Weather Update: জাওয়াদ-ঝঞ্ঝায় চিত্‍পাত, পাশ মার্ক পেল না ডিসেম্বরের শীত!

Brief Winter in December: বছরের শেষ দিনে অবশ্য ঝঞ্ঝা-কাঁটা সরেছে। রোদ উঠেছে। বইছে শুকনো বাতাস। তাপমাত্রাও নেমেছে। এ বার কি জাঁকিয়ে শীতের আশা রাখা যেতে পারে?

Weather Update: জাওয়াদ-ঝঞ্ঝায় চিত্‍পাত, পাশ মার্ক পেল না ডিসেম্বরের শীত!
রাজ্যবাসীর মন ভরাতে পারবে শীত? ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 31, 2021 | 8:55 PM

ক ম লে শ চৌ ধু রী

বছরের শেষ দিনে শীত ফিরেছে। মৃদু শীতের ছোঁয়া, কিছুটা সান্ত্বনার মতো। তাতেই খুশি আমজনতা।

খুশি না হয়ে উপায়-ই বা কী! ঠান্ডার মাস ডিসেম্বরে মন ভরাতে পারল কই শীত?

না, পারেনি। অনুভূতিতে টের পেয়েছেন শীতপ্রেমীরা। একই কথা বলছে পরিসংখ্যানও।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য বলছে, গোটা ডিসেম্বর মিলিয়ে কলকাতার রাতের তাপমাত্রার গড় থাকল স্বাভাবিকের উপরেই। কত বেশি? আলিপুরের পরিসংখ্যান, সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় দাঁড়িয়েছে ১৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বাভাবিক ১৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, অর্থাত্‍ স্বাভাবিকের চেয়ে ১.২ ডিগ্রি বেশি। শীতে তো তাপমাত্রা কম থাকবে, হল বেশি! অধরা পাশ মার্কই। কেন বেশি হল? উত্তর সহজ। ৩১ দিনের মাসে ১৮ দিনই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের উপরে। ১৩ দিন পারদ ছিল স্বাভাবিক বা তার নীচে।

শীতের শুরুতে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মৌসম ভবনের আবহবিদরা। পূর্বাভাসে ইঙ্গিত ছিল, একটানা শীতের আশা না করাই ভাল। সেই পূর্বাভাসে সিলমোহর প্রকৃতির। কলকাতা তথা বাংলার কথা ধরা যাক। ডিসেম্বরের প্রথম ১২ দিনই রাতের তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের উপরে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও পৌঁছে যায় দু’দিন। নেপথ্যে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। সাগরে দুর্বল হলেও যার কুনজর থেকে রেহাই পায়নি বাংলা। ২৪ ঘণ্টায় ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় হুগলির তারকেশ্বরে। ১৯৮১ সালের পর ডিসেম্বরে ভারী বৃষ্টি আলিপুরে। চাষে বিপুল ক্ষতি, ধাক্কা শীতের চেনা চরিত্রেও।

১৩ ডিসেম্বর থেকে কপাল খোলে ঠান্ডার। নামতে শুরু করে তাপমাত্রা। মাঝ-ডিসেম্বরেই বাংলার দুয়ারে শীত। ২০ ডিসেম্বর শীতলতম দিন। কলকাতার তাপমাত্রা নেমে যায় ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শৈত্যপ্রবাহ থাবা বসায় পশ্চিমাঞ্চলে। সবাইকে পিছনে ফেলে রাজ্যের সমতলে শীতলতম স্থানের তকমা পায় নদিয়ার কল্যাণী। তাপমাত্রা নামে ৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শ্রীনিকেতনের তাপমাত্রা নামে ৭.১ ডিগ্রিতে। পাহাড়ি কালিম্পংকেও পিছনে ফেলে দেয় সমতলের দুই জায়গা। কিন্তু জাঁকিয়ে শীতের দাপট বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। বাধার পাহাড় নিয়ে হাজির হয় পশ্চিমী ঝঞ্ঝা।

একটি নয়, পরপর তিনটি। ২২ ডিসেম্বর প্রথমটি, ২৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয়টি, ২৬ ডিসেম্বর তৃতীয়টি। এবং এই তৃতীয়টিই সবচেয়ে শক্তিশালী। এর প্রভাবেই বৃষ্টি হয়েছে দিল্লি থেকে কলকাতায়। বরফ পড়েছে গুলমার্গ থেকে দার্জিলিংয়ে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে উধাও হয়েছে শীত। হিমেল হাওয়ার বদলে প্রাপ্তি হয়েছে জোলো বাতাস।

মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘টানা ঠান্ডা পেতে হলে দুই ঝঞ্ঝার মধ্যে সময়ের ফারাক থাকতে হয়। সেই জন্যই ১৩ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর একটানা শীতের আমেজ পেয়েছে কলকাতা। কিন্তু দু’টি ঝঞ্ঝার মধ্যে সময়ের ফারাক না-থাকলে তাপমাত্রা নামার সময় পায় না। সেটাই গত ক’দিনে হয়েছে।’

বছরের শেষ দিনে অবশ্য ঝঞ্ঝা-কাঁটা সরেছে। রোদ উঠেছে। বইছে শুকনো বাতাস। তাপমাত্রাও নেমেছে। এ বার কি জাঁকিয়ে শীতের আশা রাখা যেতে পারে?

না, এখনই নয়। নেপথ্যে, আবার এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, ৪-৭ জানুয়ারির মধ্যে জোরালো ঝঞ্ঝা হাজির হবে। তার প্রভাবে দুর্যোগের মুখে পড়তে পারে জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ। বৃষ্টি হতে পারে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম, মধ্য, এমনকী পূর্ব ভারতেও। বাংলা শীতের জন্য চেয়ে থাকে উত্তরের দিকে। সেখানেই যদি উত্তর-পশ্চিমী বাতাস দুর্বল হয়, তাহলে পড়ে থাকে কি? শীত-হারানো আক্ষেপ!

আরও পড়ুন: Covid Update: সংক্রমণের লম্ফঝম্প! আজ রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ৩ হাজার পার, কলকাতাতেই ২ হাজার ছুঁই ছুঁই