Soma Das: ‘চাকরি নেব, আন্দোলন থেকে সরব না’, শিক্ষকতার চাকরির জন্য নবান্নের নির্দেশের পর জানালেন ক্যানসার আক্রান্ত সোমা

SSC Movement: হাইকোর্টের তরফে সোমাকে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে নবান্নকে অনুরোধ করা হয়। মানবিক দিকটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিয়ে বলা হয়।

Soma Das: ‘চাকরি নেব, আন্দোলন থেকে সরব না’, শিক্ষকতার চাকরির জন্য নবান্নের নির্দেশের পর জানালেন ক্যানসার আক্রান্ত সোমা
সোমা দাসকে চাকরি দিতে নির্দেশ নবান্নের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 23, 2022 | 12:31 PM

কলকাতা: রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত এসএসসি আন্দোলনকারী সোমা দাসকে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিল নবান্ন। সোমবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-কে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসএসসি-র নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানকে রাজ্যের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এ ব্যাপারে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে বলে একটি চিঠি দিয়েছেন। তাতে নবান্ন জানিয়েছে, সাত দিনের মধ্যে সোমাকে শিক্ষিকা পদে নিয়োগের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। নবম এবং দশম শ্রেণির বাংলা শিক্ষিকা হিসাবে তাঁকে নিয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। এই নির্দেশ পাওয়ার পর সোমা দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন টিভি৯ বাংলার প্রতিনিধি। তখন সোমা দাস সাফ জানিয়েছেন, “আমি চাকরি নেব। তবে চাকরি নেওয়ার পরও আমি গান্ধীমূর্তির তলাতেই বসে থাকব। মেরিট লিস্টের শেষে যিনি আছেন, তিনি চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আমার আন্দোলন চলবে।”

রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত সোমা দাস বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা। তা সত্ত্বেও তিনি এসএসসি-র অন্য চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৯ সাল থেকেই শিক্ষকতার চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে সামিল তিনি। এক সংবাদমাধ্যমে ক্যানসারে আক্রান্ত সোমার লড়াইয়ের কথা প্রকাশিত হওয়ার পর তা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সোমার বিষয়ে জানতে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেন তিনি। গত ১৩ এপ্রিল সোমাকে শিক্ষকতার চাকরির বদলে অন্য সরকারি চাকরির প্রস্তাব দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতির দেওয়া ‘অন্য চাকরি’র প্রস্তাব সে দিন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সোমা। তখন সোমা বলেছিলেন, “‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আমার প্রতি সমব্যথী হয়ে অন্য কোনও দফতরে একটি চাকরি করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে। চাকরিটা নিলে, হয়তো সবই হত, কিন্তু আমার শিক্ষক হওয়ার যে স্বপ্ন, তা পূরণ হত না।”

এর পরই হাইকোর্টের তরফে সোমাকে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে নবান্নকে অনুরোধ করা হয়। মানবিক দিকটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিয়ে বলা হয়। এসএসসি-কে দেওয়া শিক্ষা দফতরের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে বিষয়টি। সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, আদালতের অনুরোধের বিষয়টি। সেই প্রেক্ষিতেই মন্ত্রিসভার কাছে প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। মন্ত্রিসভার বৈঠকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। নবান্ন জানিয়েছে, ১২ মে সোমাকে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাকা করে মন্ত্রিসভা। গত ১৭ তারিখ সেই নির্দেশ হাতে এসেছে নবান্নের। সেই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই এসসসি চেয়ারম্যানকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে শিক্ষকতার চাকরির স্বপ্ন পূরণ হবে সোমার। কিন্তু তাই বলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই থেকে সরবেন না তিনি। টিভি৯ বাংলাকে এ কথা পরিষ্কার জানিয়েছেন তিনি। নবান্নে চিঠির কথা সামনে আসার পর সোমা বলেছেন, “সবটাই হাইকোর্টের নির্দেশে হচ্ছে। আমি আদালতকে অবমাননা করতে পারব না। ৭ দিনের মধ্যে চাকরি দিতে বলেছে। আমি চাকরি নেব। তবে চাকরি নেওয়ার পরও আমি গান্ধীমূর্তির তলাতেই বসে থাকব। মেরিট লিস্টের শেষে যিনি আছেন, তিনি চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আমার আন্দোলন চলবে।” এসএসসি-র তরফে চাকরির কোনও চিঠি এখনও তাঁর হাতে আসেনি বলে জানিয়েছেন সোমা।