Sovan-Baishakhi: ঘাসফুলে ফের কানন? নবান্নে মমতার সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর বৈঠক ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে

Sovan Chattopadhyay: স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা। বৈশাখীর সঙ্গে প্রেম। রাজনীতি থেকে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি-তে যোগদান করেও রাজনীতির মূলধারায় ফেরা হয়নি শোভনের।

Sovan-Baishakhi: ঘাসফুলে ফের কানন? নবান্নে মমতার সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর বৈঠক ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
মমতার সঙ্গে বৈঠকে শোভন-বৈশাখী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 22, 2022 | 6:56 PM

কলকাতা: ফের খবরের শিরোনামে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নাচ-গান বা প্রেমকাহিনি নয়। ফের রাজনীতির আঙিনায় এই জুটির প্রত্যাবর্তন নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটে নাগাদ শোভন এবং বৈশাখীকে দেখা যায় নবান্নে ঢুকতে। এর পরই এ বিষয়ে গুঞ্জন চরমে উঠেছে।  সূত্রের খবর, মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতেই নবান্নে গিয়েছেন শোভন-বৈশাখী। মুখ্যমন্ত্রীও দেখা করার জন্য সময় দিয়েছেন। এই বৈঠকেই শোভন-বৈশাখীর তৃণমূলে যোগদান নিশ্চিত হতে পারে বলে খবর। তাহলে ফের পুরনো দলে প্রত্যাবর্তন হবে কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের।

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন শোভন এবং বৈশাখী। বিভিন্ন বিষয়ে মমতার সঙ্গে আলোচনা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। শোভন বলেছেন, “ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিজের। কিন্তু ছোট থেকে আজ অবধি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মমতাদির চিন্তা-ভাবনা বাস্তবায়িত করাটাই আমার কর্তব্য বলে মনে করি। আমার রাজনৈতিক জীবন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রিক।” তৃণমূলে কবে ফিরছেন, তা স্পষ্ট না করে না বললেও, শোভন যে ফিরতে চলেছেন সেই ইঙ্গিতও মিলেছে শোভনের কথায়। রাজনীতিতে শোভনের অনেক কিছু দেওয়ার আছে বলে মনে করেন তাঁর বান্ধবী বৈশাখী। দিদি-ভাইয়ের নানান রকম কথাবার্তা পাশ থেকে শুনে যে তাঁর খুব ভাল লেগেছে বলেও জানিয়েছেন বৈশাখী।

তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা হিসাবেই পরিচিত ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কলকাতার মেয়রের পাশাপাশি রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলতেন, কানন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কাছের লোক’। কিন্তু সেই কাননেই একটু একটু করে শুকিয়ে যাচ্ছিল ঘাসফুল। রাজনীতিক শোভন থেকে প্রেমিক শোভনে রূপান্তরই ঘাসফুলের থেকে একটু একটু করে দূরে সরিয়ে দেয় তাঁকে। ইতিমধ্যে বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্যায়ের প্রেম। স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা। সবমিলিয়ে হারিয়ে যেতে বসেছিলেন রাজনীতির ময়দানের পরিচিত শোভন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বদলে শোভনের ব্যক্তিগত জীবনই বার বার করে উঠে আসতে থাকে সংবাদমাধ্যমে।

রাজনীতি থেকে শোভন যখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিলেন, তখনই তাঁকে টেনে নেয় পদ্মশিবির। ২০১৯ সালের অগস্টে  বিজেপি-তে যোগদান করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে একা নন। বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়েই বিজেপি-তে যোগ দেন তিনি। তার পর তৃণমূলের বেশ কিছু কাজের সমালোচনাও শোনা গিয়েছিল শোভনের মুখে। যদিও গেরুয়াশিবিরের মোহ খুব দ্রুতই ভঙ্গ হয় শোভন-বৈশাখী জুটির। বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্ব আসনটি চেয়েছিলেন শোভন। ওই কেন্দ্র থেকেই তিনি একাধিক বার বিধায়ক হয়েছিলেন। বান্ধবী বৈশাখীর জন্যও বিধানসভায় আসন চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এই দাবি বিজেপি না মানতেই মোহভঙ্গ হয় তাঁদের। শোভনকে বেহালা পশ্চিম থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছিল। কিন্তু বেহালা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র তাঁকে লড়ার সুযোগ দেয়নি। অন্য দিকে বৈশাখীকেও প্রার্থী করেনি পদ্মশিবির। এর পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন শোভন-বৈশাখী জুটি। গত বিধানসভা ভোটেও নিষ্ক্রিয় ছিলেন তাঁরা। যদিও এর মধ্যে তাঁদের প্রেমপর্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিস্তর। সেই শোভন-বৈশাখীর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।

এই বৈঠকের পর যোগাযোগ করা হয়েছিল রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বাবা তথা মহেশতলার তৃণমূল বিধায়ক দুলাল দাসের সঙ্গে। দুলাল বলেছেন, “এ ব্যাপারে আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোনও মন্তব্য করব না। তবে দিদি যা মনে করবেন, তা দলের সিদ্ধান্ত। দলের উপরে তো কেউ নয়।”