CM Mamata Banerjee: আচার্যের দায়িত্ব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী খুশি হলে নিশ্চয় রাজ্যের শিক্ষার উপকার হবে : পবিত্র সরকার

CM Mamata Banerjee: শিক্ষাক্ষেত্রে ‘মমতায়ন’? মিলেমিশে একাকার রাজনীতি আর শিক্ষা? কী বলছেন বাংলার শিক্ষাবিদরা?

CM Mamata Banerjee: আচার্যের দায়িত্ব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী খুশি হলে নিশ্চয় রাজ্যের শিক্ষার উপকার হবে : পবিত্র সরকার
ছবি - নয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে কী বলচেন বাংলার শিক্ষাবিদেরা?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 26, 2022 | 9:06 PM

কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য পদে বসানোর প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। যা নিয়ে জোরদার চাপানউতর চলছে শিক্ষামহলের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলে। শেষ ডিসেম্বরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Education Minister Bratya Basu) প্রথমবার মুখ খোলার পরেই তা নিয়ে শুরু হয়েছিল জোরদার জল্পনা। তারপর থেকেই খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Chief Minister Mamata Banerjee herself) রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মাথায় বসানোর তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গিয়েছিল। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরের বিরুদ্ধে ‘অসহযোগিতার’ অভিযোগ তুলে তাঁর কাঁধে আর আচার্যের দায়িত্ব রাখতে চাইছেন না রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা। এদিকে সাংবিধানিক ক্ষমতা বলেই এই দায়িত্ব রয়েছে রাজ্যপালের হাতে। কিন্তু, তারপরেও মমতা সেই চেয়ারে বসলে তা সংবিধান বিরুদ্ধতা হয়ে যাবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। 

এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “রাজ্যপাল একটা আলঙ্কারিক পদ। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর যথেষ্ট দায়িত্ব আছে, যথেষ্ট সম্মান আছে। এ দায়িত্ব নিয়ে যদি মুখ্যমন্ত্রী খুশি হন, তাতে নিশ্চয় রাজ্যের শিক্ষার উপকার হবে”। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর আচার্য হওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হতেই শিক্ষাক্ষেত্রে তৃণমূলী রাজনীতির প্রভাব অনেকটাই বাড়বে, সঙ্গে উপাচার্য নিয়োগেও রাজনীতির সুস্পষ্ট ছাপ থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিরোধীরা। এ প্রসঙ্গে পবিত্রবাবুর মত, “রাজনীতিকরণ মুখ্যমন্ত্রী আচার্য না হলেও হতে পারে। রাজনীতিকরণ এমনিতেই হতে পারে। তবে উপচার্য নিয়োগে আচার্যের খানিক নিয়ন্ত্রণ থাকে। কিন্তু,  এগুলো আটকানোর উপায় খুব দুর্বল”।

এ প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “উপাচার্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে যদি বিরুদ্ধ মত না থাকে তাহলে নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। এমনকি যাঁদেরকে নিয়োগ করা হল তাদের রাজনৈতিক বদান্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী আচার্যের আসনে বসলে তাঁরা দলদাস কিনা সেই প্রশ্নও সহজে উঠতে পারে”। শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকার বলেন,”আমাদের রাজ্যে মুখ্য়মন্ত্রী ও রাজ্যপালের কাজের ভারসাম্যের ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিগত কয়েক বছর ধরে সমস্যা চলছে। এ বিল বানানোই হয়েছে রাজ্যপালকে তাঁর দায়িত্ব থেকে বিযুক্ত করার জন্য। বিশ্ববিদ্য়ালয়ের যে বর্তমান কাঠামো, সেখানে উপাচার্য আছেন, তার উপরে আচার্য হিসাবে থাকেন রাজ্যপাল। কিন্তু, তাই এখানে বদলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে প্রশ্ন তুলতে পারেন সাধারণ মানুষ”।

অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলেও এ নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র শোরগোল। মন্ত্রিসভার সবুজ সংকেত মিলতেই চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে বাম নেতা সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, “এই সিদ্ধান্তে আমরা একদমই অবাক নই। এর আগে ইউনিয়ন তুলে দিয়ে কাউন্সিল তৈরির চেষ্টা করেছে এই সরকার। ছাত্র ভোট বানচাল করার চেষ্টা করেছে। শুধু ছাত্র নয়, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদেরও যেটুকু গণতান্ত্রিক অধিকার ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকে তাও খর্ব করার চেষ্টা করেছে এই সরকার। এবার শিক্ষাক্ষেত্রে মমতায়ন নিয়ে বিশিষ্টজনেরা কী বলেন সেদিকে নজর থাকবে আমাদের”। বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা বলেন, “এ সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক ভাবে হাস্যকর। এর আগে আমরা দেখেছি নিজেকে নিজে বাংলা আদাদেমি অ্যাওয়ার্ড দিয়েছেন। উনি ছোটবেলায় যা যা স্বপ্ন দেখতেন, যেমন উনি ছবি আঁকবেন, আচার্য হবেন, আদাদেমি পুরষ্কার পাবেন, সবই উনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূরণ করছেন”।