SSC transfer Case: ‘অসুস্থতা কি ডাকবিভাগে বলে আসে?’ এসএসসি-র নিয়ম ‘বদলে’ শিক্ষিকাকে বদলির নির্দেশ আদালতের

SSC transfer Case: স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচ বছরের কম অভিজ্ঞতা থাকলে কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে বদলি করা যায় না।

SSC transfer Case: 'অসুস্থতা কি ডাকবিভাগে বলে আসে?' এসএসসি-র নিয়ম 'বদলে' শিক্ষিকাকে বদলির নির্দেশ আদালতের
বদলি মামলায় নির্দেশ হাইকোর্টের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 01, 2022 | 6:29 PM

কলকাতা: শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও প্রত্যেকদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথ পেরিয়ে শিক্ষকতা করতে হয়। স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনের গেরোয় বদলিও সম্ভব নয়। এমন অভিযোগ নিয়ে আগেও অনেকেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এবার সেরকমই একটি মামলায় বদলির নির্দেশ দিল আদালত। এসএসসি আইনে পাঁচ বছরের আগেও বদলি না করার উল্লেখ থাকলেও, সোমবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এক শিক্ষিকাকে এই নিয়মের বাইরে বদলির নির্দেশ দেন। দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন হামিদা খাতুন নামে এক শিক্ষিকা। তাঁর বাড়ি আর স্কুলের দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতেই সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

এসএসসি-তে বদলির ক্ষেত্রে একটি নিয়ম রয়েছে। পাঁচ বছরের কম চাকরি করলে বদলি করা যায় না। শারীরিক অসুস্থতা বা যে কোনও ইস্যুতে ছিল এই একই নিয়ম। এই নিয়মের জন্যই বদলি আটকে যায় অনেকেরই। সোমবার হামিদার বদলির নির্দেশ দিয়ে সেই নিয়মে কার্যত বদল ঘটালেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বিচারপতির নির্দেশ, শারীরিক অসুস্থতা থাকলে, পাঁচ বছরের কম চাকরি করলেও বদলি কার্যকর করা যেতে পারে। হামিদা খাতুনকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে বদলির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

হামিদা খাতুন বর্ধমানের আউশগ্রামের হাতকিরিনগর বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা। ২০১৯ সাল থেকে সেই স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের বাসিন্দা হামিদা খাতুনের স্ত্রী রোগ সংক্রান্ত এক বিশেষ সমস্যা রয়েছে। যাওয়া আসা মিলিয়ে তাঁর স্কুলের পথ প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। অতটা রাস্তা পাড়ি দেওয়ার মতো শারীরিক সক্ষমতা তাঁর নেই। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শারীরিক কারণে ৪০০ কিলোমিটার যাতায়াত করে চাকরি করা যাবে না হামিদার।

২০২১ সালের ২৪ অগস্ট বদলির জন্য আবেদন করেন তিনি। কিন্তু তা বাতিল করে দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন।

এসএসসি-র সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন হামিদা খাতুন। তাঁর পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। শুধু হামিদা নয়, একই ইস্যুতে মামলা করেছেন সুদেষ্ণা বেরা, মাফুজা খাতুনের মতো অনেকেই। এ দিন সেই মামলায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, “অসুস্থতা কি ডাকবিভাগে বলে আসে! যে কোনও সময় মানুষ অসুস্থ হতে পারেন।”

স্কুল সার্ভিস কমিশনের ১৯৯৭ সালের আইনের ১০ বি ধারা অনুযায়ী, পাঁচ বছরের কম চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে বদলির সুযোগ দেওয়া হয় না। ২০১৭ সালে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত একটি মামলা হয়। তারপরেও এসএসসি-র ওই নিয়ম পরিবর্তন হয়নি। উৎসশ্রী নামে রাজ্য সরকারের যে পোর্টালে বদলির জন্য আবেদন করতে হয়, সেটাও পাঁচ বছরের আগে করা যায় না।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি এসএসসি-র বদলি সংক্রান্ত অপর একটি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, “গোলি মারো রুলো কো।” স্নিগ্ধা দত্ত নামে এক শিক্ষিকা হামিদার মতোই বদলির আবেদন করেছিলেন। পাঁচ বছরের কম অভিজ্ঞতা থাকায় সেই সুযোগ পাননি তিনিও। তাঁর করা মামলায় শুনানিতেই এমন মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।