Mamata Banerjee: রেফারে মৃত্যু হলে দায়িত্ব চিকিৎসকের, কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

Mamata Banerjee: নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে চিকিৎসকদের কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "জনগণের টাকায় জনগণের মূল্য দিতে হবে। গাফিলতি একটা অপরাধ। এটা অবিলম্বে আমাদের সংশোধন করতে হবে।"

Mamata Banerjee: রেফারে মৃত্যু হলে দায়িত্ব চিকিৎসকের, কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 21, 2022 | 6:29 PM

কলকাতা: রেফার করার জন্য কোনও গর্ভবতী মহিলার মৃত্যু হলে যে চিকিৎসক রেফার করেছেন, তাঁকে দায়িত্ব নিতে হবে। সোমবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এমনই কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা জেলার হাসপাতালের চিকিৎসকদের রোগী রেফার করার ঘটনায় এদিন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষত, গর্ভবতী মহিলাদের রেফার করা হলে ৪-৫ ঘণ্টা গাড়ির ধকলের জেরেই অনেকের মৃত্যু হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

যদিও বিশেষ অসুবিধা ছাড়া রোগী রেফার না করার ব্যাপারে বারবার চিকিৎসক থেকে প্রতিটি হাসপাতালকে আগেও বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর সেই বার্তা উপেক্ষা করে আজও রোগী রেফারের ঘটনা হয়ে চলেছে। এবার এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন নবান্ন প্রশাসনিক বৈঠকে রোগী রেফার নিয়ে জেলার চিকিৎসকদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা কি রেফার করা বন্ধ করবেন? গর্ভবতী মহিলাকেও রেফার করে দিচ্ছেন। তারপর তাঁরা ৪-৫ ঘণ্টা গাড়ির ধকল করে আরেক জায়গায় এসে হাসপাতালে ভর্তি করতেই অপারেশন করার আগেই মৃত্যু হচ্ছে। কেন এটা হচ্ছে? এখন যদি ৯৯ শতাংশ ইনস্টিটিউশনাল ডেলিভারি হয় তাহলে কেন রেফার করা হবে? যদি এরকম হয়,তাহলে যে রেফার করেছে তাকে যে মারা গিয়েছে তার দায়িত্ব নিতে হবে।” যদিও সমস্ত ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গর্ভবতী মহিলাদের অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো নেই। অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকও এব্যাপারে পারদর্শী নন। এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, “কোনও সমস্যা হলে জেলা হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রয়োজনে ভিডিয়োকলে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক বা স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।” কিন্তু, কোনভাবেই গর্ভবতী মহিলাকে রেফার করা মেনে নেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি চিকিৎসা ক্ষেত্রে গাফিলতি কোনভাবে বরদাস্ত করা হবে না বলেও কড়া বার্তা দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, “জনগণের টাকায় জনগণের মূল্য দিতে হবে। গাফিলতি একটা অপরাধ। এটা অবিলম্বে আমাদের সংশোধন করতে হবে।” এর জন্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বিভিন্ন হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিট করারও পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যের সমস্ত মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সূচনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে বহু মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “৮ কোটি ৪৩ লক্ষ মানুষ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নথিভুক্ত হয়েছেন। প্রায় আড়াই হাজার হাসপাতালে এই পরিষেবা মিলছে। এখনও পর্যন্ত ৪৩ লাখ মানুষকে ৫ হাজার কোটি টাকার পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথীর আলাদা পোর্টালও খোলা হয়েছে।”

তবে এখানেই শেষ নয়, স্বাস্থ্য পরিষেবার মান আরও উন্নত করতে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্তরে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা এদিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ২০২৩ সালের মধ্যে ১০ হাজার ১৭৩টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ১৬ হাজার ৬১৬টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ইতিমধ্যে ৪ হাজার ৪৬১টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র অনুমোদন করা হয়েছে এবং ২ হাজারের বেশি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু হয়ে গিয়েছে। এই সমস্ত কেন্দ্রে বিনামূল্যে আউটডোর চিকিৎসা পরিষেবা সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ নির্ণয় করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “স্বাস্থ্য পরিষেবা আরও লোকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।” এছাড়া শিশুসাথী প্রকল্পে গ্রাম বাংলার মানুষ যাতে সরকারি পরিকাঠামোয় পরিষেবা নিতে পারেন তা নিশ্চিত করারও বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সহ জেলার সমস্ত হাসপাতালে কার্ডিওথোরাসিক বিভাগ চালুর প্রস্তাবও দেন তিনি।