সময়ের জন্য বিদেশমন্ত্রীও হয়েছিলেন। জীবনের বেশিরভাগ সময়েই তিনি বিজেপি নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে জনতা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৮, ৯৯ এবং ২০০৯ – তিনবার হাজারিবাগ লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। বিজেপির সহ-সভাপতিও হয়েছিলেন। পরে পদ ছেড়ে দিলেও দলের সদস্য ছিলেন।
তবে, দলে ক্রমে মোদী-শাহ জুটির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে বিরোধ বাড়তে শুরু করেছিল যশবন্তের। ২০১৮ সালে তিনি দল ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে, মোদী-শাহ জুটির কড়া সমালোচনা করা শুরু করেছেন তিনি। ২০১৯ সালে মোদী সরকারের অর্থনৈতিক নীতির বিরোধিতা করে ‘ইন্ডিয়া আনমেড’ নামে একটি গ্রন্থও লিখেছিলেন।