
কলকাতা: বেঁধে দেওয়া হল সময়। ১০০ দিনের কাজ শুরু নিয়ে তৎপর হাইকোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালতের থেকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেতেই কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল। বকেয়া টাকা নিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে এক মাসের সময় বেঁধে দিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।
দীর্ঘ টালবাহানা কাটিয়ে সম্প্রতি ১০০ দিনের কাজ শুরু ও বছর ধরে আটকে থাকা ‘প্রাপ্য’ টাকার মামলায় সুপ্রিম কোর্টে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে রাজ্য। কেন্দ্রের অভিযোগ ছিল, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মোট ৫ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান, মালদহ, হুগলি-সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় সমীক্ষা করে দুর্নীতির সাক্ষ্য প্রমাণও তুলে ধরেছিল তাঁরা। বন্ধ রেখেছিল ১০০ দিনের কাজের জন্য বরাদ্দ টাকা।
অন্যদিকে, দুর্নীতি অভিযোগকে নস্যাৎ করেই সরব হয়েছিল রাজ্য। শাসকশিবিরের অভিযোগ, কেন্দ্র রাজ্যের পাওনা টাকা আটকে রেখেছে। যার জেরে দীর্ঘদিন ধরে বাংলায় ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। রোজগার হারিয়েছেন বহু মানুষ। এই পরিস্থিতিতে দুই পক্ষের বিবাদ ওঠে উচ্চ আদালতে। রাজ্যের পক্ষেই রায়দান করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।
কোনও প্রকল্পকে দিনের পর দিন ‘ঠান্ডা ঘরে বন্দি রাখা যায় না’ বলেই পর্যবেক্ষণ তাঁর। পাশাপাশি, দুর্নীতির তদন্ত চলতে পারে, কিন্তু প্রকল্প চালু রাখতে হবে বলেই নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এরপরই সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় কেন্দ্র। কিন্তু সেখানে গিয়েও জোটে অস্বস্তি। কেন্দ্রের আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার ডিভিশন বেঞ্চ।
এরপর শুক্রবার নতুন করে কেন্দ্রকে ১০০ দিনের কাজ চালু করার প্রসঙ্গ স্মরণ করিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ। অবিলম্বে কাজ শুরু করতে হবে বলেই নির্দেশ প্রধান বিচারপতি বেঞ্চের। পাশাপাশি, রাজ্য়ের যে টাকা পাওয়ার কথা অর্থাৎ বকেয়া নিয়েও এক মাসের মধ্যে কেন্দ্রকে একটি হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর এই গোটা প্রক্রিয়ায় কোনও অসুবিধা নেই বলেই আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্র। এদিন তাঁদের আইনজীবী বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শুরু করতে কোন অসুবিধা নেই।’