Na Bollei Noy: অনুব্রত গ্রেফতার হতেই পথে বিজেপি, আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রাখতে পারবে পদ্মশিবির?

রাস্তায় যে তর্জন-গর্জন করেছেন বিজেপি নেতারা, কিন্তু, এসবের সুফল ঘরে তুলতে গেলে তো লাগাতার আন্দোলনে থাকতে হবে!

Na Bollei Noy: অনুব্রত গ্রেফতার হতেই পথে বিজেপি, আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রাখতে পারবে পদ্মশিবির?
'না বললেই নয়' দেখুন TV9 বাংলায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 12, 2022 | 5:57 PM

কলকাতা: তিল কে তাল বানানো। কথাটা আমরা হামেশাই শুনি। হিটলারের প্রচারমন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলস এই কাজটা হামেশাই করতেন। লোকে বলত, গোয়েবলস না কি প্রপাগান্ডার জাদুকর। তিনি বিশ্বাস করতেন, একটা মিথ্যে কথা বারবার বলতে বলতে সেটার বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়। ভয়ঙ্কর মিথ্যেবাদী বলে কুখ্যাত এই জার্মান রাজনীতিবিদের মত ও পথের অনুগামী এখনও আছে। আমাদের চারপাশেই আছেন। দাদার অনুগামীই হোন বা সততার অনুগামী, জেনেবুঝে হোক বা না জেনে, গোয়েবলসেপ থিওরি হাতেকলমে পরীক্ষা করার ঝোঁক অনেকেরই চাপে। এই যেমন, এজেন্সির নিরপেক্ষতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুললে, ক্ষতি না হোক, লাভ হতে পারে বিস্তর। হয়তো এমন ন্যারেটিভ তৈরি হয়ে গেল, তদন্ত শেষের আগেই মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করল, অনুব্রত মণ্ডল সত্যিই কোনও দোষ করেননি। কিন্তু সব ক্রিয়ারই যেমন বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে, তেমন এই প্রচারের কোনও রিভার্স এফেক্ট হবে না তো?

গরু পাচারের তদন্তে ধৃত অনুব্রতকে ডিফেন্ড করতে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে মিছিল হল! বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সিগুলিকে ব্যবহারের কথা। কিন্তু, এই সুযোগেই তো বিরোধীরা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুলছে। ইদানীং আর যাই হোক, একটা উত্তর বামেরা বিশেষ করে CPIM দিতে পেরেছে।  রাস্তায় তাঁদের দেখা যায় না? এই প্রশ্নের নিরসন হয়েছে। এই যেমন, পার্থ থেকে অনুব্রত। শিক্ষা দুর্নীতি থেকে গরু পাচারের কেলেঙ্কারি, বামেরা রাস্তাতেই আছে। পঞ্চায়েত ভোট সামনে। তাই হয়তো জেলায় জেলায় ব্লকে ব্লকে, মিছিল হচ্ছে।  বাম কংগ্রেস মিছিল করছে, ঢাক বাজাচ্ছে, গুড়বাতাসা বা নকুল দানা খাওয়াচ্ছে। সব ঠিক আছে। কিন্তু সব থেকে বেশি উত্‍সাহ বোধহয় বিজেপির।  সত্যিই কি অনুব্রত মণ্ডলের দাঁড় করিয়ে রাখা উন্নয়নে ঠোক্কর খেয়েছে বিজেপির জয়ের স্বপ্ন? যদি তাই হয় তাহলে তো ধরে নিতে হবে, একা অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে মোকাবিলা করার মতো শক্তিই নেই বাংলার বিজেপি নেতাদের। তেমন সংগঠনই তো তাহলে গড়ে নিতে পারেনি বিজেপি। সেজন্যই কি কথায় কথায় বাংলার বিজেপি নেতারা দিল্লি দৌড়়ন? ক্ষমতায় আসার রাস্তাটা কেন্দ্র তৈরি করে দেবে বলে? অনুব্রত মণ্ডলের মতো আরও কয়েকজন তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হলে, পোয়াবারো। আরও জোর কদমে পথে নামা যাবে। না কি তাঁরা সত্যিই আশা করছেন, মহারাষ্ট্র মডেল বাংলাতেও সফল হবে? সত্যিই একজন একনাথ শিন্ডে-কে পাওয়া যাবে বাংলায়, এই বিশ্বাস কি জাঁকিয়ে বসেছে বিজেপির মনে? সেসব ভবিষ্যতে জানা যাবে। আপাতত, অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতেছেন বিজেপির নেতাকর্মীরা। হবেনই তো। পঞ্চায়েত ভোটের আগে অনুব্রতর মতো বাহুবলী নেতাকে বাড়িতে ঢুকে গ্রেফতার করল সিবিআই। কী বার্তা গেল, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে সেটা ভালই বোঝেন দিলীপ-সুকান্ত-শুভেন্দুরা। তাঁদের একটাই টার্গেট। রাজ্যের সরকার। তাই, আজও রাস্তায় যে তর্জন-গর্জন করেছেন বিজেপি নেতারা, কিন্তু, এসবের সুফল ঘরে তুলতে গেলে তো লাগাতার আন্দোলনে থাকতে হবে! তেমন দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ের মতো সংগঠন আছে তো? বিজেপি নেতারা বলছেন অবশ্য, খেলা অনেক লম্বা।

বিজেপি নেতারা জানেন নিশ্চয়ই, আন্দোলনে ভাটা পড়ে গেলে, তখন আর বিশ্বাসযোগ্যতা থাকবে না। কাপ আর ডিশের মধ্যে ফাঁকটুকু তখন থেকেই যাবে। কথাতেই তো আছে, কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না। সিবিআই কষ্ট করেই কেষ্টকে পেয়েছে। এরপর কে?

এসব কথা হবে, টিভি নাইন বাংলায়। রাত ৮.৫৭, দেখবেন না বললেই নয়।